জ্যামাইকায় মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে অভিযান, বন্দুকযুদ্ধে নিহত ৩

জ্যামাইকার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ক্রিস্টোফার কোক ওরফে দুদুসকে ধরতে গত সোমবার তাঁর শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত রাজধানী কিংস্টনের টিভোলি গার্ডেন এলাকায় অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। এ সময় তাঁরা দুদুসের সশস্ত্র অনুগতদের প্রচণ্ড বাধার মুখে পড়ে। তাদের সঙ্গে রীতিমতো বন্দুকযুদ্ধ বেধে যায়। এতে এক সেনা ও দুই পুলিশ সদস্য নিহত হন। যুক্তরাষ্ট্রের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকাভুক্ত দুদুসকে মার্কিন প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জ্যামাইকা সরকার ঘোষণা দেওয়ার পর সেখানে অভিযান চালানো হয়।
জ্যামাইকার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডুইট নেলসন গত সোমবার রাতে বলেছেন, যৌথ বাহিনী টিভোলি গার্ডেন থেকে বেশ কিছু লোককে আটক করেছে। তবে, তাদের মধ্যে দুদুস নেই। তিনি বলেন, সেখানে কিছুসংখ্যক বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে বলে কয়েকটি অসমর্থিত সূত্রে তিনি খবর পেয়েছেন। স্থানীয় এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে পুরো টিভোলি গার্ডেন ঘিরে ফেলা হয়েছে। দুদুসকে ধরতে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কিংস্টনের বাসিন্দাদের পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বাড়ি থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নেলসন বলেছেন, যেভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে তাতে অপরাধীর পালিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এদিকে, টিভোলি গার্ডেন এবং রাজধানীর একটি বিশাল এলাকায় স্থানীয়রা দুদুসের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। টিভোলি গার্ডেনে অভিযান চালানোর সময় যৌথ বাহিনী স্থানীয়দের প্রবল বাধার মুখে পড়েন। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে সেনাবাহিনী সেখানে ঢোকে। স্থানীয়রা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেছেন, দুদুস তাঁদের কাছে অভিভাবকের চেয়েও বেশি কিছু। অনেকের কাছেই তিনি একজন ত্রাতা হিসেবে বিবেচিত।
ক্রিস্টোফার কোক ওরফে দুদুস কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থক না হলেও তিনি নিজেকে স্থানীয় এলাকাবাসীর প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দেন। গত সোমবার বহু সমর্থককে বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এক সমর্থকের একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘আমাদের জন্য যিশু প্রাণ দিয়েছিলেন, আমরা দুদুসের জন্য প্রাণ দেব।’
দুদুসের একজন আইনজীবী তাঁকে সাধারণ ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, মাদক চোরাকারবারিদের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগসাজশ নেই। তবে মার্কিন কৌঁসুলিদের দাবি, ১৯৯০ সালে ‘দি শাওয়ার পোস’ নামে দুদুস একটি আন্তর্জাতিক মাদকচক্র গড়ে তোলেন। তখন থেকেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে কোকেন ও মারিজুয়ানা চালান করে আসছেন। ওই মাদক বিক্রির অর্থ দিয়ে তিনি অস্ত্র কিনে দেশে পাঠাচ্ছেন। তাঁর এই নেটওয়ার্ক পরিচালনার জন্য একটি বিশাল বাহিনী গড়ে তুলেছেন তিনি।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র দুদুসকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য জ্যামাইকা সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। কয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রী ব্রুস গোল্ডিং দুদুসকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন।

No comments

Powered by Blogger.