ইয়াসির আঘাতে লন্ডভন্ড অস্ট্রেলিয়ার উপকূল

বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান বলেছেন, বাংলাদেশের বাজারদর আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। এর প্রতিফলন দেখা যাবে পাশের দেশের সঙ্গে দ্রব্যমূল্য তুলনা করলে।
তার পরও গরিব মানুষের কথা চিন্তা করে সরকার চাল ও গমের ক্ষেত্রে ভর্তুকি দিচ্ছে এবং ওএমএস, ভিজিএফ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে জনসাধারণকে সহনীয় মূল্যে পণ্য দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে তিনি জানান।
গতকাল বৃহস্পতিবার দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশের (আইসিএসবি) ওয়েবসাইট (www.icsb.edu.bd) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দেশে সিন্ডিকেট বলে কোনো গোষ্ঠীর অস্তিত্ব নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিকে সিন্ডিকেটের তৎপরতা ছিল। কিন্তু সরকারের নিবিড় বাজার পর্যবেক্ষণের কারণে বর্তমানে কোনো সিন্ডিকেট নেই।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, শেয়ারবাজারের কোনো কোম্পানি সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের স্বচ্ছ ধারণা দিতে চার্টার্ড সেক্রেটারিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আইসিএসবির সভাপতি মোহাম্মদ সানাহউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাবেক বাণিজ্যসচিব সোহেল আহমেদ চৌধুরী ও ফিরোজ আহমেদ, আইসিএসবির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আসাদ উল্লাহ, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. শহীদ ফারুকী, সহসভাপতি এম নাসিমুল হাই, কোষাধ্যক্ষ মো. মনিরুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসির আঘাতে অস্ট্রেলিয়ার উপকূলীয় এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। লাখ লাখ একর জমির ফসল পুরোপুরি বিনষ্ট হয়ে গেছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ে এখন পর্যন্ত কেউ নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়নি।
অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসির সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৯০ কিলোমিটার। ঝোড়ো বাতাসসহ সর্বোচ্চ মাত্রার এ ঘূর্ণিঝড়টি স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপকূলে আঘাত হানে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, কুইন্সল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের টালি শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া উপকূলীয় কার্ডয়েল শহরে চলেছে ইয়াসির তাণ্ডব। টালি শহরের প্রধান প্রধান সড়কের ৯০ শতাংশই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
টাউন্সভিল শহরে এক লাখ ৭৭ হাজার ঘরবাড়ি ও পর্যটনকেন্দ্রের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রায় ৫০ কোটি অস্ট্রেলীয় ডলারের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধান অর্থকরী ফসল কলার খামার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কলা সরবরাহ ৭৫ শতাংশ ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের ইনিসফেইল থেকে কার্ডওয়েল অতিক্রম করে। এ সময় দক্ষিণে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে সমুদ্রে উঁচু ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রধান কৃষি ও পর্যটন এলাকায় ৭০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
কুইন্সল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী আনা ব্লাই বলেছেন, বহু মানুষ তাদের ঘরবাড়ি, খেতখামার, ফসল ও সম্পদ হারিয়েছে।
এরই মধ্যে ঝোড়ো বাতাসে প্রধান প্রধান শহরের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রাস্তার ওপর বিশাল আকৃতির গাছ ভেঙে পড়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেছেন, তাঁরা ঝড়ে অনেক ঘরের ছাদ উড়ে যেতে দেখেছেন। ১৯১৮ সালের পর এবারই অস্ট্রেলিয়ায় পাঁচ মাত্রার কোনো ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে।
সমুদ্রতীরবর্তী ১০ হাজার বাসিন্দা ও পর্যটককে আগেই ২০টি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে স্থানসংকুলান না হওয়ায় অনেককে ফিরে যেতে হয়। এ ছাড়া এখনো হাজার হাজার মানুষ বাড়িতেই অবস্থান করছে। এখনো কেউ নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া না গেলেও আনা ব্লাই বলেছেন, সার্বিক তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত সবাই এ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়েছে, তা বলা যাবে না।

No comments

Powered by Blogger.