লাদেনকে গ্রেপ্তার করতে না পারার ব্যর্থতা পাকিস্তানের একার নয়: গিলানি

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি বলেছেন, নিরাপত্তা রক্ষা এবং সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই করা কেবল একটি দেশের একার কাজ নয়, এ ব্যাপারে গোটা বিশ্বের সমর্থন প্রয়োজন। তিনি বলেন, আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে এত দিন গ্রেপ্তার করতে না পারার ব্যর্থতার দায় কেবল পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার একার নয়, বিশ্বের সব গোয়েন্দা সংস্থাই এ ব্যর্থতার জন্য দায়ী। গতকাল বুধবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে সাংবাদিকদের গিলানি এসব কথা বলেন। এদিকে লাদেন হত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানকে ‘অনুমোদনহীন একতরফা কাজ’ বলে সমালোচনা করেছে পাকিস্তান সরকার।
একই দিন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব সালমান বশির দাবি করেন, লাদেন হত্যার অভিযানে পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ অভিযানের ব্যাপারে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রধান লিওন প্যানেট্টার একটি মন্তব্যকে ‘উদ্বেগজনক’ অভিহিত করে তিনি বলেন, যে বাড়িতে লাদেন নিহত হয়েছেন, ওই বাড়ির ব্যাপারে সন্দেহের কথা সিআইএকে পাকিস্তান ২০০৯ সালেই জানিয়েছিল।
প্যারিসে সাংবাদিকদের প্রধানমন্ত্রী গিলানি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি এবং এর জন্য চড়া মাশুলও গুনতে হচ্ছে। আমরা শুধু পাকিস্তানের জন্য লড়ছি না; বিশ্বের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির জন্য লড়ছি।’
লাদেন বছরের পর বছর কীভাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন—এ নিয়ে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সন্দেহ, পলাতক জীবনে লাদেন বেশির ভাগ সময় পাকিস্তানেই ছিলেন। এদিকে ইঙ্গিত করে গিলানি এসব কথা বলেন।
পশ্চিমা প্রভাবশালী দেশগুলোর উদ্দেশে গিলানি বলেন, ‘পাকিস্তানের ব্যাপারে নেতিবাচক বার্তা পাঠানোর বদলে ইতিবাচক বার্তা পাঠান।’
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লাদেনকে এত দিন গ্রেপ্তার করতে না পারা অবশ্যই ব্যর্থতা। তবে এই ব্যর্থতার দায় কেবল পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের একার নয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারাও এ জন্য দায়ী।’
গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়, লাদেনকে হত্যার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র বিনা অনুমতিতে যে একতরফা অভিযান চালিয়েছে, তা আইনসংগত বলে মেনে নেওয়া যায় না। এ ধরনের অভিযান বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
গতকাল বিবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব সালমান বশির বলেন, লাদেনের ব্যাপারে পাকিস্তান বরাবরই সিআইএকে সহযোগিতা করে এসেছে।
লাদেন নিহত হওয়ার পর সিআইএর প্রধান লিওন প্যানেট্টা বলেন, ভণ্ডুল হওয়ার আশঙ্কায় লাদেনের বাড়িতে চালানো অভিযান সম্পর্কে পাকিস্তানের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের তাঁরা কিছু জানাননি। এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে সালমান বশির বলেন, এর আগে পাকিস্তানের বিভিন্ন নগর ও শহর থেকে আল-কায়েদার যেসব নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার সবই করেছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। তিনি বলেন, অ্যাবোটাবাদের ওই বাড়ির ব্যাপারে সন্দেহের কথা ২০০৯ সালে সিআইএকে জানিয়েছিল আইএসআই। পশ্চিমা অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাকেও এই সন্দেহের কথা জানানো হয়।

No comments

Powered by Blogger.