ভারতকে ট্রফি দেখাচ্ছেন টেন্ডুলকার

২০০৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা দলের উইকেট-প্রতি সবচেয়ে কম রান হয়েছে এই প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে। দিনের বেলা আর ফ্লাড লাইটে উইকেটের চরিত্র কেমন পাল্টে যায় সেটা তো দেখেছেন আগের ম্যাচেই। ‘অবশ্যই আমরা ব্যাট করব’ টস জিতে হাসিমুখে মহেন্দ্র সিং ধোনির বলা এই কথায় তাই অবাক হলেন না কেউ। ধোনির হাসি আরও চওড়া হলো নিজেদের ইনিংস শেষে। সৌজন্য আরও একবার শচীন টেন্ডুলকার।
লিটল মাস্টারের পুরোনো দিনকে মনে করিয়ে দেওয়া এক সেঞ্চুরি আর অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের হাফ সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩১৯ রান করেছে ভারত। বিশাল লক্ষ্যের পেছনে শুরুটা দারুণ করলেও স্পিনাররা ম্যাচে ফিরিয়েছেন ভারতকে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৮ ওভারে ১৩২ রান তুলতেই ইনিংসের অর্ধেক হারিয়ে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা। অধিনায়ক সাঙ্গাকারার (১৯) সঙ্গে উইকেটে ছিলেন থিলান কান্দাম্বি (১)।
আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে পর্যদুস্ত হওয়ার পর কাল ভারতের ইনিংসের সূচনা করেছিলেন টেন্ডুলকার ও রাহুল দ্রাবিড়। ১৭.২ ওভারে ৯৫ রান তুলে ভারতকে দারুণ এক ভিত গড়ে দেয় এই জুটি। দ্রাবিড়কে শর্ট কাভারে দিলশানের ক্যাচ বানিয়ে সনাত্ জয়াসুরিয়া জুটিটা ভাঙলেও ভারতকে এগিয়ে নেওয়ার কাজটা করেন বর্তমান ও সাবেক অধিনায়ক। ৭৮ ম্যাচ আর ৫ বছরের অপেক্ষার পর ১৯৯৪ সালে প্রেমাদাসায় নিজের ওয়ানডে সেঞ্চুরি-খরা কাটিয়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। কাল পেলেন চতুর্থ সেঞ্চুরি। ১৩৮ রানের এই ইনিংসের পথে কাল এ মাঠে নিজের ১০০০ রানও পার করে ফেলেছেন। তবে এসব কোনোটার জন্যই নয়, টেন্ডুলকারের কালকের ইনিংসটা মনে থাকবে নব্বইয়ের দশককে মনে করিয়ে দেওয়া ব্যাটিংয়ের কারণে। দুর্দান্ত সব কাভার ড্রাইভ-স্কয়ার ড্রাইভ, ফ্লিক, অফ স্টাম্পের বল কবজির মোচড়ে মিড উইকেট বাউন্ডারিতে পাঠানো...কী খেলেননি তিনি? ফ্রি হিট পেয়ে ৪৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন যে শটটি খেলে, কাল সেটি ছিল তাঁর বাতাসে ভাসিয়ে প্রথম কোনো শট।
দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরিতে বল খেলেছেন আরও দুটি কম। মেন্ডিসের বলে কাভারের ওপর দিয়ে সীমানা ছাড়া করার পরের দুই বলে রিভার্স সুইপ করে দুটি চার। পরের বলে আবারও একই শট খেলতে গিয়ে এলবিডব্লু। ৪৪তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করে যখন ফিরছেন, পুরো প্রেমাদাসা তখন দাঁড়িয়ে। শচীনের সঙ্গে ধোনির নিয়ন্ত্রিত আর যুবরাজের আগ্রাসী দুটি ৫৬ রানের ইনিংসে ভারত পৌঁছে যায় ৩১৯ রানের নিরাপদ দূরত্বে।
প্রেমাদাসায় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ২৭১, শ্রীলঙ্কার সবগুলো ভেন্যু হিসাব করলে সেটা আর মাত্র ১৮ বেশি। এ রিপোর্ট লেখার সময় বিশ্বের প্রথম ডিজিটাল কাপটা ধোনির হাতে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ছিল।

No comments

Powered by Blogger.