ডিএসইর লেনদেন নতুন উচ্চতায়

দেশের প্রধান শেয়ারবাজারে গতকাল রোববার সবচেয়ে বেশি লেনদেনের নতুন নজির স্থাপিত হয়েছে। সূচক ও বাজার মূলধনের পরিমাণও এ দিন আগের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল মোট লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৪৮৯ কোটি টাকার শেয়ার। স্টক এক্সচেঞ্জটির ইতিহাসে এখন পর্যন্ত এটিই এক দিনে সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে গত ১৬ জুন ডিএসইতে দুই হাজার ৪৮৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল লেনদেন হয়েছে প্রায় ১৯০ কোটি টাকা। এতে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ দুই হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা।
ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক গতকাল ১২৬ পয়েন্ট বেড়ে সাত হাজার ২২৩ পয়েন্টে নেমে এসেছে। সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক ৩৫৯ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ২১ হাজার ৮৯ পয়েন্ট।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) যখন বাজার স্থিতিশীল রাখতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, তখন বাজারে এ ধরনের উল্লম্ফন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে।
কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সর্বশেষ নির্দেশনাটি দুজন বিনিয়োগকারীর রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট স্থগিত করায় তেমন কোনো পদক্ষেপও নিতে পারছে না সংস্থাটি। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাজারকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তোলা হচ্ছে।
বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাজারে প্রতিদিন নতুন নতুন বিনিয়োগকারী যুক্ত হচ্ছে। এতে বাড়ছে তারল্যপ্রবাহ। আর এর প্রভাবে বাড়ছে লেনদেন ও মূল্যসূচক। তাঁরা আরও বলছেন, বাজারে যে হারে তারল্য বেড়েছে, সেই হারে বাড়েনি শেয়ারের সরবরাহ। উপরন্তু, গত দেড় বছরে নিয়মনীতি পরিপালন না করায় প্রায় ৬০টি কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করা হয়েছে। ফলে বেশি পুঁজি স্বল্পসংখ্যক শেয়ারের পেছনে তাড়া করছে। এতে তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম অনেক আগেই তার মৌল ভিত্তিকে ছাড়িয়ে গেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ অবস্থায় দাম আরও বাড়লে তা বাজারের জন্য ঝুঁকিই বয়ে আনবে। কারণ বাজার কোনো সময় মূল্য সংশোধনের ধারায় ফিরলে আজ যেসব নতুন বিনিয়োগকারী মুনাফা করে আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন, তাঁরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সবচেয়ে বেশি। তাই তাঁদের উচিত এ ব্যাপারে এখনই সতর্ক হওয়া।
অনেকে অবশ্য এ-ও বলছেন যে পুঁজিবাজারে এখনো অনেক কোম্পানি রয়েছে, যেগুলোর দাম মৌল ভিত্তির তুলনায় কম। ঝুঁকি এড়াতে বিনিয়োগকারীরা সেসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে পারেন।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল দুই বাজারেই বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। তবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, বিমা ও অব্যাংকিং আর্থিক খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। আগ্রহের তালিকায় ছিল সিমেন্ট ও প্রকৌশল খাতের শেয়ারও।
ডিএসইতে এ দিন লেনদেন হয়েছে ২৪৪টি কোম্পানির শেয়ার। এর মধ্যে ১৬০টি কোম্পানিরই দাম বেড়েছে। কমেছে ৭৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল সাতটি কোম্পানির শেয়ার। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৮৬টি কোম্পানির শেয়ার। দাম বেড়েছে ১১৭টির, কমেছে ৬৪টির ও অপরিবর্তিত ছিল পাঁচটি কোম্পানির শেয়ার।

No comments

Powered by Blogger.