চমকের নাম পেরু-ভেনেজুয়েলা

ফ্যালকাও কখনোই পেনাল্টি মিস করে না। এমনকি অনুশীলনেও না’—কণ্ঠে অবিশ্বাস নিয়ে বললেন কলম্বিয়ান কোচ হার্নান ডারিও গোমেজ। ধরা কণ্ঠে যোগ করলেন, ‘অনেক সুযোগ পেয়েছি, কিন্তু আমরা তা মিস করেছি।’
কলম্বিয়ান কোচের কণ্ঠটা ধরে আসাটা স্বাভাবিকই। যে ফ্যালকাও কখনো পেনাল্টি মিস করেন না, তাঁর মিসেই শিরোপা-স্বপ্নের বিসর্জন। দলের সবচেয়ে বড় তারকার পেনাল্টি শটটি জাল ছুঁলে ম্যাচ জয়ের সঙ্গে সেমিফাইনালের উ ৎ সবটা করতে পারত কলম্বিয়াই, যে উ ৎ সবটা এখন করছে পেরুভিয়ানরা। অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলের জয়ে ১৪ বছর পর আবার সেমিফাইনালে উঠেছে পেরু। দুর্ভাগ্য কলম্বিয়ার, ফ্যালকাওয়ের পেনাল্টি মিস ছাড়াও দুটি শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে।
গোমেজের উল্টো স্রোতে দাঁড়িয়ে পেরুর কোচ সার্জিও মারকারিয়ান ভাসছিলেন জয়ের আনন্দে। খেলোয়াড়দের প্রশংসায় ছিলেন উচ্ছ্বসিত, ‘এটা ছিল সত্যিই কঠিন ম্যাচ। আমি মনে করি, জয়টা আমাদের পাওনা ছিল। ছেলেরা প্রত্যেকেই শেষ বাঁশি পর্যন্ত সত্যিই কঠিন লড়াই করেছে।’
চাইলে পেরুর কোচের সঙ্গে একই ফ্রেমে বেঁধে রাখা যায় ভেনেজুয়েলার কোচ সিজার ফারিয়াসকে। কোপার চার কোয়ার্টার ফাইনালের চারটিতেই যে অঘটন-ঝড় বইল, কলম্বিয়াকে হারিয়ে তার শুরুটা করেছিল পেরু। পরশু চিলিকে বিধ্বস্ত করে তার শেষটা করল ভেনেজুয়েলা। প্রথম ম্যাচেই ব্রাজিলকে গোলশূন্য রুখে দিয়ে টুর্নামেন্টে ভেনেজুয়েলা-চমকের শুরু। চমকের সেই ধারা ধরে রেখে ভেনেজুয়েলা গড়ল প্রথমবারের মতো কোপার সেমিফাইনালে ওঠার ইতিহাস।
কোচ সিজার ফারিয়াসের কণ্ঠে দেশটির ফুটবল জাগরণের গান, ‘আজ আমরা চিলিকে হারিয়েছি। আমরা দেখাতে পেরেছি দক্ষিণ আমেরিকার যেকোনো দলের সঙ্গেই আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি।’ গোলরক্ষক রেনি ভেগা বলেছেন, ‘অনেকের কাছে এটি বিস্ময় হতে পারে, তবে আমরা এখানে বিনয়ী হয়ে এলেও সবার সমীহ অর্জন করতে এসেছি। সব সময়ই আমাদের স্বপ্ন কোপা জেতা।’
এই ম্যাচে চিলি ছিল সবারই ফেবারিট। ম্যাচের আগে ভেনেজুয়েলার কোচও নির্দ্বিধায় স্বীকার করেছিলেন তা। কিন্তু মাঠে শেষ হাসির মতো প্রথম হাসিটাও ছিল ভেনেজুয়েলার। ৩৪ মিনিটে ভেনেজুয়েলাকে এগিয়ে দেন অসওয়াল্ডো ভিজকারোন্দো। ৬৯ মিনিটে হামবার্তো সুয়াজো চিলিকে ফেরান সমতায়। ২০০৯ সালের নভেম্বরের পর জাতীয় দলের হয়ে এটা সুয়াজোর প্রথম গোল। ম্যাচ যখন অতিরিক্ত সময়ে গড়াবে বলে মনে হচ্ছিল, তখনই গোল করে বসেন ভেনেজুয়েলার গ্যাব্রিয়েল চিচেরো। ম্যাচের তখন মাত্র ৯ মিনিট বাকি। যে সময়টা ভেনেজুয়েলার কাছে মনে হয়েছে ৯ ঘণ্টা!

No comments

Powered by Blogger.