অমল-শিবুদের স্বপ্নপূরণ

বাংলাদেশের টেনিসে আনন্দময় দিন খুব বেশি আসে না। কালকের দিনটি সেদিক থেকে ব্যতিক্রম ছিল। এর আগে বাংলাদেশ ডেভিস কাপে চার নম্বর থেকে তিনে গিয়েছে। এবারও তার পুনরাবৃত্তি, কিন্তু বাড়তি কৃতিত্ব হলো, বাংলাদেশ এবার অপরাজিত। এ জন্যই দিনটা টেনিস-সংশ্লিষ্টদের কাছে মনে রাখার মতো।
বাংলাদেশের টেনিসের খবর আর কে-ই বা রাখে! রমনা টেনিস কমপ্লেক্সে টেনিস অঙ্গনে পরিচিত দু-চারজন ছাড়া আর তো কেউ নেই। অথচ যে পর্যায়েই হোক, বাংলাদেশ চারটি ম্যাচ জিতে উঠে গেছে ডেভিস কাপের গ্রুপ তিনে, যেটা টেনিসের জন্য সুখবর।
এর আগে সরাসরি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলেই পরের ধাপে ওঠা যেত। কিন্তু এবার গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর অন্য গ্রুপের রানার্সআপের সঙ্গে প্লে-অফ খেলতে হয়েছে। কাল সেই প্লে-অফে জর্ডানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ২-১ জয়। গ্রুপ পর্বে তুর্কমেনিস্তানকে ৩-০, ইরাককে ৩-০ ও সিঙ্গাপুরকে ২-১-এ হারিয়ে বাংলাদেশ হয়েছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। আরেক প্লে-অফে ইরাককে ২-১-এ হারিয়ে গ্রুপ তিনে গেছে এই প্রথম ডেভিস কাপ খেলা কিরগিজস্তান।
বাংলাদেশ-জর্ডান প্লে-অফের দুটি এককের একটিতে অমল রায় জিতলেও হেরে যান শিবু লাল। পরে দ্বৈতে অমল-রঞ্জন জুটি দাঁড়াতেই দেয়নি প্রতিপক্ষকে (৬-১, ৬-২)।
খেলার পর অমল বলছিলেন, ‘বিশ্বাস ছিল, এবার গ্রুপসেরা হয়ে এবং প্লে-অফ জিতে গ্রুপ তিনে যাব আমরা। সেভাবেই খেলতে পেরে আমরা খুশি। তবে গ্রুপ তিনে টিকে থাকতে চাইলে যেভাবে তৈরি হওয়া দরকার, সেটাও ভেবে দেখতে হবে।’
এর আগে দুবার গ্রুপ তিনে উঠে পরের বছরই অবনমিত হয়েছে বাংলাদেশ। তিনে টিকে থাকতে দীর্ঘমেয়াদি একটা পরিকল্পনা নেওয়া হবে বলে জানালেন টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ। তাঁর কথা, ‘সরকার, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কাছ থেকে সহযোগিতা চাই আমরা। নইলে এই অবস্থান ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব। কারণ, গ্রুপ তিনে এটিপির র্যাঙ্কিংধারী অনেক খেলোয়াড়ই খেলে।’
একই সঙ্গে ফেডারেশন চায় ভারতীয় কোচ গজেন্দর সিংকে আবার নিয়ে আসতে। গত সাত সপ্তাহ বাংলাদেশ দলকে কোচিং করিয়ে আজ সকালেই দেশে ফিরে যাচ্ছেন বিশ্বমানের এই ভারতীয় কোচ। কাল সবার সঙ্গে উচ্ছ্বসিত ছিলেন তিনিও, ‘বাংলাদেশের দরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। তাহলে বর্তমান অবস্থান থেকে আরেকটু এগোনো সম্ভব।’

No comments

Powered by Blogger.