আখাউড়ায় মসজিদ দখল করে মন্ত্রীর বউয়ের নামে নামকরণ by জাবেদ রহিম বিজন
সরজমিন দেখা গেছে, ৬ তলা পর্যন্ত মসজিদের অবকাঠামো দৃশ্যমান হলেও ছাদ ছাড়া চারদিকই খোলামেলা। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন জানান, ৪ শতক জায়গার ওপর তারা প্রথম ৩ তলা মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদের নিচে ৬টি দোকানঘরও ছিল। মেয়র কাজল মসজিদ পৌরসভার দখলে নিয়ে পুরাতন মসজিদ ভেঙে ফেলেন। এরপর ৭ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে নতুন মসজিদ করার কাজ শুরু করেন। ২০২০ সালের দিকে কাজ শুরু হলেও মাটি খননের পর ২ বছর কাজ বন্ধ থাকে। মসজিদ নির্মাণ কাজের জন্যে জেলা পরিষদ থেকে ২৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। টিআর-কাবিখার বরাদ্দও মসজিদের কাজের জন্যে দেয়া হয়। তাছাড়া আগের ৬টি দোকানের স্থলে মেয়র ৯টি দোকান করেন। আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি ৭টি দোকান বরাদ্দ করে প্রায় ৪০ লাখ টাকা নিয়েছেন মেয়র। কিন্তু আমরা টাকা ও কাজের প্রকৃত হিসাব এখনো পাইনি। বাণিজ্যিক এলাকার এই মসজিদ দখলে নেয়ার পেছনে মেয়রের লাভের চিন্তাও কাজ করেছে বলে মসজিদ কমিটির নেতাদের ধারণা। ওপরে দোকানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা ছাড়াও আন্ডার গ্রাউন্ডেও সমসংখ্যক দোকান করার পরিকল্পনা ছিল তার। যদিও তা করতে পারেননি। দোকানগুলো সম্পন্ন হলে বুঝা যেত সেগুলো কারা নিয়েছে। এখন যে ৭টি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সেগুলো আগের ব্যবসায়ীরা অগ্রাধিকারে পেয়েছে বলে জানান মসজিদ কমিটির নেতারা।
মেয়রকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ হলে গত ৩রা সেপ্টেম্বর সড়ক বাজারের ব্যবসায়ীরা পৌরসভায় গিয়ে প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে মসজিদের বিষয়ে কথা বলেন। এ সময় তারা ৫শ’ জনের স্বাক্ষরিত একটি আবেদনও দেন। এরপরই ৬ই সেপ্টেম্বর জুমার দিনে মাইকিং করে মসজিদ কমিটি করা হয়। এ বিষয়ে বিল্লাল হোসেন জানান, সাক্ষাতের পর প্রশাসক আমাদেরকে বলেছেন, এটা পৌরসভার কোনো মসজিদ নয়। এটা পৌরসভার কাজও নয়। ৫ই আগস্টের পর মসজিদ আগের নামে নামকরণ করে ব্যানার টানিয়ে দেয়া হয়। মসজিদ কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আগে মন্ত্রীর বিবির নামে মসজিদ ছিল। মেয়র জোর করে মসজিদ দখলে নিয়ে ওই নাম দেন। ৫ই আগস্টের পর আগের নাম ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আমরা মুসল্লিরা কমিটি করে এখন মসজিদের কাজ করছি। গত ৪ বছরে ৬টি ছাদের কাজই করেছেন মেয়র। আখাউড়া পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাহমুদা আক্তার অবশ্য এ নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
No comments