আনোয়ার ইব্রাহিমের বাংলাদেশ সফরের প্রতিফলন: বাংলাদেশি কর্মীদের ইপিএফ বাধ্যতামূলক করছে মালয়েশিয়া by আরিফুল ইসলাম

মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশ সহ সমস্ত বিদেশি কর্মীদের জন্য এমপ্লয়ীজ প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ) বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা করছে।

প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিমের বরাতে দেশটির সরকারি নিউজ এজেন্সি বারনামা সহ দেশটির প্রায় সকল মিডিয়া জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মান অনুসারে, জাতীয়তার ভিত্তিতে বৈষম্য ছাড়াই সকল কর্মীকে ন্যায্য অধিকার প্রদানের জন্য মালয়েশিয়া সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

গত শুত্রুবার দেশটির সংসদ 'দেওয়ান রাকয়াতে' ২০২৫ সালের বাজেট পেশ করার সময় এই প্রস্তাব ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করার এমন ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

অবসরকালীন সঞ্চয়কে উৎসাহিত করতে এবং অনানুষ্ঠানিক কর্মী ও অনিয়মিত আয়ের ব্যক্তিদের জন্য, আনোয়ার ইব্রাহিম, যিনি দেশটির অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এ ঘোষণা করেছেন যে, এমপ্লয়ীজ প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ) এর আওতায় রিটায়ারমেন্ট সেভিংস আই-সারাণ ম্যাচিং প্রণোদনা ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে, যা বার্ষিক সীমা হিসেবে সর্বোচ্চ ৫০০ রিঙ্গিত থেকে সারাজীবনে সর্বোচ্চ ৫০০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত থাকবে।

এছাড়া জনবান্ধব এ প্রধানমন্ত্রী আরো জানিয়েছেন, 'আই-সুরি' প্রোগ্রামটি অর্থাৎ, গৃহিণী, বিধবা, একক মা এবং একক মহিলাসহ জাতীয় দারিদ্র্য ডেটা ব্যাংক 'ইকাছিহ'তে নিবন্ধিত মহিলাদের জন্য স্বেচ্ছাসেবী এ সাবস্ক্রিপশন প্রোগ্রামটি সরকারি এবং সক্রিয় অংশগ্রহণকারীদের অবদানের ভিত্তিতে ম্যাচিং প্রণোদনার সাথে চালিয়ে যাওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, সামাজিক সুরক্ষা এজেন্ডা আরও জোরদার করা হবে যাতে বেশি সংখ্যক মানুষের অবসরকালীন সঞ্চয় এবং দুর্যোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। আত্ম-কর্মসংস্থান সামাজিক সুরক্ষা স্কিমটি কর্মচারীদের অবদানের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কভার করবে, যার জন্য ১০০ মিলিয়ন রিঙ্গিত বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

তাছাড়া মালয়েশিয়া একটি বয়স্ক জাতির দিকে ধাবিত হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়ে আনোয়ার বলেন, এমপ্লয়ীজ প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ) তাদের স্কিমগুলিকে পর্যালোচনা করছে যাতে সকল জেনারেশনের মধ্যে শক্তভাবে তা বণ্টন করা যায় এবং ইপিএফ সদস্যদের সঞ্চয়ের একটি অংশ সরাসরি তার পরিবারের সদস্যদের ইপিএফ অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করার সুযোগ তৈরি করে দেবে।

উল্লেখ্য যে, গত ৪ অক্টোবর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশ সফরের সময় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, ‘আমরা পুরো ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। আমাদের শ্রমিক দরকার, তাদের আধুনিক দাস হিসেবে গণ্য করা যাবে না। তারা বাংলাদেশ বা অন্য যেখান থেকেই আসুক না কেন, আমি এখানকার মতো আগেও প্রকাশ্যে এ কথা বলেছি।’

mzamin

No comments

Powered by Blogger.