জার্মানিতে উগ্র ডানপন্থী দল এএফডির উত্থানে চিন্তিত ব্যবসায়ী মহল
এই দুই রাজ্যের ফলাফল প্রকাশের পর এএফডি নেতারা বলেছেন, তাঁরা আঞ্চলিক সরকারে আসতে চান। তাঁদের দাবি, মানুষ তাঁদের ও সিডিইউর পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তবে সিডিইউ নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা এএফডির সঙ্গে হাত মেলাবেন না।
নির্বাচনের আগে শ্রম ইউনিয়ন ও শিল্প-বাণিজ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা বলেছিলেন, এএফডি জিতলে তার প্রতিক্রিয়া হতে বাধ্য। তখন বিনিয়োগকারীরা পিছিয়ে যেতে পারেন। তাঁদের আশঙ্কা, সে ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে, যা তাঁরা চান না।
শিল্পপতি ওলাফ শাখার্ট সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, বিনিয়োগকারীরা যদি মনে করেন, কোনো অঞ্চল তাঁদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত নয়, তাহলে তাঁরা সেখানে যাবেন না। এএফডির প্রতি সমর্থন বেড়ে যাওয়ার পর সাক্সনি ও থুরিঙ্গিয়াতে বিনিয়োগ করার আগে তাঁরা দুবার ভাববেন।
বিজনেস লবি গ্রুপ ও অর্থনীতিবিদেরা চিন্তিত
এই দুই রাজ্যে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর জার্মান এমপ্লয়িস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএ) প্রেসিডেন্ট সুস্থির রাজনীতির সঙ্গে অর্থনীতির বাড়বাড়ন্তের মধ্যে সম্পর্কের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, এএফডির উত্থান থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট, জার্মানি এখন দিশায় চলেছে, তা নিয়ে মানুষ উদ্বিগ্ন ও তাদের আস্থা কমছে। তিনি ডানপন্থীদের প্রতি মানুষের ঝোঁকের জন্য আংশিকভাবে চ্যান্সেলর শলৎজের নীতিকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, শলৎজের নেতৃত্বাধীন তিন দলের জোটকে তাদের নীতি বদলাতে হবে।
বিডিএ প্রেসিডেন্ট বার্তা সংস্থা ডিপিএকে বলেছেন, এই দুই রাজ্যে নির্বাচনের ফলাফল জোট সরকারের প্রতি সতর্কবার্তা। সরকারকে চাকরি ও সামাজিক সংহতির বিষয়টি সব সময় মাথায় রাখতে হবে।
নির্বাচনের পর কিছু অর্থনীতিবিদ বলেছেন, পূর্ব জার্মানিতে দক্ষ শ্রমিকদের বিপুল অভাব রয়েছে। তার ওপর বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অনেক কোম্পানি সেখান থেকে চলে যেতে পারে।
জার্মান কাউন্সিল অব ইকোনমিক এক্সপার্টের চেয়ারম্যান মনিকা স্নিৎজার বলেছেন, থুরিঙ্গিয়া ও সাক্সনিভিত্তিক সংস্থাগুলো দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শ্রমিক না পেয়ে অসুবিধায় পড়তে পারে। সরকারি সংস্থা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনই কর্মী–সংকটে ভুগছে। এটা আরও বাড়তে পারে। বিশেষ করে দক্ষ শ্রমিক নিয়ে এএফডির অবস্থানের পর।
জার্মান ইনস্টিটিউট অব ইকোনমিক রিসার্চের প্রেসিডেন্ট মার্সেল ফ্রাটশারও বলেছেন, বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে তিনি চিন্তিত। তিনি বলেছেন, এএফডি বাণিজ্যিক সুরক্ষা, অভিবাসন কমানোর নীতি নিয়ে চলতে চায়। এতে অনেক কোম্পানি চলে যেতে পারে। দক্ষ শ্রমিকেরা পূর্ব জার্মানির প্রতি উৎসাহ হারাতে পারেন। এর প্রভাব ওখানকার অর্থনীতিতে পড়বে। তরুণ ও দক্ষ নাগরিকেরা ওই দুই রাজ্য ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে পারেন, যেখানে তাঁদের কদর বেশি হবে।
No comments