আরেক আলোকে-সরকারের চার বছর_ বিয়োগের খাতা by ইনাম আহমদ চৌধুরী

আকস্মিকভাবেই জ্বালানি তেলের দাম মাত্রাতিরিক্ত বাড়িয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন থাকার চতুর্থ বছর সমাপ্ত করে পঞ্চম ও শেষ বছরের অশুভ সূচনা করল। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিএনপি এবং সহযোগী আরও ১৭টি দল ঘোষণা করল দেশব্যাপী হরতালের।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সরকারের সহযোগী হয়েও এই হরতালকে যৌক্তিক বলে অভিহিত করলেন। বাম মোর্চার নৈতিক সমর্থনও থাকল এই হরতালে। এমনকি খবরের কাগজের অনলাইন জরিপে দেখা গেল, ভোটদাতাদের ৮২.৭২% এই হরতাল সমর্থন করছেন। আর কোনোরকম বিশেষ প্রস্তুতি ছাড়াই বিরোধী দল আহূত হরতালটি সর্বাত্মকভাবে সফল হয়ে উঠল সরকারি দল এবং সরকারের প্রচণ্ড বিরোধিতা সত্ত্বেও।
অনস্বীকার্য, সরকারের এই সিদ্ধান্ত অবিবেচনাপ্রসূত, অসময়োপযোগী এবং গণস্বার্থবিরোধী। সরকার ও সরকারি দল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে জনগণ উত্তরোত্তর হতাশ, অসন্তুষ্ট, বিক্ষুব্ধ ও ত্রুক্রদ্ধ হয়েই চলেছে। এ সময় এ ধরনের একটি অনভিপ্রেত এবং অগ্রহণযোগ্য সরকারি এই উদ্ভট সিদ্ধান্তটিকে অর্থনীতিবিদরাও অপ্রয়োজনীয় ও অদূরদর্শী বলে বিবেচনা করছেন, বিশেষত বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে।
প্রশ্ন হচ্ছে, কী জন্য সরকার এই সময় অতীব অজনপ্রিয় জনস্বার্থবিরোধী এই পদক্ষেপ নিল? চার বছরে জ্বালানির দাম বাড়ানো হলো পাঁচবার এবং তাও বড় রকমের। কারণ হিসেবে অনেকেই বলেছেন, আইএমএফের শর্ত পূরণ ছাড়াও প্রধানত দুটি কারণে আওয়ামী সরকার এই অযাচিত মূল্যবৃদ্ধি করেছে_ প্রথমত, অপরিকল্পিতভাবে জ্বালানি তেলনির্ভর উচ্চ ব্যয়সম্পন্ন ভাড়াভিত্তিক অস্বচ্ছ পদ্ধতিলব্ধ প্রশ্নবিদ্ধ 'কুইক রেন্টাল' বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন এবং সেগুলোতে ভর্তুকি প্রদত্ত জ্বালানি সরবরাহের খরচ জোগানো; দ্বিতীয়ত, নির্বাচনী বছরে ভোটারকেন্দ্রিক দলীয় প্রার্থীর অনুকূলে অর্থ ব্যয়। এ প্রসঙ্গে সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, 'জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য, সরকারের বর্তমান রাজস্ব পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক বিবেচনায় দাম বাড়ানো অবধারিত ছিল না। এই মূল্যবৃদ্ধি দেশে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিকে আরও উস্কে দেবে।' তেলের দাম বাড়িয়ে অর্জিত আর্থিক সাশ্রয় কোন খাতে ব্যয় করা হবে, তার স্বচ্ছতা নিয়েও তিনি সঙ্গতভাবেই প্রশ্ন তুলেছেন। তাছাড়া বোরো চাষের জন্য বর্ধিত ডিজেলের দাম সমস্যা ও অন্তরায়ের সৃষ্টি করবে। দ্রব্যমূল্যের আকাশচুম্বী দামে ইতিমধ্যে জনজীবন জর্জরিত। এখন বিদ্যুৎ এবং সংশ্লিষ্ট উৎপাদিত পণ্য ছাড়াও অন্য দ্রব্যসামগ্রীর দামও বাড়বে, পরিবহন খরচ বাড়বে, যানবাহনের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে তৈরি হবে বহুবিধ সমস্যা। শিল্প-কারখানায় বিদ্যুৎ সংকট তীব্রতর হবে। সামগ্রিকভাবে সরকারের এ সিদ্ধান্ত জনজীবনে এবং দেশের অর্থনীতিতে এক মহাপ্রতিকূলতার সৃষ্টি করবে। জন ও রাষ্ট্র স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা বা তা বাতিল করা সরকারের উচিত হবে। স্বতঃস্ফূর্ত একটি হরতালের মাধ্যমে জোরালোভাবেই জনগণ এই বাণী সরকারের কাছে পেঁৗছে দিয়েছে। সরকারের সঙ্গত হবে ভুলটি বুঝতে পেরে তা সংশোধন করে নেওয়া। বিশেষ করে এখন যখন বিশ্ববাজারে তেলের দাম স্থিতিশীল বা কিছুটা নিম্নগামীও। সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচিত না হলে বাম মোর্চা থেকেও সম্ভবত হরতালের আহ্বান আসতে পারে।
