কান স্পষ্টতই আইএমএফ চালানোর অবস্থানে নেই

নিউইয়র্কের কারাগারে আটক আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান দমিনিক স্ত্রস কানের সামর্থ্যের ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী টিমোথি গেইথনার বলেছেন, কান স্পষ্টতই আইএমএফ চালানোর মতো অবস্থানে নেই । তিনি বলেন, ‘তাঁর পেশাগত অবস্থান সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট ধারণা আছে।’
যৌন হয়রানির দায়ে গ্রেপ্তার স্ত্রস কানের ব্যাপারে মার্কিন অর্থমন্ত্রীর প্রকাশ্যে মন্তব্য এটাই প্রথম। তাঁর এই মন্তব্যে গতকাল বুধবার নতুন করে চাপের মুখে পড়েন কান। গেইথনার বলেন, আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডকে একজন অন্তর্বর্তী প্রধানের কথা ভাবতে হবে।
১৪ মে নিউইয়র্কের এক হোটেলে একজন নারী কর্মীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে কানকে জন এফ কেনেডি বিমানবন্দর থেকে আটক ও পরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালত কানের জামিনের আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। তাঁকে নিউইয়র্কেরই রাইকার্স দ্বীপের কারাগারে রাখা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কানের দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডের আদেশ হতে পারে।
কান তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি যাতে আত্মহত্যা করতে না পারেন, এ জন্য তাঁকে কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে। প্রতি ১৫ থেকে ৩০ মিনিট পর কারারক্ষীরা তাঁকে পর্যবেক্ষণ করছেন।
কানের পদত্যাগ দাবি করে অস্ট্রিয়ার অর্থমন্ত্রী মারিয়া ফেক্টার বলেন, এই পরিস্থিতিতে তিনি চলে না গেলে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হবে। স্পেনের অর্থমন্ত্রী এলিনা সালগাদোও একই আহ্বান জানান। নারীর অধিকার রক্ষায় সোচ্চার ওয়াশিংটনভিত্তিক জেনডার অ্যাকশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, কানের মামলার ফল যা-ই হোক না কেন, আইএমএফে নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন।
এদিকে ফ্রান্সে জনগণের একটি বড় অংশ কানের সমর্থনে সরব রয়েছে। ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজির একমাত্র শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবা হচ্ছে কানকে। তাঁর সমর্থকেরা মনে করছেন, তিনি কোনো ষড়যন্ত্রের শিকার। এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, জরিপে অংশ নেওয়া ৫৭ শতাংশ মানুষ এটিকে ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন।
অভিযোগকারীর শঙ্কা: কানের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নির্যাতনের অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু যে নারী, তিনি তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। ওই নারীর আইনজীবী ও প্রতিবেশীরা এ কথা বলেছেন। তাঁর আইনজীবী জেফ শাপিরো বলেন, গোটা দুনিয়া তাঁর সামনে উল্টে গেছে। তিনি বলেন, ওই নারী এক কিশোরী মেয়ের মা এবং খেটে খাওয়া একজন কর্মী। ওই হোটেলে কাজ করে তিনি যা পান, তা দিয়ে তাঁদের সংসার চলে। শনিবারের ঘটনার পর তিনি না পারছিলেন বাড়ি ফিরে যেতে, না পারছিলেন কাজে মন বসাতে। তাঁর ভবিষ্যৎ এখন কী, এ নিয়ে ভেবে তিনি কূল পাচ্ছেন না।

No comments

Powered by Blogger.