মামলা দিয়ে কণ্ঠরোধ করা যায় না -আবার গলাচিপা

গলাচিপা বাংলাদেশের আর দশটি উপজেলার মতো একটি উপজেলা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক অঘটনের পরিপ্রেক্ষিতে গলাচিপার নাম এখন সারা দেশের মানুষের মুখে মুখে। মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের হয়রানির পর গলাচিপা আবার আলোচনায় এসেছে এক ‘শ্যালক’-এর কল্যাণে। পটুয়াখালী-৩ আসনের সাংসদ গোলাম মাওলার শ্যালক মকবুল খান এলাকায় ‘স্বরাজ’ কায়েম করেছেন। মকবুল খান ও তাঁর সহযোগীরা সরকারি গাছ কাটতে গেলে বাধা দেওয়ায় উপজেলার ডাকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান নেছারউদ্দিন গাজীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার শাস্তি যদি হয় মামলা, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে!
সাংসদের আশকারা না পেলে তাঁর শ্যালকের পক্ষে কোনোভাবেই অন্যায় করে বেড়ানো সম্ভব নয়। এর দায় মাননীয় সাংসদ কিছুতেই এড়াতে পারেন না। এ ধরনের ঘটনা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে বড় ধরনের নেতিবাচক ভূমিকা রাখবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
কিছুদিন আগে গলাচিপায় স্থানীয় সাংবাদিকদের হয়রানি করতে একাধিক কল্পিত মামলা দেওয়ার ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের হুমকি-ধমকি এখনো অব্যাহত রয়েছে। কিছু সুযোগসন্ধানী ব্যক্তিও নিজেদের আখের গোছানোর স্বার্থে এসব অপতত্পরতার সঙ্গী হয়েছেন।
সরকার মুখে বলবে তথ্য অধিকার ও সুশাসনের কথা, আর কর্মীরা লুটপাট ও নির্যাতনে ব্যস্ত থাকবে, তা চলতে পারে না। সরকারের এই দ্বৈতনীতি সাধারণ মানুষ ভালো চোখে দেখছে না। সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব বারবার বলছেন দিনবদলের কথা; কিন্তু মাঠপর্যায়ে যা হচ্ছে তা কোনো অর্থেই ‘দিনবদল’ নয়, ‘হাতবদল’। গলাচিপার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া সরকারের কর্তব্য।

No comments

Powered by Blogger.