মৃত্যুঘড়ি-ধূমপান নিরুৎসাহিত হোক

গত এক দশকে ধূমপানের বিরুদ্ধে যে সচেতনতা বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে, তা অসামান্য। এ কথা সত্য, পশ্চিমের বিভিন্ন দেশের মতো ধূমপানের বিরুদ্ধে অবস্থান এখনও জোরদার হয়নি। এখনও প্রকাশ্যে ও যত্রতত্র ধূমপান করতে দেখা যায়।
বিড়ি-সিগারেটও যত্রতত্র বিক্রি হয়। পশ্চিমে প্রকাশ্যে ধূমপান শুধু নিন্দনীয় নয়, রীতিমতো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই রাস্তাঘাটে কাউকে প্রকাশ্যে ধূমপান করতে দেখা যায় না। ধূমপায়ীদের দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে ধূমপান করতে হয়। আর ধূমপানের সামগ্রী হাত বাড়ালেই মেলে না। অনুমোদিত নির্দিষ্ট স্টোরেই বিড়ি-সিগারেট পাওয়া যায়। ধূমপানসামগ্রীর দুষ্প্রাপ্যতা ও ধূমপানের স্থান সম্পর্কে কড়াকড়িই সেখানে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়েছে। ধূমপানসামগ্রীর ওপর অতিরিক্ত করারোপেও ভালো ফল মিলেছে। আমাদের দেশে করারোপের ক্ষেত্রে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও ধূমপানের স্থান ও বিক্রির ব্যাপারে কড়াকড়ি নেই। ফলে দাম বেশি হলেও তা কেনা হচ্ছে এবং যত্রতত্র পানও করা হচ্ছে। পাবলিক প্লেসে ধূমপানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর পাবলিক পরিবহনে ধূমপান বহুলাংশে কমেছে, কিন্তু প্রকাশ্যে এখনও ধূমপান অব্যাহত। এসব ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উদ্যোগের চেয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচির প্রভাব অনেক বেশি। আমাদের দেশে অনেক জরুরি ব্যাপারেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর তৎপরতা সন্তোষজনক নয়। প্রকাশ্যে ধূমপান বন্ধে তাদের মনোযোগ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। ধূমপানের বিরুদ্ধে তাই জনসচেতনতার বিশেষ গুরুত্ব। এমন গুরুত্ব অনুভব করে ধূমপানবিরোধী প্রচারের অংশ হিসেবে রাজধানীতে একটি মৃত্যুঘড়ি স্থাপন করা হয়েছে। এতে ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা প্রদর্শিত হচ্ছে। মানুষকে সচেতন করার ক্ষেত্রে এই ঘড়ি বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলেই আমরা আশা করি।

No comments

Powered by Blogger.