সোয়ানের ঘূর্ণি, জুলকারনাইনের প্রতিরোধ

দলের পেসারদের ওপর গ্রায়েম সোয়ানের চটে যাওয়াই স্বাভাবিক। অ্যান্ডারসন-ব্রড-ফিন মিলে যা শুরু করেছেন, তাতে আগামী অ্যাশেজের আগে তাঁর ফর্মের বারোটা বেজে যাওয়ার দশা হয়েছিল। হাতে যে বলটাই পাচ্ছিলেন না!
আগের চার ইনিংস মিলে করতে পেরেছেন মাত্র ৯.২ ওভার। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে করেছেন ৭.১ ওভার। পাকিস্তানের বিপক্ষে ট্রেন্টব্রিজ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২ ওভার। দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে পাওয়ার আগেই পাকিস্তান বিলীন। বল হাতে পাননি চলতি এজবাস্টন টেস্টের প্রথম ইনিংসেও।
বেশ কিছুদিন পর টেস্টে বল করার সৌভাগ্য কালই প্রথম হলো। পরপর দুই ওভারে ২ উইকেট তুলে নিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, হাত কেমন উসখুস করছিল তাঁর। এই ইংলিশ স্পিনার পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে তুলে নিয়েছেন ছয়টি উইকেট। ৮২ রানে পঞ্চম আর ১০১ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে বসা পাকিস্তান অবশ্য এর পরও লড়াই করেছে। এই লড়াই করেছে তারা জুলকারনাইন হায়দার আর সাঈদ আজমলের ব্যাটে। অষ্টম উইকেটে দুজনে মিলে তুলেছেন ১১৬ রান।
সোয়ানের বলে কলিংউডের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ক্যারিয়ারে প্রথম টেস্ট হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। জুলকারনাইনও হয়েছেন সোয়ানের ঘূর্ণির শিকার। ১২ রানের জন্য তিনি দেখা পাননি ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির। তবে আউট হওয়ার আগে পাকিস্তানকে দিয়ে গেছেন সম্মানজনক একটা স্কোর গড়ার ভিত্তি। ১০১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও কাল দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে পাকিস্তানের স্কোর বোর্ডে ছিল ৯ উইকেটে ২৯১ রান। যদিও ম্যাচ বাঁচানো বা জয়ের জন্য এই রান নিতান্তই। কারণ এত কিছুর পরও মাত্র ১১২ রানের লিডই হয়েছে পাকিস্তানের।
সোয়ান কালও বল হাতে পেয়েছেন দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আজহার আলী আর ইমরান ফারহাত নিরুপদ্রব সংসার পেতে বসায়। জুটিটা ৫২ রানে পৌঁছে গিয়েছিল বলেই সোয়ানকে ডেকে পাঠান স্ট্রাউস। তিনটা বল লেগেছে অধিনায়ককে আশ্বস্ত করতে। ফারহাত বোল্ড! পরের ওভারের ওই তৃতীয় বলেই সাজঘরে ফিরেছেন আজহারও। পাকিস্তানের উইকেট পতনের মিছিলও শুরু এ থেকেই। সানিয়া মির্জাকে ঘরনি করার পর থেকে ব্যাটে রান-খরা শোয়েব মালিকের, দলকে আরও বিপদের মধ্যে ফেলে আউট হয়েছেন ৩ রানে। ফিন তাঁর শিকারি। এরপর দুই উমর—আকমল ও আমিনকে ফিরিয়ে দেন সোয়ান।
চা-বিরতি পর্যন্ত পরের ৩১টি ওভারে অবশ্য নতুন কোনো বিপদে পড়েনি পাকিস্তান। পড়তে পারত। জুলকারনাইন টেস্ট অভিষেকে ‘কিং পেয়ার’ (দুই ইনিংসেই প্রথম বলে আউট) পাওয়ার বিরল ‘কীর্তি’ গড়েই ফেলেছিলেন প্রায়। কিন্তু রেফারেল পদ্ধতি বাঁচিয়ে দিয়েছে তাঁকে। আজমলের সঙ্গে শতরানের জুটি গড়ার আগে আমিরকে সঙ্গে নিয়ে প্রস্তরযুগের ব্যাটিং করে সপ্তম উইকেটে তুলেছেন ৫২ রান।
নেতৃত্বের চাপ
অধিনায়ক সালমান বাটের এই সিরিজে ব্যাটিং-গড় ৪! চার ইনিংসে রান করেছেন ১৬।

No comments

Powered by Blogger.