ওবামার স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার আইনের একটি ধারা অসাংবিধানিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্বাস্থ্যসেবা খাত সংস্কার আইনের একটি ধারাকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। গত সোমবার এই রায় দেওয়া হয়। এদিকে আয়করের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ছাড়ের সুবিধার মেয়াদ বাড়ানোসংক্রান্ত প্রস্তাবটি মার্কিন কংগ্রেসে প্রথম পরীক্ষা পার হয়েছে।
সোমবার একজন কেন্দ্রীয় বিচারক রায়ে বলেন, সতর্ক পর্যালোচনা থেকে দেখা গেছে যে ‘পেশেন্ট প্রোটেকশন অ্যান্ড অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’ আইনের ১৫০১ নম্বর ধারাটি কংগ্রেসের ক্ষমতার সাংবিধানিক সীমা অতিক্রম করছে।
স্বাস্থ্যসেবা খাতসংক্রান্ত আইনের বিরুদ্ধে প্রথম একটি বড় আইনি ধাক্কা এই রায়। দীর্ঘ আলোচনা-সমালোচনা শেষে গত মার্চে বারাক ওবামার স্বাক্ষরের মাধ্যমে এ-সংক্রান্ত বিলটি আইনে পরিণত হয়। বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ বলছেন, স্বাস্থ্যসেবা খাতের সংস্কারসংক্রান্ত এ আইনের ভাগ্য শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মাধ্যমেই নির্ধারিত হবে।
গত বছর মার্কিন কংগ্রেসে আইনটি পাস করানো নিয়ে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে ব্যাপক মতপার্থক্য দেখা দেয়। তবে ওই সময় কংগ্রেসের দুই কক্ষেই ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বিলটি পাস হয়। স্বাস্থ্যবিমার আওতার বাইরে থাকা কয়েক কোটি মার্কিন নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি নিশ্চিত করতে এই আইন করার উদ্যোগ নেন ওবামা। রিপাবলিকানরা এখনো এই সংস্কার আইনের বিরোধিতা করছে। তারা ক্ষমতায় এলে আইনটি রদ করা হবে বলেও অঙ্গীকার করেছে।
এদিকে আয়কর ছাড়ের মেয়াদ বাড়ানোসংক্রান্ত বিলটি গত সোমবার কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে প্রথা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত পরীক্ষামূলক ভোটে অনুমোদন পেয়েছে। প্রেসিডেন্ট ওবামা ও রিপাবলিকান পার্টির সমঝোতার মধ্য দিয়ে বিলটি কংগ্রেসে তোলা হচ্ছে। বিলটির বিরোধিতা করছেন ওবামার দল ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্যরা।
ওবামা ও রিপাবলিকানদের প্রস্তাব অনুযায়ী, ব্যক্তির বার্ষিক আয় দুই লাখ ডলারের বেশি এবং দম্পতিদের আয় আড়াই লাখ ডলারের বেশি হলে তারা আয়করের আওতায় আসবেন। এ সুবিধার মেয়াদ এ বছরই শেষ হওয়ার কথা।
সোমবার বিলটি ১০০ আসনের সিনেটে পরীক্ষামূলক ভোটাভুটিতে তোলা হলে এর পক্ষে ৬০টির বেশি ভোট পড়ে। বিলটি গতকাল মঙ্গলবার বা আজ বুধবার চূড়ান্ত ভোটাভুটির জন্য সিনেটে তোলার কথা। চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ কংগ্রেসের দুই কক্ষেই বিলটি অনুমোদন পাবে বলে আশা করছেন বিশ্লেষকেরা।
এই বিলে আয়করের হার নিম্নমুখী রাখতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ৮৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের প্রণোদনা দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে ওবামা বলেন, এ মুহূর্তে অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আমাদের বেশি জোর দিতে হবে। বিলটি কংগ্রেসে অনুমোদন না পেলে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে পরিবারপিছু করের পরিমাণ গড়ে তিন হাজার ডলার বেড়ে যাবে।

No comments

Powered by Blogger.