রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ: সংস্কার, নির্বাচন নিয়ে আলোচনা

রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ফের সংলাপ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিকাল ৩টা থেকে এই সংলাপ শুরু হয়। মূলত নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারে জোর এবং রোডম্য্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে দলগুলো। সংলাপে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারেও সরকারকে পরামর্শ দেয়া হলে তা ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাসহ দলগুলো পৃথক পৃথকভাবে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে। এ ছাড়া সরকারকে আরও বেশি কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয় দলগুলোর পক্ষ থেকে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব পরামর্শ ও প্রস্তাবগুলো ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেছে। বলেছেন, সংস্কার শেষে যতদ্রুত সম্ভব একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।

প্রথমে গণফোরামের সঙ্গে সংলাপে বসেন ড. ইউনূস। বিকাল ৩টায় শুরু হয়। শেষ হয় সাড়ে ৩টার দিকে। গণফোরামের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন। সংলাপ শেষে বেরিয়ে যমুনার সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের কাছে গণফোরামের সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব মিজানুর রহমান বলেন, বৈঠকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারসহ বেশ কিছু ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন। সরকার সেটা ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে সংবিধান, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন কথা বলেছেন বলে জানান দলটির সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসীন মন্টু। তিনি বলেন, সংলাপে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে জোর দিয়েছি। সিন্ডিকেটকে অবশ্যই ভাঙতে হবে। মোস্তফা মহসীন বলেন, পতিত স্বৈরাচার ও তাদের বিদেশি এজেন্টরা বাংলাদেশটাকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে, তাদের থেকে উদ্ধারের জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। গণফোরাম অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চায় জানিয়ে তিনি বলেন, সবাইকে একমত হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। এ সরকার জনগণের সরকার। এ সরকারকে রক্ষার স্বার্থে, অর্থাৎ আমাদের নিজেদের রক্ষার স্বার্থে আগামী দিনে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে।

মন্টু বলেন, আমরা সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা করবো। জনগণের জন্য দরজা খোলা আছে বলে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন। নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে মোস্তফা মহসীন বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন কমিশন করতে হবে। এটার জন্য সার্চ কমিটি বা কিছু করার প্রয়োজন আছে, ভালো লোক নিয়োগ দেয়ার দরকার আছে। যাতে অতীতের মতো কোনো সমস্যা না হয়। রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা কোনো তারিখ উল্লেখ করিনি। বলেছি, সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন দেয়ার জন্য। আটটি দিবস বাতিল করা হয়েছে- এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নে মোস্তফা মহসীন বলেন, জাতীয় দিবস ছাড়া কোনো দিবসই রাখা উচিত নয়। এই সংলাপে গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলটির সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসীন মন্টু, কো-চেয়ারম্যান এস এম আলতাফ হোসেন, সুব্রত চৌধুরী, সদস্য সচিব মিজানুর রহমান, সদস্য এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, মহিউদ্দিন আবদুল কাদের, মোশতাক আহমেদ ও সুরাইয়া বেগম।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি কর্ণেল অলির: গণফোরামের পর লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে সংলাপ করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। বিকাল সাড়ে ৩টায় এলডিপি’র প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সংলাপে অংশ নেন। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন- এলডিপি’র মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম তালুকদার। সংলাপে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাসহ নতুন করে ২৩ দফা প্রস্তাব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দিয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। একইসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মতো আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার করে ফাঁসি দেয়ারও দাবি জানিয়েছেন অলি আহমদ। বিকাল ৪টায় যমুনার অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের কাছে অলি আহমদ বলেন, দুই দফা সংলাপের প্রথমবারে ১০৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। দ্বিতীয় দফায় এবার আরো ২৩টি প্রস্তাব দিয়েছি। এসব প্রস্তাব কাউকে সুবিধা দেয়ার জন্য নয়, কাউকে জেল থেকে মুক্ত করার জন্য নয়, দেশের জনগণের জন্য দিয়েছি। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং সুন্দর প্রশাসন চালানোর জন্য, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য, নিত্যপণ্যের বাজার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনাসহ বিভিন্ন প্রস্তাব রয়েছে।

জুলাই-আগস্টে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ১৮ কোটি মানুষ যুদ্ধ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা পুলিশসহ প্রশাসনকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে, জনগণের সঙ্গে মুখোমুখি করে দিয়েছে, দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে, দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে, আমাদের হাজার হাজার ছেলে-মেয়ে হতাহত করেছে।

অলি আহমদ বলেন, আমরা মনে করি, একাত্তরে জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, তখন আমরা তাদের নিষিদ্ধ করেছিলাম। তাহলে আজকে কী কারণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে না? আমরা আবার বলেছি, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তারা ১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই।

