ট্রেভন মার্টিনের ঘটনা ঘটতে পারত আমার ক্ষেত্রেও: ওবামা

হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে ওবামা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ৩৫ বছর আগে তাঁর নিজের ক্ষেত্রেও ট্রেভন মার্টিনের মতো ঘটনা ঘটতে পারত। ফ্লোরিডার কৃষ্ণাঙ্গ কিশোর মার্টিন হত্যার আলোচিত মামলা নিয়ে এই প্রথম প্রতিক্রিয়া জানালেন ওবামা। প্রেসিডেন্ট তাঁর নিজের অতীতে বিভিন্ন বর্ণবাদী আচরণের শিকার হওয়ার ঘটনাও তুলে ধরেন। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ব্রিফিং রুমে অপ্রত্যাশিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। সাংবাদিকেরা হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জে কারনির মুখোমুখি হওয়ার জন্য গিয়েছিলেন। ওবামা এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এমন কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ খুব কমই আছেন, যাঁরা জাতিগত পরিচয়ের কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারির শিকার হননি। তিনি বলেন, ‘ট্রেভন মার্টিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আফ্রিকান-আমেরিকানরা যন্ত্রণা অনুভব করছে। কারণ, তারা এটাকে দেখছে তাদের ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা ও ইতিহাসের আলোকে, যা কখনোই মুছে যায় না। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে ১৭ বছর বয়সী ট্রেভন মার্টিনকে গুলি করে হত্যা করেন স্থানীয় নাগরিক নিরাপত্তা সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী জর্জ জিমারম্যান (২৯)। জিমারম্যানের ভাষ্য, তিনি আত্মরক্ষার্থে গুলি করেছিলেন। আদালতের একটি জুরিবোর্ড গত সপ্তাহে জিমারম্যান নির্দোষ বলে রায় দেয়। ওই রায়ের প্রতিবাদে দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন, ফৌজদারি আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে যে সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের শিকার হতে হয়, এ বিষয়েও আফ্রিকান-আমেরিকানরা গভীরভাবে সচেতন। ওবামা আরও বলেন, ‘যখন ট্রেভন মার্টিনকে প্রথমে গুলি করা হয়, তখন আমি বলেছিলাম, আমার সন্তানের ক্ষেত্রেও এটা ঘটতে পারত। অন্যভাবে বলা যায়, ৩৫ বছর আগে আমার ক্ষেত্রেও ট্রেভন মার্টিনের ঘটনা ঘটতে পারত।’ ওবামা অতীতে কেনাকাটা করতে যাওয়ার সময় কীভাবে নজরদারির শিকার হতেন, সেসব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রাস্তাঘাটে চলেছে, আর এ রকম অভিজ্ঞতার শিকার হয়নি—এমন আফ্রিকান-আমেরিকান খুব কমই আছে। মার্কিন সমাজে জাতিগত সম্পর্ক বিষয়ে এত বিস্তারিত ও খোলাখুলি কথা কমই বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট। এদিকে জুরিবোর্ডের অন্যতম সদস্য জেসি জ্যাকসন মন্তব্য করেন, ফ্লোরিডার আত্মরক্ষা-সংক্রান্ত আইন ‘স্ট্যান্ড ইয়োর গ্রাউন্ড’-এর কারণে জিমারম্যানকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া ছাড়া তাদের সামনে বিকল্প ছিল না। তিনি আইনটিতে পরিবর্তন আনার আহ্বান জানান। ওই আইনের আওতায় একজন ব্যক্তি কাউকে নিজের নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করলে হত্যার মতো পথ বেছে নিতে পারে। ফ্লোরিডার আইনসভার ডেমোক্রেটিক নেতারা আইনটি হয় বাতিল, না হয় সংশোধন করার দাবি তুলেছেন। বিবিসি, এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.