‘ঘরে বসে রাজনীতি হয় না, তা কাদেরকে কীভাবে শেখাবো’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে রাজনীতি শেখাতে না পারার ব্যর্থতার দায় নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমেদ। তিনি  বলেছেন, ঘরের মধ্যে থেকে বা অফিসে বসে রাজনীতি হয় না তা তাঁকে (ওবায়দুল কাদের) কীভাবে শেখাব। তাঁকে শেখাতে না পারার ব্যর্থতা আমারই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন- বিএনপিকে ঘরের মধ্যে রাজনীতি করতে। সে হয়তো জানে না রাজনীতি সব জায়গাতে হয়। সে আমার ছাত্র ছিল।
আমি হয়তো তাকে শিখাতে পারিনি। তাই এ মুহূর্তে তার কথা শুনে থাকাই ভালো। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যতই বলুক কাউকে ভোটে আনার দায়িত্ব সরকারের নয়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরপেক্ষতা ও সবার অংশগ্রহণের পরিবেশ প্রধানমন্ত্রীকেই তৈরি করতে হবে। আর এটা না করে নির্বাচন ব্যবস্থায় যাওয়া যাবে না। বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ঢাবির সাবেক এ ভিসি বলেন, এখন আর কারো জেলে যাওয়ার দরকার নেই। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। কোনো সংঘাতে জড়ানো যাবে না। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলন আয়োজিত ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও সংকটে আগামী জাতীয় নির্বাচন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেন, আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি  রেখে সুপরিকল্পিতভাবে ও কৌশলে এগুচ্ছে। তা বিএনপি না বুঝলেও আমরা বুঝি। শুধু তাই নয়, সরকারের মন্ত্রী এমপিদের কথাবার্তা শুনেও স্পষ্ট বুঝতে পারছি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সহজে মুক্তি দেয়া হবে না। খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই। খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ  অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এলডিপি সভাপতি বলেন, এক এগারোর সেনা সমর্থিত সরকারের সময় অনেক রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে এ মামলা হয়েছে। বর্তমান সরকারের অনেক নেতার বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক বিবেচনায় তাদের মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলাগুলো চালু রেখে হয়রানি করা হচ্ছে, সাজা দেয়া হচ্ছে। সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়েও বর্তমান সরকারে অনেক মন্ত্রী এমপি স্বপদে বহাল আছেন। তাদের কারাগারে যেতে হয়নি। কিন্তু খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে নির্জন কারাগারে পাঠানো হয়েছে। খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে। এলডিপি সভাপতি বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে বিএনপি ও ২০ দল নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা? কারণ এখন ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলে আন্দোলন সফল হবে না। বর্তমান সরকার সহজে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেবে না। খালেদা জিয়ার নির্জন কারাগারে থেকে হয়তো  মৃত্যুও হতে পারে। সেই বিষয়গুলো চিন্তা করে বিএনপিকে পরিকল্পিতভাবে সামনের দিকে এগুতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনও স্বাভাবিক পন্থায় ক্ষমতায় আসেনি। তারা কখনও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আবার কখনও লগি বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় এসেছে। তাদের তখন দমন করা কঠিন ছিল না। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে এলডিপি প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ যেভাবে অবরোধ হরতাল করে ক্ষমতায় এসেছে আমরা সেভাবে রাজনীতি করতে চাই না। আমা?দের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার আদায় করতে হবে। কোনো সংঘাতে জড়িয়ে আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে চাই না। বিএনপি চেয়ারপারসনের কারামুক্তির বিষয়ে অলি আহমদ বলেন, সরকারের আচরণ দেখে মনে হয় না খালেদা জিয়াকে সহজে মুক্তি দেবে। কিন্তু বিএনপির কিছু কিছু নেতা বলেন আজ, কাল খালেদা জিয়ার জামিন হয়ে যাবে। কিন্তু তারা কিসের ভিত্তিতে বলেন সেটা তারাই ভালো জানেন। যেখা?নে সরকার এই-সেই ক?রে জনগণ?কে বু?ঝি?য়ে দি?চ্ছে। তাই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা আমাদের জন্য এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
সংগঠনের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য দেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ও এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.