ওদিকে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে সংলাপ করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের চলমান নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশি অপারেটরের হাতে তুলে না দেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, সরকারকে সতর্ক করেছি যে, আরও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। বলেছি, এখনো ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রেতাত্মা প্রশাসনে ঘাপটি মেরে বসে আছে-তাদের অতিদ্রুত অপসারণ করুন। পাশাপাশি প্রশাসনকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে বলেছি। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি- প্রশাসনে বিশেষ একটি ক্যাডার সার্ভিস রয়েছে, তাদের নিয়োগ আমরা বাতিল করতে বলেছি। মোস্তফা জামাল হায়দার ছাড়াও সংলাপে বাংলাদেশ এলডিপি’র মহাসচিব ও ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মোহাম্মদ ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান এডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব এডভোকেট আবুল কাশেম, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারম্যান ফিরোজ মো. লিটন, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এম এ মান্নান উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ’র সঙ্গে সংলাপ করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সংলাপ শেষে আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। নিষিদ্ধ করা হচ্ছে, না-কি নিষিদ্ধ করা হবে- সেটা মুখ্য না। একটা ব্যবস্থা নিতে হবে। আওয়ামী লীগকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ হবে, না কি হাইকোর্ট থেকে কোনো আদেশের মাধ্যমে হবে- সেটি পরের ব্যাপার। কিন্তু সেই প্রক্রিয়াটা শুরু হওয়া উচিত।
পার্থ বলেন, আমি বলেছি, আপনার এমন কোনো সংস্কার হাতে নেয়া ঠিক হবে না যেটা গণতান্ত্রিক সরকারের নেয়া উচিত। আপনাদের সংস্কারগুলো নির্বাচনমুখী সংস্কার হলে ভালো হবে। বাকি প্রস্তাব থাকতেই পারে, যেগুলো হয়তো পরবর্তী সরকার করবে। মনে রাখতে হবে, এটা জনগণের সরকার। কিন্তু জনগণের দ্বারা নির্বাচিত কোনো সরকার না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ৩টি অবৈধ নির্বাচন করেছিল, সেই বিষয়ে কোনো স্টেপ নেয়া যায় কিনা আমরা সেই ব্যাপারে বলেছি। দ্রব্যমূল্যের দাম অলরেডি মানুষের নাগালে বাইরে চলে গেছে। আওয়ামী লীগের আমলে দেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থগুলো যেন ফেরত আনা হয়, সে বিষয় প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেছি।

ওদিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করে নির্বাচনী রোডম্যাপ (পথনকশা) প্রকাশ করতে আহ্বান জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। একইসঙ্গে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করারও অনুরোধ জানিয়েছেন জোটের নেতারা। প্রধান উপদেষ্টার কাছে জোটের পক্ষ থেকে ২৩টি লিখিত প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। ওই প্রস্তাব নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপি’র চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান। সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদিকী, এনডিপি’র চেয়ারম্যান কারী আবু তাহের প্রমুখ।

লেবার পার্টি: বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপে রাষ্ট্র সংস্কারে স্বল্প মেয়াদে ১৮ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। সংলাপ শেষে দলটির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা বলেছি, যত সংস্কার করুন না কেন, সবার আগে সংস্কার করতে হবে উপদেষ্টা পরিষদের। এ পরিষদের হাতেগোনা কয়েকজনের সফলতা ছাড়া বাকি সবাই ব্যর্থ। তাই ব্যর্থদের দ্রুত অপসারণ করতে হবে। মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে সংলাপে লেবার পার্টির মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম অংশ নেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ জাসদ, ন্যাশনাল  ডেমোক্রেটিভ মুভমেন্ট, জাতীয় গণফ্রন্ট ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সঙ্গেও সংলাপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। বাংলাদেশ জাসদের পক্ষে দলটির সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটি ছিল প্রধান উপদেষ্টার চতুর্থ দফা সংলাপ। সবশেষ গত ৫ই অক্টোবর সংলাপ হয়েছিল।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেয় ৯টি রাজনৈতিক দল। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। এরপর সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বৈঠকের বিষয়ে বলেন, দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন ও সংস্কার নিয়েই বেশি কথা হয়েছে। আওয়ামী লীগের গণহত্যা ও বিচার নিয়ে কথা হয়েছে। ১৪ দলসহ অন্য শরীক যারা আওয়ামী লীগের হাত শক্তিশালী করেছে এবং গণহত্যায় সহযোগিতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে এসব বিষয়ে জানতে চেয়েছেন তারা। স্যার (ড. মুহাম্মদ ইউনূস)  দ্রব্যমূল্য কমানোর বিষয়ে বলেছেন।

তিনি আরও বলেন, খুব দ্রুতই নির্বাচনের জন্য সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। এতে ৬ সদস্য থাকার কথা। বিধিমালা অনুযায়ী যা যা করার দরকার তা করা হবে। এরসঙ্গে সমান্তরালে সংস্কারগুলোর বিষয়ে কাজ করা হবে। সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। নির্বাচনী কার্যক্রম আছে। যেমন ভোটার তালিকা হালনাগাদ। সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচিত কমিশনাররা এসে এসব ঠিক করবেন। এটা অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেই হবে। নির্দলীয়, নিরপেক্ষ অবস্থান অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান অব্যাহত থাকবে। সার্চ কমিটি বিদ্যমান আইনে হবে।

মাহফুজ আলম বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে কথা এসেছে। তাদের রাজনীতি কীভাবে সীমিত করা যায়, গত তিন পার্লামেন্ট কীভাবে অবৈধ ঘোষণা করা যায় সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। যারা গত ৩ নির্বাচনে অবৈধভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে বাধা তৈরি করবে এবং এই বাধা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে সেটা অচিরেই দেখতে পারবেন। আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলকে নিষিদ্ধ করা কিংবা জাতীয় পার্টিকে আর আমরা ডাকছি না। সরকার একা সিদ্ধান্ত নেবে না। সবগুলো দলের মতামতের ভিত্তিতেই নিষিদ্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।  

আওয়ামী লীগ নেতাদের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ৫ থেকে ৮ই আগস্ট দেশে কোনো সরকার ছিল না। আবার এক সপ্তাহ পুলিশ প্রশাসন ছিল না। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা ছিল পালানো ঠেকানোর, অ্যারেস্ট করার। এখনো তাই আছে এবং তদন্তও হবে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর ও আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.