আলো ছড়ানো অনুষ্ঠানে প্রাণ পেল কমনওয়েলথ গেমস

‘জয় হিন্দ’ বলে বক্তব্য শেষ করলেন সুরেশ কালমাডি। করতালিতে ফেটে পড়ল ৬০ হাজার দর্শকে ভরা গ্যালারি। ১৯তম কমনওয়েলথ গেমসের আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যানের মুখে আপাতত তৃপ্তির ছাপ, ‘নিরাপত্তা এবং আয়োজনের নানা ত্রুটির কথা বলে আমাদের সমালোচনা হয়েছিল। কিন্তু আমরা দেখলাম, এমন একটা বৃহৎ আয়োজন ভারতবর্ষ করতে পারে। আজ সত্যিই আমরা আনন্দিত।’
ভারতের আনন্দিত হওয়ারই কথা। ১৯৮২ সালে এশিয়ান গেমসের পর এত বড় আয়োজন যে এটিই প্রথম। তাই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে বলতে শোনা যায়, ‘এটি আমাদের জন্য গর্বের এক মুহূর্ত। গোটা ভারতবাসীই এই গর্বের অংশীদার।’
গর্ব তো গোটা কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর জন্যই। এই প্রথম কমনওয়েলথভুক্ত ৭১টি দেশই খেলছে ১২ দিনের আসরে। অংশ নেওয়া অ্যাথলেটের সংখ্যার বিচারেও এটি এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় কমনওয়েলথ গেমস। আজ থেকে ১৭টি খেলায় শুরু হয়ে যাচ্ছে মাঠের লড়াই।
কমনওয়েলথ গেমস শুধুই একটা গেমস নয়, এটি কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোকে চার বছর পর এক ছাতার নিচে নিয়ে আসার উপলক্ষও, কুইন্স ব্যাটন রিলে দিয়ে যার শুরু হয়। এবার এক লাখ ৯০ হাজার কিলোমিটার পরিভ্রমণ করে কুইন্স ব্যাটন এসেছে দিল্লি। কাল সন্ধ্যায় ওই কুইন্স ব্যাটনের পাশে দাঁড়িয়ে মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পক্ষে শুভেচ্ছাবাণী পড়লেন যুবরাজ চার্লস। রানি শুভকামনা জানিয়েছেন সব অ্যাথলেটের জন্য। সবশেষে যুবরাজ বললেন, ‘গেমসের উদ্বোধন করতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি।’ ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল বক্তব্য শেষ করলেন গেমসের শুরু ঘোষণা করে।
বক্তব্যপর্ব শেষে ওড়ানো হয়েছে কমনওয়েলথ গেমসের পতাকা। পরপরই ফেয়ার প্লের আহ্বান জানিয়ে সংক্ষিপ্ত শপথবাক্য পাঠ করালেন ভারতের ইতিহাসে একক অলিম্পিক সোনাজয়ী একমাত্র ক্রীড়াবিদ, শ্যুটার অভিনব বিন্দ্রা।
জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের দর্শক এরপর দেখল বিখ্যাত সুরকার এ আর রহমানের থিম সং। সাড়ে পাঁচ কোটি রুপি খরচ করে তৈরি এই থিম সং আর তাঁর পরিবেশনায় ছড়িয়ে দেওয়া হলো বন্ধুত্বের আহ্বান। ছিল আতশবাজির খেলাও। তবে সেটা খুব বেশি ছিল না।
এর আগে যতটুকু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে, সবই ছিল ভারতের নানা বর্ণ, ভাষা আর সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস। দৃষ্টি কেড়েছে ‘রিদম অব ইন্ডিয়া’ নৃত্যগীত পরিবেশনায় ১০ বছরের শিশু কেশবের তবলা বাজানো। যতটা ছন্দের তালে তবলা বাজিয়ে গেল শিশুটি, ততটাই ছন্দ নিয়ে গেমসটা আয়োজনে মরিয়া ভারত।
আর এই গেমসে ভালো করার স্বপ্ন নিয়ে আসা আর সব দলের সঙ্গে মার্চপাস্টে ছিল বাংলাদেশও। বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকাটা ছিল শ্যুটার আসিফ হোসেন খানের হাতে। পতাকাটা হাওয়ায় উড়ছিল, গেমসেও কি এভাবেই উড়বে লাল-সবুজ?

No comments

Powered by Blogger.