মালয়েশিয়ায় পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে

মালয়েশিয়ায় পুলিশি হেফাজতে বন্দী নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছেন জাতিসংঘের তদন্তকারী কর্মকর্তারা। যে নিবৃত্তিমূলক কঠোর নিরাপত্তা আইনের আওতায় আটকে রেখে বন্দীদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে, তা বাতিল করতে মালয়েশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
পুলিশি হেফাজতে বন্দী নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে দুই সপ্তাহের জন্য মালয়েশিয়ায় গেছেন জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তারা। নিবৃত্তিমূলক আইনে আটক অবৈধ অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করবেন জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তারা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদে প্রায় সব বন্দীই জানিয়েছেন, দায় স্বীকার করার জন্য পুলিশ তাঁদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে।
তদন্ত দলের প্রধান এল হেদি ম্যালিক সো বলেন, অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়েছে বলে অনেকে জানিয়েছেন। কারও কারও শরীরে কিল-ঘুষি ও লাথি মারা হয়েছে এবং নোংরা পানি ছোড়া হয়েছে।
ম্যালিক সো আরও বলেন, শুধু শারীরিক নির্যাতনই নয়, কোনো কোনো বন্দীকে খাবার ছাড়াই ছোট কক্ষের মধ্যে আটকে রাখা হয়। আইনজীবীর সঙ্গে পরমর্শের অধিকার বা পরিবারের সঙ্গেও তাঁদের যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি বলে তিনি জানান।
বিতর্কিত অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইনসহ নিবৃত্তিমূলক কঠোর আইন বাতিল করার জন্য মালয়েশিয়া সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। দেশটিতে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইনের আওতায় যে কাউকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখা যায়। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের এই আইনের লক্ষ্য ছিল কমিউনিস্ট বিদ্রোহীদের দমন। কিন্তু অভিযুক্ত সন্ত্রাসী ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এখনো ওই আইন ব্যবহূত হয়ে আসছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক তাঁর সংস্কার কর্মসূচির অংশ হিসেবে অনেককে মুক্তি দিলেও এখনো প্রায় ১৫ জনকে ওই আইনের আওতায় আটকে রাখা হয়েছে।
তদন্তে পাওয়া প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ করার পর তদন্ত দলের প্রধান ম্যালিক সো বলেন, ‘এই আইন বিলুপ্ত করার জন্য আমরা সরকারের প্রতি সুপারিশ করেছি।’
আগামী বছরের মার্চে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত দল।
আবেদন নাকচ : মালয়েশিয়ায় বিরোধী দলীয় নেতা আনোয়ার ইব্রাহীম তাঁর বিরুদ্ধে আনীত সমকামিতার অভিযোগসম্পর্কিত ডাক্তারি প্রমাণাদির জন্য আদালতে যে আবেদন করেছেন, গতকাল শুক্রবার তা নাকচ করে দিয়েছেন আদালত। তাঁর আইনজীবী শঙ্করা নায়ার বলেন, ডাক্তারি প্রতিবেদন, ক্লিনিক্যাল নোটসহ অন্য প্রমাণাদির জন্য আনোয়ার ইব্রাহীমের আবেদন হাইকোর্ট নাকচ করে দেওয়ায় আদালতে তাঁদের যুক্তি-তর্ক ও জেরা ব্যাহত হতে পারে। তিনি বলেন, এটা অনেকটা হাত পেছনে বেঁধে বক্সিং রিংয়ে যেতে বলার মতো।

No comments

Powered by Blogger.