আওয়ামী সরকারের চার বছর পূর্তিতে তাদের দিনবদলের স্লোগান কতটুকু কার্যকর হলো তা কিছুটা খতিয়ে দেখা এই প্রেক্ষিতে অসঙ্গত হবে না। যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া বা অঙ্গীকার করা হয়েছিল প্রাক্-নির্বাচনীকালে, তা কতটুকুই-বা পূরণ হলো তাও জাতি দেখতে চাইবে।
প্রথমেই বলতে হয় পদ্মা সেতুর কথা। এ নিয়ে যে কেলেঙ্কারি হলো তা শুধু যে দেশের মাথা হেঁট হলো তা নয়, 'অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার একটি বড় সংকেত' বলে যা অভিহিত হয়েছে, তা সার্বিক অর্থেই দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে দিতে পারে। কেননা, এ নিয়ে দেশে-বিদেশে সরকারের প্রকল্প বাস্তবায়নের সদিচ্ছা বা ক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। দাতা সংস্থাগুলো এখন শুধু পদ্ম সেতু নয়, যোগাযোগ সেক্টরের প্রত্যেকটি ঋণ প্রদত্ত প্রকল্পে তদন্ত দাবি করছে। অন্য সেক্টরেও এই প্রশ্ন উঠবে। অর্থাৎ সরকারের দুর্নীতির ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক বা অন্যান্য দাতা বা সহযোগী সংস্থারা নিদ্বর্িধা হতে পারছে না।
পদ্মা সেতু সম্পর্কে আমি এই পত্রিকাতেই বেশ কিছুকাল আগেই লিখেছিলাম_ 'পদ্মা হঠাৎ অনেক দূর।' এখন মনে হচ্ছে, শুধু 'অনেক দূর'ই নয়, বর্তমান সরকারের আমলে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন অসম্ভব। অথচ যখন বিশ্বব্যাংক প্রশ্ন তুলেছিল, তখন সরকার যদি আন্তরিকতা ও গুরুত্বের সঙ্গে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করত, তাহলে বোধহয় রক্ষা হতেও পারত। এখন তো সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতার যে শুধু হানি হয়েছে তা নয়, বিশ্বসমক্ষে আজ তা বিলুপ্তপ্রায়। পদ্মা সেতু তো শুধু একটি প্রকল্প ছিল না, এটা নিয়ে দাতাগোষ্ঠী সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ততার পরিমাণ নিরূপণ করছিল। এত বাকবিতণ্ডার পরও, দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগের পরও, প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে 'দেশপ্রেমিক' বলে সম্বোধন করলেন। বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ আনলেন কিছু নেতৃস্থানীয় সরকারি ব্যক্তি। একজন উপদেষ্টার ছুটি নেওয়া নিয়ে কত নাটকই না হলো। তারপর যখন এসিসি তদন্ত করে 'কেস' করল, তখন হ্যামলেট নাটক থেকে বাদ পড়লেন স্বয়ং 'প্রিন্স অব ডেনমার্ক'। এটা সর্বজনবিদিত যে, বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান 'রুলস অব বিজনেস' অনুযায়ী মন্ত্রীই মন্ত্রণালয়ের প্রধান, সচিব নন (যা সম্ভবত বছরদশেক আগে পরিবর্তিত হয়েছিল)। তাই মন্ত্রীর নির্দেশ বা অনুমোদন ছাড়া কোনো বড় বা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া অসম্ভব। অথচ এসিসি অভিযোগপত্র থেকে মন্ত্রীকে অব্যাহতি দিয়ে সচিবকে মুখ্য আসামি করল। সচিব নিজেই বলেছেন, এ ব্যাপারে প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত মন্ত্রীর নির্দেশ বা অনুমোদন নিয়েই