ব্যক্তিত্ব-আর্নেস্ট হেমিংওয়ে

'আমার মনে আছে আমরা গোটা মৃতদেহ খুঁজছিলাম; কিন্তু পাচ্ছিলাম মৃতদেহের টুকরো টুকরো অংশ।' প্রথম বিশ্বযুদ্ধের একটি ঘটনার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছিলেন হেমিংওয়ে তাঁর 'ডেথ ইন দি আফটারনুন' বইয়ে।
১৯৪১ সালে হেমিংওয়ে অ্যাম্বুল্যান্স চালক হিসেবে ইতালিতে নিয়োগ পান। প্রথম দিনই তাঁকে পাঠানো হয়েছিল একটি যুদ্ধাস্ত্র কারখানার ধ্বংসস্তূপে মৃত নারীকর্মীদের লাশ আনতে। সেখানের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করেছিলেন ওইভাবে।
তাঁর জন্ম ২১ জুলাই ১৮৯৯। বেড়ে উঠেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়ের ওক পার্কে। যুদ্ধক্ষেত্রে মারাত্মক আহত হয়ে ফিরে আসেন যুক্তরাষ্ট্রে এবং যুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখেন- 'অ্যা ফেয়ারওয়েল টু আর্মস'। ১৯২৬ সালে তাঁর প্রথম উপন্যাস 'দ্য সান অলসো রাইজেস' প্রকাশিত হয়। ১৯২০ সালে তিনি টরন্টোতে 'টরন্টো স্টার' পত্রিকায় একাধারে ফ্রি ল্যান্সার, স্টাফ রিপোর্টার ও বিদেশি সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেন। ১৯২১ সালে হ্যাডলি রিচার্ডসনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর কিছুদিনের জন্য দেশের বাইরে কাটাতে সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর প্যারিসে বসবাসকালে ১৯২২ সালে জেমস জয়েসের 'ইউলিসিস' প্রকাশিত হয়। বইটি আমেরিকায় নিষিদ্ধ ছিল। আর্নেস্ট হেমিংওয়ে গোপনে এই বই তাঁর বন্ধুদের কাছে পাঠাতেন।
প্যারিসে পরিচিত হন ইমেজিজসের প্রবর্তক এজরা পাউন্ডের সঙ্গে। কিটজেরাল্ডও হেমিংওয়ের ভালো বন্ধু ছিলেন প্রথমদিকে। পরে তাঁর স্ত্রীর আপত্তিতে বন্ধুত্ব ভেঙে যায়। কিটজেরাল্ডের স্ত্রীও অপছন্দ করতেন হেমিংওয়েকে। মনে করা হয়, দুজন লেখকই সমকামী ছিলেন। বিশ শতকের গল্প ভাষার ওপর হেমিংয়ের ঋজু নিরাবেগী ভাষার প্রভাব ছিল প্রবল। ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত হয় 'দ্য ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি'। ১৯৫৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। হেমিংওয়ের কিছু উপন্যাস ও ছোটগল্প আমেরিকার সাহিত্যে ক্লাসিক মর্যাদা লাভ করে। মৃত্যুবরণ করেন ২ জুলাই ১৯৬১ সালে।

No comments

Powered by Blogger.