কিরগিজস্তানের নির্বাচনে বাকিয়েভ সমর্থিত দল এগিয়ে

কিরগিজস্তানের সাধারণ নির্বাচনের সর্বশেষ ফলাফলে সে দেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট কুরমানবেক বাকিয়েভ-সমর্থিত জাতীয়তাবাদী দল আতা ঝুর্ট এগিয়ে আছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রোজা ওতুনবায়েভা-সমর্থিত সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি। এ ছাড়া খুব কম ভোটের ব্যবধানে তাদের কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে আরও তিনটি দল।
গত রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোট গতকাল সোমবার গণনা করা হয়। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯৫ শতাংশ ভোট গণনা শেষ হয়। সর্বশেষ ফলাফলে দেখা গেছে, আতা ঝুর্ট পার্টি পেয়েছে ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি পেয়েছে ৮ দশমিক ০৯ শতাংশ ভোট। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফেলিক্স কুলোভের মস্কোপন্থী দল আর-মানিস পার্টি ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এ ছাড়া রিপাবলিক পার্টি ৭ দশমিক ১২ শতাংশ ভোট পেয়ে চতুর্থ এবং সরকারপন্থী আরেকটি দল আতা মাকেন ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ ভোট পেয়ে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী পার্লামেন্টে আসন পেতে দলগুলোকে কমপক্ষে ৫ শতাংশ ভোট পেতে হবে। সেদিক থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী মোট ২৯টি দলের মধ্যে এ পাঁচটি দলেরই পার্লামেন্টে আসন গ্রহণের যোগ্যতা রয়েছে। তবে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠনের জন্য তাদের জোট গঠন করতে হবে।
নির্বাচন কমিশন বলেছে, ৫৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ ভোটার এ নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে দক্ষিণাঞ্চলীয় ওশ শহরে। কয়েক মাস আগে সেখানে জাতিগত দাঙ্গায় প্রায় ৪০০ লোক নিহত হয়।
ক্লারা সুরোমকুলোভা নামের একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা নির্বাচনে বড় ধরনের কোনো অনিয়ম বা সহিংসতা হয়নি বলে জানিয়েছেন।
গত এপ্রিলে এক গণ-অভ্যুত্থানে কিরগিজস্তানের প্রেসিডেন্ট কুরমানবেক বাকিয়েভ ক্ষমতাচ্যুত হন। আন্দোলনকারীদের নেত্রী রোজা ওতুনবায়েভা নিজেকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে ঘোষণা করে সরকারের দায়িত্ব নেন। গত জুন মাসে ওতুনবায়েভার সরকার সংবিধানে পরিবর্তন আনে। এতে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার থেকে মন্ত্রিপরিষদ-শাসিত সরকার চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত রোববার পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
রোজা-সমর্থিত ডেমোক্রেটিক পার্টি মন্ত্রিপরিষদ-শাসিত সরকার পদ্ধতিকে সমর্থন করলেও বাকিয়েভ-সমর্থিত আতা ঝুর্ট পার্টি পুনরায় সে দেশে প্রেসিডেন্ট শাসনব্যবস্থা চালুর পক্ষে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আতা ঝুর্ট সরকার গঠনে সমর্থ হলে তারা আবার রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার পদ্ধতি চালু করার চেষ্টা করবে।

No comments

Powered by Blogger.