থাকসিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিলের আবেদন

থাইল্যান্ডের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিলের আবেদন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার তাঁর আইনজীবীরা আদালতে এই আবেদন করেন।
গত মার্চ থেকে শুরু সরকারবিরোধী বিক্ষোভ উসকে দেওয়ার অভিযোগে গত মঙ্গলবার থাকসিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। থাকসিনের আইনজীবী থানাদেজ পুয়াংপুল দাবি করেন, ‘বিকৃত তথ্যের ভিত্তিতে অন্যায়ভাবে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আদালত আগামী ১৮ জুন এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন বলে আশা করছি।’
থাকসিন দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। তবে সরকারের এই পদক্ষেপ থাকসিনকে নির্বাসনে রাখার কৌশল বলেই মনে করা হচ্ছে।
শান্তি কামনা করে ব্যাংককে প্রার্থনা
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে গতকাল বুধবার হাজার হাজার মানুষ দেশের শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করেছে। এতে মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও সনাতন ধর্মের নেতারা যোগ দেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বিপণিকেন্দ্র সেন্টার ওয়ার্ল্ডসহ ব্যাংককের ১০টি স্থানে এ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা সুমিত খোরানা বলেন, ‘আমরা দেশ ও জনগণের শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করেছি। এ মুহূর্তে দেশের পরিস্থিতি শান্ত। কিন্তু আমরা আতঙ্কিত, কারণ ভবিষ্যতে কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে, তা আমরা কেউই জানি না।’
বিক্ষোভকারীদের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত সেন্টার ওয়ার্ল্ডের সামনে জড়ো হয়ে প্রার্থনায় অংশ নেন এই বিপণিকেন্দ্রের কর্মীরা। এখানে বৌদ্ধ ধর্মগুরুরা সবাইকে নিয়ে প্রার্থনা করেন।
মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতা উসকে দেওয়ার দায়ে গত মঙ্গলবার দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এর ফলে দেশটিতে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
থাকসিনের সমর্থক লাল শার্ট পরা আন্দোলনকারীদের আন্তর্জাতিকবিষয়ক মুখপাত্র সিন বুনপ্রাসং বলেন, ‘এ মুহূর্তে নতুন করে আন্দোলন শুরু করা আমাদের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। কিন্তু এটাও ঠিক যে গত সপ্তাহে ব্যাংককের ঘটনা আমরা কেউ ভুলিনি।’
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী আপিসিত ভেজ্জাজিওয়ার পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে গত ১৪ মার্চ থেকে আন্দোলন শুরু করে থাকসিনের সমর্থকেরা। বিক্ষোভ চলাকালে সহিংসতায় ৮৮ জন নিহত হয়। আহত হয় দুই হাজারেরও বেশি লোক। এর মধ্যে গত সপ্তাহেই অন্তত ৬০ জন নিহত হয়।

No comments

Powered by Blogger.