ডিএসইতে লেনদেন তিন মাসের সর্বনিম্ন

টানা তিন দিনের দরপতনের পর গতকাল বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেনের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়। তবে বেড়েছে মূল্যসূচক।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল মাত্র ৩৮১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ৭২ কোটি টাকা কম এবং গত তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি স্টক এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেনের পরিমাণ ২০৬ কোটি টাকায় নেমে আসে।
এ ব্যাপারে পুঁজিবাজার বিশ্লেষকেরা বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) গতকাল বাংলাদেশ ফান্ডের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এর ফলে ফান্ডের ব্যবস্থাপকেরা চাইলে আজ বৃহস্পতিবার থেকে বিনিয়োগে যেতে পারবে।
দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগে আসছে—এ খবর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী করে তোলে। মূলত এর প্রভাবেই দরপতনের ধারার বিপরীতে বাজার বেড়ে যায়।
বিশ্লেষকেরা বলেন, বাজার বাড়তে শুরু করায় বিনিয়োগকারীদের অনেকেই আর শেয়ার হাত ছাড়া করতে চাননি। ফলে গতকাল বাজারে ক্রেতা থাকলেও খুব বেশি শেয়ার হাতবদল হয়নি বলে তাঁরা মনে করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক সালাহউদ্দিন আহমেদ খান এ ব্যাপারে বলেন, লেনদেন কম হওয়ার বিষয়টি বিশ্লেষণে না যাওয়াই ভালো। বেশ কয়েক দিন পর বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে এটাই বাজারের জন্য ইতিবাচক।
ডিএসইতে গতকাল সূচক বাড়ার মধ্য দিয়েই লেনদেন শুরু হয়। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক ৮০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এর পরের আধা ঘণ্টায় সূচক একই গতিতে কমতে শুরু করে। এ সময় বাংলাদেশ ফান্ডের চূড়ান্ত অনুমোদনের খবর ছড়িয়ে পড়লে সূচক আবার বাড়তে শুরু করে, যা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল সাধারণ মূল্যসূচক ১০৭ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ হাজার ৯৭৩ পয়েন্ট হয়েছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৪৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ২১৬টির, কমেছে ২৬টির ও অপরিবর্তিত ছিল একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ২৫৯ পয়েন্ট বেড়ে ১৬ হাজার ৬৬১ দশমিক ৯৪ পয়েন্টে দাঁড়ায়। গতকাল সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৮৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬২টির, কমেছে ১৯টির ও অপরিবর্তিত ছিল দুটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। এদিন ৬০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
বাংলাদেশ ফান্ড: পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ফেরানোর লক্ষ্যে গঠিত বাংলাদেশ ফান্ডের অনুমোদনের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। নিবন্ধনসংক্রান্ত কাগজপত্র ও ফি জমা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এসইসি ফান্ডটির কার্যক্রম শুরুর জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। ফলে ফান্ডটি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকল না।
এ ব্যাপারে ফান্ডটির মূল উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফায়েকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এসইসির চূড়ান্ত অনুমোদনপত্র হাতে পেয়েছি। সুতরাং ফান্ডটি বাজারে আসার ব্যাপারে আর কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। ফান্ড থেকে কালই (আজ) পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ শুরু করা হবে।’ ফান্ডটি বাজারে স্থিতিশীলতা আনবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

No comments

Powered by Blogger.