পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কারাগার গাজা

ইসরাইল ফিলিস্তিনের গাজা অবরোধ করার পর থেকে গত ১২ বছরে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। উপকূলীয় এ ছিটমহলের মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ তথ্য দিয়েছে। সংগঠনগুলোর সমন্বয়ক আহমেদ আল কুর্দ রোববার আলজাজিরাকে বলেন, গত কয়েক দিনে যথাযথ চিকিৎসাসেবা না পাওয়ায় পাঁচটি নবজাতক মারা গেছে। ২০০৬ সালে ফিলিস্তিনের পার্লামেন্টে হামাস বিজয়ী হলে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইসরাইল ফিলিস্তিনে অর্থনৈতিক অবরোধ দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, অবরোধের কারণে যেসব ফিলিস্তিনি মারা গেছে, তার মধ্যে সাড়ে চারশ’ মারা গেছে শুধু চিকিৎসাসেবার সংকটের কারণে। যেমন- যথাযথ চিকিৎসা সরঞ্জাম না থাকা বা চিকিৎসাসেবা নিতে গাজার বাইরে যেতে না পারা। অবরোধের কারণে গাজাবাসী প্রতিনিয়ত ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। কারণ অবরোধের কারণে সেখানে পানি ও বিদ্যুৎ সংকট, ওষুধ ও চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। এমনকি চিকিৎসকরা চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে অপারেশন পর্যন্ত করতে পারেন না। কুর্দ বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার করতে গিয়ে অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যেমন, মোমবাতি, কাঠ কিংবা জেনারেটর ব্যবহারের কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এসব লোক প্রাণ হারায়। তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া ৩৫০ ফিলিস্তিনি কৃষিকাজ করতে গিয়ে বা মাছ ধরতে গিয়ে অথবা বাণিজ্যিক টানেলে কাজ করতে গিয়ে মারা গেছেন। রোববার ইসরাইলি নৌ-সেনাদের গুলিতে এক ফিলিস্তিনি জেলের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন দু’জন। অথচ তারা ফিলিস্তিনি সীমান্তেই মাছ ধরছিলেন। কিন্তু ইসরাইল বলছে, তারা সীমান্ত লঙ্ঘন করায় গুলি চালানো হয়েছে। আহমেদ আল কুর্দ বলেন, ২০ লাখ লোকের বসবাসের স্থান গাজা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কারাগার। স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, পরিবেশ, সমাজ কিংবা জ্বালানি যেদিক থেকেই চিন্তা করেন, গাজা একটি বিপর্যয়কর এলাকা।

No comments

Powered by Blogger.