টাঙ্গাইলে তিন বাড়ি থেকে ৯৯টি গোখরা সাপ উদ্ধার

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার দুটি বাড়ি থেকে ৭৩টি ও সখীপুর উপজেলার একটি বাড়ি থেকে ২৬টি গোখরা সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে কালিহাতী উপজেলার সল্লা ইউনিয়নের দেউপুর গ্রামের মোখলেছুর রহমানের বাড়ি থেকে ৪৬টি ও এলেঙ্গা পৌরসভার মসিন্দা গ্রামের শাহজাহান সিকদারের বাড়ি থেকে ২৬টি গোখরা সাপ ধরে মেরে ফেলা হয়। সাপগুলোর মধ্যে একটি বড় সাপ আর বাকিগুলো বাচ্চা। বাড়ির মালিক মোখলেসুর রহমান জানান, সোমবার ভোরে তার স্ত্রী রান্নাঘরে গেলে তার পায়ে কিছু একটা এসে ধাক্কা দেয়। তখন তিনি লাইট জ্বালিয়ে একটি গোখরা সাপের বাচ্চা দেখে চিৎকার দেয়। পরে তাৎক্ষনিক বাচ্চাটি মেরে ফেলা হয়। রান্নাঘর থেকে বের হয়ে উঠানে এসে আরো চারটি সাপের বাচ্চা দেখতে পায়। এভাবে ২৪টি সাপের বাচ্চা লাঠি দিয়ে মেরে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। পরে খবর পেয়ে এক সাপুড়ে এসে থাকার ঘর থেকে মাটি খুঁড়ে আটটি এবং রান্নাঘর থেকে আরো ১টি সাপের বাচ্চা ধরেন। পরে সাপুড়ে ২২টি সাপের বাচ্চা জীবিত নিয়ে যান। তবে বড় সাপটি এখনো ধরা না পড়ায় বাড়ির লোকজনসহ এলাকাবাসী আতঙ্কে রয়েছে। অপরদিকে মসিন্দা গ্রামের শাহজাহান সিকদারের বাড়ির ভাড়াটিয়া হোমিও ডাক্তার দুলাল হোসেন জানান, গত ২ জুলাই শাহজাহান সিকদারের থাকার ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে পুরাতন সুটকেসের ভেতরে একটি বড় গোখরা সাপ দেখতে পান। তখন সাপটি পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়।
সাপটির দৈর্ঘ্য সাড়ে চার হাত। পরে গত রোববার সকালে টিনের ঘরে ইঁদুরের গর্ত থেকে দুটি গোখরা সাপের বাচ্চা বের হলে তা মেরে ফেলা হয়। তখন ঘরে আরো সাপ থাকতে পারে ভেবে উপজেলার কস্তুরীপাড়া এলাকার বায়েজীদ হোসেন নামে এক সাপুড়েকে খবর দেয়া হয়। ওইদিন বিকালে সাপুড়ে এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘরের পাকা বারান্দা ভেঙে ইঁদুরের গর্ত থেকে ২১টি গোখরা সাপের বাচ্চা বের করে। একইভাবে সোমবার বিকালে আরো তিনটি সাপের বাচ্চা ধরা হয়। বাচ্চাগুলো লম্বায় এক থেকে দেড় ফুট।’ জীবিত ২৪টি বাচ্চাই সাপুড়ে বায়েজীদ নিয়ে যান। সাপুড়ে বায়েজীদ জানান, বিষধর গোখরা সাপের বাচ্চা কাউকে কামড়ালে মারাত্মক কিছু হতে পারে। সাবধান থাকা খুবই জরুরি বলে মনে করছেন তিনি। একইদিন বিকালে সখীপুর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের প্রবাসী আশরাফ আলীর বাড়ির রান্নাঘর থেকে ২৬ গোখরা সাপ পাওয়া যায়। পরে ওই সাপগুলো স্থানীয়রা এক এক করে মেরে ফেলে। ওই এলাকার ইসমাইল হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতই সোমবার বিকালে আশরাফ আলীর স্ত্রী রান্না ঘরের সামনে কবুতরের খাঁচায় খাদ্য দিতে যায়। এ সময় আশরাফের স্ত্রী কবুতরের খাঁচার উপর একটি গোখরা সাপ দেখতে পেয়ে চিৎকার দেয়। পরে বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে সাপটি মেরে ফেলে। এ সময় ওই রান্নাঘরের মেঝের গর্ত খুঁড়ে একে একে আরও ২৫টি বিষাক্ত গোখরা সাপের বাচ্চা বের করে মেরে ফেলা হয়। এ ঘটনার পর থেকে বাড়িতে লোকজন আতঙ্কে রয়েছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিষাক্ত গোখরা সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.