গ্রাসের থাবা থেকে কি কিছুই রেহাই পাবে না -সাত দিনে ৩০ হাজার ঝাউগাছ উজাড়

টেকনাফ সমুদ্রসৈকতে একসময়ের ঘন বনের এক ভয়ানক দুর্দশা দেখা গেছে সোমবারের প্রথম আলোতে। ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ঝাউগাছের বন উজাড় করে ফেলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মতো বিপর্যয়ে যে বন প্রাকৃতিক দেয়াল হয়ে উপকূলের অধিবাসীদের জীবন ও সম্পদ রক্ষা করার কথা, আজ তা শুধুই বিরানভূমি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের তথ্যানুসারে, এক সপ্তাহে অন্তত ৩০ হাজার ঝাউগাছ নিধন করা হয়েছে। বন বিভাগের কিছু কর্মীর যোগসাজশে কয়েকজন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি গাছ কেটেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রকাশ্যে এত বিশাল এলাকাজুড়ে ছড়ানো বন উজাড় হলো অথচ বন বিভাগ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিল না। গাছ নিধনে সহায়তা করার বিনিময়ে বনকর্মীরা আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন—এমন অভিযোগ আছে। রক্ষক নিজেই যখন ভক্ষক বা ভক্ষকের সহযোগী হয়ে ওঠে তখন জনগণের ভরসার আর কী জায়গা অবশিষ্ট থাকে?
পাশাপাশি চলছে জমি দখলের উত্সব। অথচ এসব বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো পরস্পরকে দায়ী করছে। গাছ কাটা হবে, জমি দখল হবে আর প্রশাসন তা ঠেকাতে পারবে না—এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দেশে সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থাকার পরও প্রতিরোধহীনভাবে এমন বন চুরি চলতে থাকে কী করে? গ্রাসের থাবা থেকে কি কিছুই রেহাই পাবে না?
পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে সরকারকে বনের ক্ষতি বন্ধ করতে হবে, বন ব্যবস্থাপনা উন্নত ও গতিশীল করতে হবে। পরিবেশ ও উপকূলের অধিবাসীদের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় অবিলম্বে এই ধ্বংসাত্মক কাজে অংশগ্রহণকারী ও মদদদাতাদের খুঁজে বের করে বিচারের সম্মুখীন করা প্রয়োজন।

No comments

Powered by Blogger.