হয়েছে। তাই সম্পূর্ণ অনুসন্ধান প্রক্রিয়া এবং 'কেস'টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। ধারণা, মন্ত্রী বা উপদেষ্টারা আরও উচ্চতর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কাজ করছিলেন। এর জন্য 'দুর্নীতি দমন কমিশন' বিশ্বব্যাংক ও দাতাগোষ্ঠীর আস্থা হারাল। বস্তুতপক্ষে, এখন পদ্মা সেতুতে তাদের অর্থায়ন অন্তত বর্তমান সরকারের অধীনে অসম্ভবই বটে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্প, যেগুলো বিদেশি অর্থায়নের ওপর নির্ভরশীল, সেগুলোও নড়বড়ে হয়ে দাঁড়াবে। এর প্রতিকূল প্রভাব পড়বে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও।
তা ছাড়া দুর্নীতির রাহুগ্রাসে যেন প্রশাসন সামগ্রিকভাবেই পড়ে গেছে। রেলমন্ত্রীর বস্তাভরা টাকা 'কালো বিড়াল' যে সরকারের মধ্যেই তা প্রমাণ করল। এখানেও কেস দেওয়া হলো নিম্নমানের কর্মকর্তাদের। অথচ শীর্ষ ব্যক্তির যোগসাজশ অথবা নির্দেশ ছাড়া এ ধরনের উৎকোচ সংগ্রহ অসম্ভব ছিল। এসিসি এ ক্ষেত্রেও একটি 'ক্লিন সার্টিফিকেট' দিয়ে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
সব মন্ত্রণালয়ে, সব প্রকল্প বাস্তবায়নে সব স্তরেই এখন দুর্নীতির প্রকোপ। এই তো নিম্ন পর্যায়ে দুর্নীতির মানরেখা আর কখনও নেমে আসেনি জাতির ইতিহাসে। শুধু মন্ত্রী বা কর্মকর্তা নন, আওয়ামী লীগের নেতা, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগের শেষ নেই। ছাত্রলীগের তাণ্ডব তো সর্বক্ষেত্রে এক বিভীষিকার রাজত্ব কায়েম করেছে।
দ্রব্যমূল্য কমানোর প্রতিশ্রুতি বর্তমানে পরিহাসের মতো শোনায়। বিশ্ববাজারের দোহাই দিয়ে দ্রব্যমূল্য দফায় দফায় বেড়েই চলেছে। মজুদদারি, মুনাফাখোরী সিন্ডিকেট এবং ক্ষমতাবানদের চাঁদাবাজি সরকারের দ্রব্যমূল্য হ্রাসের অঙ্গীকারকে পরিপূর্ণ ব্যর্থতায় পর্যবসিত করেছে। আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি ঘটিয়ে সুশাসন প্রবর্তনের প্রতিশ্রুতি সম্পূর্ণ অমূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বরং এটা বলা যেতে পারে_ এ ধরনের পরিস্থিতি কোনো আমলেই কখনও বিরাজ করেনি। পাকিস্তান আমলেও নয়। সর্বক্ষেত্রে হয়েছে অবিশ্বাস্য দলীয়করণ। প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকারি পক্ষপাতিত্বের এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় হাজার হাজার মামলা প্রত্যাহারের কারণে, এমনকি বিশটিরও অধিক ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত আসামির খালাস প্রদান আইনের শাসনকে করে তুলেছে সুদূরপরাহত। প্রশাসনে দুর্বৃত্তায়ন, নিয়োগ-বাণিজ্য, দখলদারিত্ব, বলপ্রয়োগ, ক্ষমতার অপব্যবহার শুধু যে জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করছে তা নয়, তা গণতন্ত্রকেও বিপন্ন করে তুলেছে। গুম (ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম প্রমুখ), গোপন হত্যা (সাগর-রুনি এবং অন্যান্য), প্রকাশ্য হত্যা (বিশ্বজিৎ), অপহরণ, ধর্ষণ, ডাণ্ডাবাজি সরকারেরই একটি অঙ্গ বা আশ্রিত অপকর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকেও বিপর্যস্ত করার অপচেষ্টা বিশেষভাবে দৃশ্যমান। বিরোধীদলীয় নেত্রী ও কর্মীবৃন্দের ওপর হামলা, মামলা, সংবাদপত্রে সত্য রিপোর্ট ছাপালেও নিগ্রহ, পুলিশি ও সরকারি দলীয় কর্মীদের অত্যাচার এক অসহনীয় পর্যায়ে