বিচার বিভাগে কারও দুর্নীতি প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা

জেলা জজ ও সমপর্যায়ের বিচারক, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের কার্যকর দুর্নীতি প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন। মঙ্গলবার এসব স্তরের বিচারকদের নিয়ে আয়োজিত সম্মেলনে তিনি এ নির্দেশ দেন।
সুপ্রিমকোর্ট অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগের যেকোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর দুর্নীতিবিষয়ক যেকোনো তথ্যকে আমি গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করি। কারণ বিচার বিভাগে দুর্নীতির কোনো স্থান নেই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার অবস্থান স্পষ্ট ও দৃঢ়। দুর্নীতির ব্যাপারে কোনো প্রকার শৈথিল্য গ্রহণ করা হবে না। দুর্নীতি অবিচারের জন্ম দেয়। আর একস্থানে অবিচার সর্বত্র সুবিচারের জন্য হুমকি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারকদের বিরুদ্ধে হয়রানিম?ূলক মিথ্যা অভিযোগ আমি কখনও আমলে নেব না। কিন্তু দুর্নীতির প্রতিটি যুক্তিগ্রাহ্য অভিযোগকে আমি আমলে নেব এবং উপযুক্ত একজন জজ অভিযোগটি তদন্ত করবেন। দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট বিচারক বা আদালত কর্মচারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি তোমাদের নতুন ও কার্যকর দুর্নীতি প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করার নির্দেশ দিচ্ছি। আদালত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির প্রতিটি অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গোচরে আনতে তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি।
সম্মেলনে জেলা জজ ও সমপর্যায়ের বিচারক, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার প্রায় তিন শতাধিক বিচারক যোগ দেন। সম্মেলন পরিচালনা করেন সুপ্রিমকোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এসএম কুদ্দুস জামান।
প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে আরও বলেন, বিচার ব্যবস্থায় মামলাজট ও বিচারে দীর্ঘসূত্রতা জনগণের বিচার লাভের ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায়। আদালতগুলোতে প্রায় ২৭ লাখ মামলার জট রয়েছে। এ জন্য মামলা নিষ্পত্তির সময় ও ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। মানুষ নিতান্তই বাধ্য না হলে তার বিরোধকে আদালতে আনতে উৎসাহিত হয় না। মামলাজট থেকে অব্যাহতি পেতে হলে অপ্রয়োজনে শুনানি মুলতবি করার বা পক্ষগণের সময়ের দরখাস্ত মঞ্জুর করা বন্ধ করতে হবে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি শুনতে পাই কোনো কোনো জেলা জজ মধ্যাহ্ন বিরতির পর আদৌ বিচার কাজে বসেন না। এ ছাড়া কোনো কোনো বিচারক, যাদের পরিবার ঢাকায় থাকেন, তারা বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন এবং রোববার দুপুরে কর্মস্থলে ফিরে যান। এ অবস্থা আদৌ গ্রহণযোগ্য নয়।

No comments

Powered by Blogger.