মবিল যমুনা প্রাথমিক শেয়ার ছাড়তে যাচ্ছে

দেশের পুঁজিবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ার ছেড়ে মূলধন সংগ্রহের অনুমোদন পেল মবিল যমুনা এমজিএল বাংলাদেশ লিমিটেড। কোম্পানিটি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে চার কোটি শেয়ার ছেড়ে বাজার থেকে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। আর বাজার থেকে এ পরিমাণ টাকা তোলা সম্ভব হলে গ্রামীণফোনের পর এটিই হবে সবচেয়ে বড় আইপিও।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সভায় গতকাল রোববার কোম্পানিটির শেয়ার ছাড়ার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
এ ছাড়া সভায় তালিকাভুক্ত দুটি কোম্পানির রাইট শেয়ার ছাড়ার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। কোম্পানি দুটি হলো এক্সিম ব্যাংক ও অগ্নি সিস্টেমস লিমিটেড।
এক্সিম ব্যাংক ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে প্রায় ২২ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার রাইট শেয়ার ছাড়বে। ব্যাংকিং খাতের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে নির্ধারিত ব্যাসেল-২ বাস্তবায়নে মূলধন বাড়ানোর প্রয়োজনে ব্যাংকটি রাইট শেয়ার ছাড়ছে।
আর তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি অগ্নি সিস্টেমস লিমিটেড বাজারে প্রায় এক কোটি দুই লাখ ৫৭ হাজার রাইট শেয়ার ছাড়বে। ১০ টাকা প্রিমিয়াম ও ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ভিত্তিতে কোম্পানিটির প্রতিটি রাইট শেয়ারের বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা।
সভা শেষে এসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আনোয়ারুল কবীর ভুঁইয়া সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, মবিল যমুনার প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা। কিন্তু বুক বিল্ডিং পদ্ধতির নিয়ম অনুযায়ী চূড়ান্ত দরপত্রের জন্য প্রতিটি শেয়ারের নির্দেশক মূল্য ১২৭ টাকা ধরা হয়েছে।
বর্তমানে কোম্পানিটির মোট পরিশোধিত মূলধন ১৪০ কোটি ৩২ লাখ টাকা, যা ১৪ কোটি তিন লাখ ২০ হাজার শেয়ারে বিভক্ত। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ বা প্রায় সাড়ে তিন কোটি শেয়ার রয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান যমুনা অয়েলের হাতে। আর বাকি শেয়ারগুলো রয়েছে ব্যবসায়ী আজম জে চৌধুরী, তাঁর পরিবারের সদস্য ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মালিকানায়।
এসইসিকে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাজার থেকে সংগৃহীত টাকা কোম্পানিটি খুলনায় লিকুফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস ইউনিট স্থাপনসহ ব্যবসা সম্প্রসারণ কাজে ব্যয় করবে। এ ছাড়া জমি ক্রয় ও করপোরেট কার্যালয় তৈরিতেও খরচ করা হবে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার শর্তানুযায়ী মবিল যমুনার আইপিওর মোট শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে ৬০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০ শতাংশ এবং প্রবাসী বাংলাদেশি ও মিউচুয়াল ফান্ডের জন্য ১০ শতাংশ করে শেয়ার বরাদ্দ থাকবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটি ১২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা মুনাফা করেছে। প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড কোম্পানিটির শেয়ারের ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বের রয়েছে।
মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউস: ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মার্চেন্ট ব্যাংকিং এবং ব্রোকারেজ বিভাগকে পৃথক কোম্পানিতে রূপান্তরের সময়সীমা আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এ সময়ের মধ্যে প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে তাদের মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ বিভাগকে আলাদা কোম্পানি করতে হবে।
এ নিয়ে তিন দফা সময়সীমা বাড়ানো হলো।
প্রথম দফায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও এসইসি মার্চেন্ট ব্যাংকিং বিভাগকে আলাদা করার জন্য ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয় দফায় এই সময় ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ওই সময়ের মধ্যেও অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মার্চেন্ট ব্যাংকিং বিভাগকে আলাদা করতে ব্যর্থ হয়। তাই প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় সময় বাড়ানোর আবেদন করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকালের কমিশন সভায় এই সময় ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

No comments

Powered by Blogger.