মোহালিতে বিশ্বকাপের ‘ফাইনাল’

শেষ হয়ে গেল কোয়ার্টার ফাইনাল। আমরা এখন বিশ্বকাপের শেষ সপ্তাহে পা রাখলাম। মানুষ ফের কোয়ার্টার ফাইনালের কোনো ম্যাচ দেখতে চাইলে সেটি অবশ্যই হবে অস্ট্রেলিয়া-ভারত ম্যাচ। ভারতের পক্ষে গেছে যে ম্যাচ।
আমাদের সামনে এখন বড় দুটি ম্যাচ। ঘরের মাঠে আজ শ্রীলঙ্কা লড়বে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। দারুণ ম্যাচই হবে এটি। এই ম্যাচে শ্রীলঙ্কাই হট ফেবারিট।
কাল মোহালিতে ভারত ও পাকিস্তানের কোটি কোটি জনতার জন্য বিশ্বকাপের ‘ফাইনাল’ই হতে যাচ্ছে। শুধু প্রতিযোগিতার (সেমিফাইনাল) ধরন বলেই নয়, ইতিহাস ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রেক্ষাপটও বলছে এটিই ফাইনাল। বিশ্বকাপ এবং টুর্নামেন্টের এই পর্যায়ে এর চেয়ে বড় লড়াই আর হতে পারে না।
দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীই মাঠে খেলা দেখবেন। তবে আমার দৃষ্টি থাকবে মাঠে কী ঘটে তার ওপর। জমজমাট পরিবেশ ও দর্শকদের বিবেচনায় এটি মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। স্বপ্নের লড়াই। ম্যাচটির উত্তাপ এরই মধ্যে ছড়িয়েও পড়েছে।
ভারত-পাকিস্তানের ওপর মনোযোগ থাকায় শ্রীলঙ্কা কিংবা নিউজিল্যান্ড অনেকটা নীরবেই মুম্বাইয়ে যাবে। যে-ই যাক না কেন, পরের দিনই পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথ বলে খুব কম মানুষের নজরই থাকবে এটিতে। মোহালির বিদ্যুতায়িত পরিবেশের তুলনায় শ্রীলঙ্কা-নিউজিল্যান্ডের ম্যাচটি হবে যেন শান্ত কোনো উদ্যানে।
যা-ই হোক, একদিনের ক্রিকেটে প্রাপ্য অনেক শিক্ষা নিয়েই ইংল্যান্ড দেশে ফিরেছে। টেস্ট ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা দল হলেও ওয়ানডেতে তাদের ঘাটতি আছে। এই ফরম্যাটে এখনো তারা প্রভাব বিস্তারকারী দল হয়ে উঠতে পারেনি। দলে পরিবর্তন খুব বেশি না হওয়াতেই এমনটি হচ্ছে। আমি মনে করি, তাদের সময় এসেছে ওয়ানডে ক্রিকেটে নতুন প্রজন্মকে সুযোগ দেওয়ার। আমার বিশ্বাস, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার নিজ দায়িত্বে এই পারফরম্যান্স থেকে একটা শিক্ষা নেবে। এবং ইতিবাচক দিকগুলো গ্রহণ করে আগামী ১২ মাস এর ওপর কাজ করবে। ২০১৫ বিশ্বকাপের জন্য দল গঠন নিয়ে তাকে এখনই ভাবতে হবে।
ইংল্যান্ডের এই মুহূর্তে কোনো ব্যস্ততা নেই। এরপর তাদের প্রথম ওয়ানডে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, যারা পরবর্তী বিশ্ব চ্যাম্পিয়নও হতে পারে। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড ভালো দল। কিন্তু শুধু ঘরের মাঠে নয়, ওয়ানডেতে দেশের বাইরেও ভালো করতে হবে।
শ্রীলঙ্কার ওপেনার দিলশান ও থারাঙ্গা ভালো করছে। তারা খুবই ভালো ক্রিকেটার। ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্য পুরোপুরি মানানসই। তারা জানে এই ফরম্যাটের দাবিটা কী। ইংল্যান্ডের সাদামাটা বোলিংয়ের জবাব দিয়েছে দুর্দান্ত। শ্রীলঙ্কার প্রথম সারির চারজন ব্যাটসম্যান অনেকটা ভারতের মতোই ভয়ানক। ভারতের প্রথম পাঁচজনের পারফরম্যান্স তো চমৎকার।
ব্যাটিং শক্তিমত্তার ওপর সবাই মনোযোগ দিলেও আমি এখনো বিশ্বাস করি, সেরা বোলিং লাইনআপ যাদের, তারাই বিশ্বকাপ জিতবে। আপনাকে সব সময় একটা ভারসাম্যপূর্ণ দল খেলাতে হবে। ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ভুলটা ছিল একজন স্পিনার কম খেলিয়ে পেস-নির্ভর বোলিং আক্রমণ সাজানোয়। ইংল্যান্ডের আক্রমণে বৈচিত্র্য ছিল না। প্রত্যাশা অনুযায়ীই স্ট্রাউসদের আক্রমণ ছিল।
পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার বোলিং আক্রমণ সব সময়ই রহস্যময়। ভারতের চেয়ে শ্রীলঙ্কার বোলিং অনেক শক্তিশালী। ভারত সম্ভবত তাদের শক্তিশালী ব্যাটিং দিয়ে উতরাতে চাইবে। কিন্তু আমি সত্যিই জানি না, মোহালিতে কী ঘটতে যাচ্ছে। কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতারই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.