চীনে ভূমিধসে ১২৭ জনের প্রাণহানি

চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসে ১২৭ জন প্রাণ হারিয়েছে। নিখোঁজ হয়েছে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ। ভূমিধসে অনেক ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে গেছে। গতকাল রোববার চীনের সরকারি গণমাধ্যম এ কথা জানায়।
খবরে বলা হয়, গানসু প্রদেশের মূলত তিব্বতি এলাকায় এই ভূমিধসে ৭৬ জন আহত হয়েছে। ২০ হাজার লোককে এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অন্তত একটি গ্রাম পুরোপুরি কাদামাটির নিচে চাপা পড়েছে।
চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও গতকাল দুর্গত এলাকায় গিয়ে পৌঁছেছেন। আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালানোর জন্য উদ্ধারকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও ও প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও। গত শনিবার এই ভূমিধসের সূত্রপাত হয়। অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতায় সহায়তার জন্য প্রায় তিন হাজার সেনা এবং ১০০ জন চিকিৎসাকর্মী পাঠানো হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত গানান প্রশাসনিক অঞ্চলের প্রধান মাও শেনগউকে উদ্ধৃতি করে বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যায় ঝউকু কাউন্টির বিশাল এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভূমিধসে কাদামাটি, ঘরবাড়ি ও অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ নদীতে গিয়ে পড়েছে। এ কারণে বন্ধ হয়ে গেছে পানির প্রবাহ। এতে সৃষ্টি হয়েছে বন্যার।
সিনহুয়া জানায়, উদ্ধারকর্মীরা নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। ভূমিধসে একটি ছোট জল বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গেছে।
কাউন্টির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ঘন কাদার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। কাদামাটি এত ঘন যে এর ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া, এমনকি গাড়ি চালানোও সম্ভব।
কাদার জন্য এখনো ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারছেন না উদ্ধারকর্মীরা। ভারী যন্ত্রপাতির পরিবর্তে বেলচা ও খালি হাতে তাঁদের উদ্ধার তৎপরতা চালাতে হচ্ছে।
সিনহুয়া জানায়, কোনো কোনো রাস্তায় তিন ফুট কাদামাটির স্তর পড়েছে।
খবরে বলা হয়, ভূমিধসে অনেক বাড়িঘর চাপা পড়েছে। অনেক রাস্তাঘাট ও সেতু ধ্বংস হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় টেলিযোগাযোগ, পানি ও বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। একটি জায়গায় পানি তিন তলার সমপরিমাণ উঠে গেছে। পানি একটি বাড়ির পাঁচ তলা ছুঁয়েছে বলেও জানা গেছে।
লোকজনকে উদ্ধারে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা—স্থানীয় টেলিভিশনে এসব দৃশ্য দেখানো হচ্ছে। খবরে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত ৬৮০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে

No comments

Powered by Blogger.