চ্যাম্পিয়ন সিদ্দিকুরের ফেরা

বেশির ভাগ সময় ক্রিকেটে এমন দেখা যায়। বিদেশ থেকে কোনো সিরিজ বা বড় কোনো ম্যাচ জিতে এসে বিমানবন্দরে উৎসবের ঢেউ বইয়ে যায়। কিন্তু কাল হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে সিদ্দিকুর রহমানের সৌজন্যে গলফেও দেখা গেল এমন উৎসব। নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে বিমানবন্দরের ভেতরে যখন ঢুকছিলেন সিদ্দিকুরের বাবা আফজাল হোসেন ও মা ফিরোজা বেগম, তাঁদের চোখে-মুখে ফুটে উঠছিল গর্ব ও আনন্দের অন্যরকম এক আভা।
লাউঞ্জে বসা বাবা আফজাল হোসেন ইতিউতি করে কাকে যেন খুঁজছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, তাঁর অন্য দুই ছেলে রফিকুল ও শফিকুল তখনো বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকতে পারেননি। মিনিট পাঁচেক বাদে দুই ভাই ঢুকতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন বাবা। সিদ্দিকুরের আরেক ভাই ইদ্রিস ইসলাম চাকরির জন্য শ্রীমঙ্গলে থাকায় আসতে পারেননি। সিদ্দিকুরকে বরণ করে নিতে তর সইছিল না কারোরই। ক্লাব-সতীর্থ ও ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের সবার মুখে হাসি, হাতে গাঁদা ফুলের মালা আর ফুলের তোড়া। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা সেরে কাচের দরজা পেরিয়ে সবার আগে মা-বাবাকে বুকে জড়িয়ে নিলেন বাংলাদেশের গলফ তারকা। এক ফাঁকে সতীর্থরা তাঁকে কাঁধে তুলে নিয়ে নাচতে শুরু করলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সিদ্দিকুর শোনালেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গল্প। এগিয়ে গিয়েও আবারও পেছনে পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ দিনে চমৎকার শুরু করে জাগিয়ে তোলেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা। শেষ পর্যন্ত প্লে-অফে গড়ানো ম্যাচে জিতেই ইতিহাস গড়েছেন। এরপর মালয়েশিয়া ওপেনে খেলে ঢাকায় ফিরেছেন সিদ্দিকুর। তবে মালয়েশিয়া ওপেনে ভালো করতে পারেননি, ২৭তম হয়েছেন।
ব্রুনাই ওপেন জয়ের পর সিদ্দিকুরের স্বপ্নের সীমা বিস্তৃত হয়েছে ইউএস ওপেন পর্যন্ত, ‘ব্রুনাই ওপেনে খেলতে যাওয়ার সময়ও ভাবিনি, আমি চ্যাম্পিয়ন হব। তবে এখন আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। আপাতত ইউরোপ ট্যুরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া আমার লক্ষ্য। আশা করি, এরপর ইউএস ওপেনেও খেলার সুযোগ করে নিতে পারব।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গলফ ফেডারেশনের মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মির্জা বাকের সারওয়ার আহমেদ, পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনের কর্মকর্তা সৈয়দ তাহমিদ আজিজুল হক প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.