বদলে যাচ্ছে ইংল্যান্ড

রাশভারী। কথা বলেন মেপে। ফ্যাবিও ক্যাপেলোকে ইংলিশ মিডিয়া চিত্রিত করেছে রাগী হেডমাস্টারের চেহারায়। পরশু লন্ডনের সংবাদ সম্মেলনে হাজির ক্যাপেলো যেন ঠিক তার উল্টো। কথা বললেন খোলাখুলি। বিশ্বকাপের পর প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ইংল্যান্ড ফুটবল দলের কোচ ক্ষমা চেয়ে নিলেন ব্যর্থতার জন্য। জানালেন, এই ব্যর্থতার জন্য দায়ী ক্লান্তিকর, শক্তির পুরোটা শুষে নেওয়া ইংলিশ ফুটবলের মৌসুম। স্বীকার করে নিলেন, বিশ্বকাপের পর তাঁকে ছাঁটাই করাই ছিল যৌক্তিক।
বুধবার হাঙ্গেরির বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ। ওই ম্যাচের জন্য দল ঘোষণা করতেই এভাবে সাংবাদিকদের সামনে আসা আরেক মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়া ইংল্যান্ডের এই ইতালিয়ান কোচের। ক্যাপেলো জানালেন, বিশ্বকাপ-ব্যর্থতার খানিকটা ২০১২ ইউরো দিয়ে পুষিয়ে দিতে চান বলেই থেকে গেছেন, ‘এফএ (ইংলিশ ফুটবল সংস্থা) চাইলে আমাকে অবশ্যই ছাঁটাই করতে পারত। আমিও সেটা মেনে নিতাম। কিন্তু আমি একজন যোদ্ধা, যে কখনোই তার ক্যারিয়ারে থেমে যায়নি। আমি সব সময়ই সামনের দিকে তাকিয়েছি। আমি থেকে গেছি, কারণ আমি পরিস্থিতির উন্নতি করতে চাই, ইউরোতে ভালো কিছু করে দেখাতে চাই। এটা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন সমর্থকদের কাছেও, ‘আমি সমর্থকদের, বিশেষ করে যারা আমাদের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা পর্যন্ত গিয়েছিল, তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। জানি, তারা অনেক শ্রম আর অর্থ খরচ করেছেন। হয়তো বুধবারের ম্যাচে তাঁরা আমাদের দুয়োও দেবেন। কিন্তু আমি বলতে চাই, আপনারা আমাদের সমর্থন দিন। ব্যর্থতা ভুলে ইউরোর বাছাইপর্বে দৃষ্টি দেওয়া আমাদের জন্য খুবই জরুরি।’
আগামী মাসে শুরু ইউরো বাছাইপর্বে ইংল্যান্ড ৩ সেপ্টেম্বর বুলগেরিয়ার বিপক্ষে খেলবে প্রথম ম্যাচ। এর আগে মাত্র একটা প্রীতি ম্যাচই পাচ্ছেন ক্যাপেলো। হাঙ্গেরির ম্যাচটা তাই তাঁর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচে এরই মধ্যে ‘ভবিষ্যতের দল’ গড়েছেন। বিশ্বকাপের ২৩ জনের মাত্র ১০ জন ঠাঁই পেয়েছেন ক্যাপেলোর দলে। ফ্রান্স-ইতালিকে অনুসরণ করে তিনিও বড় ধরনের পরিবর্তনই আনলেন।
দলে যুক্ত হওয়া নতুন ১৩ জনের মধ্যে আছেন জ্যাক উইলশার, কাইরান গিবস। ১৮ ও ২০ বছর বয়সী এই দুই আর্সেনাল-প্রতিভার এই ম্যাচেই অভিষেক হয়ে যাওয়ার কথা। ফুলহামের ববি জামোরাও আছেন অভিষেকের অপেক্ষায়। উইলশার হতে চলেছেন ইংল্যান্ডের অভিষেকে দশম কনিষ্ঠতম আন্তর্জাতিক ফুটবলার।
বিশ্বকাপ দলের ১২ জনের (একজন নিজেই অবসর নিয়ে ফেলেছেন) ওপর আস্থা না রাখা মানেই ব্যর্থতার দায়ের বেশির ভাগ তিনি চাপিয়ে দিচ্ছেন খেলোয়াড়দের ওপর। যদিও ক্যাপেলো মন্তব্য করেছেন, বিশ্বকাপে ভালো না খেলার কারণ ইংল্যান্ডের স্নায়ুক্ষয়ী মৌসুম। শারীরিকভাবে তো বটেই, এই চাপ মানসিকভাবেও খেলোয়াড়দের প্রাণশক্তি শুষে নিয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে রাতভর নৈশক্লাবে আমোদ-ফুর্তি করে খবরে আসা রুনির ব্যাপারে তাঁর মন্তব্য, ‘আমি খবরটা পড়েছি। শুনেছি, স্যার ফার্গুসন এসব ব্যাপারে অসন্তুষ্ট। আমিও রুনির সঙ্গে কথা বলব।’

No comments

Powered by Blogger.