পেঁৗছেছে। বর্তমানেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মতো সজ্জন, মৃদুভাষী, মার্জিত রুচির জননেতাকে হাস্যকর অভিযোগে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। জামিন পেলে নতুন উদ্ভাবিত কেসে আবারও ফাঁসানো হচ্ছে। বিএনপির যুগ্ম সচিব রুহুল কবির রিজভী বহুদিন ধরেই নিজ কার্যালয়ে গ্রেফতারের আশঙ্কায় অন্তরীণাবদ্ধ। সারাদেশে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরা হচ্ছেন অত্যাচারিত, বিরোধী দলের কণ্ঠরুদ্ধের প্রচেষ্টা চলছে অব্যাহত। এতে তো গণতন্ত্রের বিকাশ হচ্ছে না, হচ্ছে গণতন্ত্রের কবরায়ন।
অর্থনীতির ক্ষেত্রে যে দুরবস্থা তা সত্যিই অকল্পনীয়। শেয়ারবাজার লুট, হলমার্ক, ডেসটিনির কেলেঙ্কারি_ এসব ছাড়াও সরকার নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকগুলোতে যেভাবে অর্থ জালিয়াতি, অপসারণ ও অলীক অবাস্তব ঋণ গ্রহণ হচ্ছে তা দেশের অর্থনীতিকে করে তুলেছে বিপন্ন। বিনিয়োগের খাতা শূন্যবৎ, শিল্পায়নে কোনো নীতি নেই। বেসরকারি কমিশন রয়েছে আর পুরো চার বছরে এই সরকারের আমলে কোনো কর্মকাণ্ডই হয়নি; অযাচিতভাবে বাংলাদেশের গর্ব নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূসের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে বৈরিতা করে সরকারি নেতৃবৃন্দ দেশ ও জাতির যে ক্ষতিসাধন করেছেন, তা অতীব দুঃখজনক। আর এ জন্য সরকার ও সরকারি দলের গ্রহণযোগ্যতা, সম্মান ও মর্যাদাহানি হয়েছে তা অবর্ণনীয়। পৃথিবীর সুধী সমাজের কাছে শুধু এ কারণেই সরকারের ভাবমূর্তি অনেকাংশে বিনষ্ট হয়েছে।
অন্যান্য প্রতিশ্রুত ক্ষেত্র, যেমন_ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনকরণ, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, বিমানকে লাভজনককরণ, রাজধানীর যানজট নিরসন, শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস দূরীকরণ, পানি নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, নদীগুলোর নাব্যতা রক্ষা, স্বাস্থ্যনীতি নবায়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন_ কোনো ক্ষেত্রেই কিন্তু লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রেও সরকার ক্রমেই বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতা সত্যিই আশঙ্কাজনক।
তাছাড়া দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে বর্তমান সরকার যে ব্যর্থতা দেখাচ্ছে তা অমার্জনীয়। বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে বিএসএফ ঢুকে এ দেশের নাগরিকদের ধরে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করছে, অথচ সরকার নির্বাক। প্রায় প্রতিদিন সীমান্তে নিরস্ত্র সাধারণ নাগরিক ভারতীয় 'ভয়ঙ্কর' বিএসএফের গুলিতে নিহত, আহত হচ্ছেন, সরকার নাগরিক রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
আজকের পত্রিকায়ই দেখলাম, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের সন্ত্রাসে ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কেন্দ্রের কাছে কড়া চিঠি পাঠিয়েছেন। অথচ আমাদের সরকার বলছে, বিএসএফ স্রেফ আত্মরক্ষার জন্যই (নিরস্ত্র) বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করছে। বাস্তবিকই এটি একটি মর্মান্তিক পরিহাস।

ইনাম আহমদ চৌধুরী : উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক সচিব

No comments

Powered by Blogger.