ব্রিটেনে নির্বাচন ও রাজনীতিতে ‘অভিবাসন’ ইস্যু

মাত্র ন’বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গিয়েছিলেন ক্যামিলা স্কোফিল্ড। মিসৌরির যে এলাকায় তিনি থাকতেন সেটা বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীতে বিভক্ত ছিল। ফলে জাতিগত রাজনীতির কথা সব সময়ই তার মনে ছিল। তারপর কোনো এক সময় তিনি ব্রিটেনে ফিরে আসেন। পেশা হিসেবে বেছে নেন গবেষণাকর্ম। কারণ সে সময় এ বিষয়টি নিয়ে খুব একটা লেখালেখি হয়নি। এখন তিনি ইস্ট এংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এক মুহূর্তের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ১৯৪০-এর দশকের শেষদিকে অভিবাসন নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়। তখনকার সবচেয়ে বিখ্যাত ঘটনা ছিল- উইন্ডরাশ এম্পায়ার নামের একটি জাহাজে করে জ্যামাইকা থেকে পাঁচশ’র মতো শ্রমিকের ব্রিটেনে আসা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিধ্বস্ত ব্রিটেনে তখন শ্রমিকের অভাব ছিল। সেই শূন্যতা পূরণ করতে ব্রিটিশ সরকার তখন যেসব দেশে তাদের উপনিবেশ ছিল, সেখান থেকে লোকজনকে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাল। শুরু হয়েছিল অল্পকিছু লোকজনের আসার মধ্য দিয়ে। কিন্তু পঞ্চাশের দশকের শেষদিকে আসতে লাগল হাজার হাজার শ্রমিক। এর প্রথম বড় রকমের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ছিল ১৯৫৮ সালের নটিং হিল দাঙ্গার ঘটনা। সেই দাঙ্গা থামাতে পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছিল।
ওই ঘটনা ছিল এক শ্বেতাঙ্গ নারীকে কেন্দ্র করে। আফ্রো-ক্যারিবিয়ান এক পুরুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। তাদের ওপর হামলা হল একটি পানশালার বাইরে। সেখান থেকে কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর একের পর এক হামলার সূত্রপাত হল। এ আক্রমণের জন্য শ্বেতাঙ্গ গ্যাংগুলোকে তখন কঠোর সাজা দেয়া হয়। সারা বিশ্বেই তখন যুক্তরাজ্যের উপনিবেশ ছিল। এরকম অনেক দেশ এক এক করে স্বাধীন হচ্ছিল। আর ব্রিটেন তখন নিজেকে নবগঠিত কমনওয়েলথের প্রধান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। সদ্য স্বাধীন নতুন এ দেশগুলোর সঙ্গে ব্রিটেনের যে টানাপোড়েনের সম্পর্ক তার সঙ্গে জড়িত ছিল দেশটির অভিবাসন নীতি। কমনওয়েলথ দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখার একটা আকাক্সক্ষাও ছিল তাদের। ফলে বিদেশিরাও তখন প্রচুর সংখ্যায় আসতে থাকল। ১৯৬৮ সালের ২০ এপ্রিল। প্রখ্যাত ব্রিটিশ রাজনীতিক ইনোক পাওয়েল বার্মিংহামে কনসারভেটিভ পার্টি অ্যাসোসিয়েশনে এক ভাষণ দেন। তিনি জানতেন তার বক্তব্য উত্তেজনার সৃষ্টি করবে। সেদিন তিনি বলেন, বছরে ৫০ হাজারের মতো মানুষ যারা অন্যের ওপর নির্ভরশীল, তাদের আসার অনুমতি দেয়া হলে দেশ হিসেবে আমরা তো পাগল, আক্ষরিকভাবেই উন্মাদ হয়ে যাব। মনে হচ্ছে, দেশটি তার নিজের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য চিতা সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।" মি. পাওয়েল এস্টাবলিশমেন্ট বা ক্ষমতা-কাঠামোর অংশ ছিলেন। তার এ ভাষণকে দেখা হল এমন এক মুহূর্ত হিসেবে, যখন ক্ষমতাধরদের একজন এ রকম সস্তা জনপ্রিয়তা লাভের ভাষায় কথা বললেন। ব্রিটিশ রাজনীতিতে এর বড় রকমের এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ল। তখন অভিবাসনের মতো ইস্যুর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হল জাতিগোষ্ঠীর মতো বিষয়। অর্থাৎ অভিবাসনের বিষয়ে কথা বলা বর্ণবাদী বক্তব্যের মতো শোনাতে লাগল। তখন অভিবাসী বলতে বোঝাত শুধু সংখ্যালঘু কৃষ্ণাঙ্গদের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দীর্ঘ এক ছায়া পড়ল এর ওপর। জাতিগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্য, শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদ- এর সবই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত। তখন এমন এক ক্ষমতা-কাঠামো ছিল, যারা এ ধরনের রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চাইত। ইনোক পাওয়েল বর্ণবাদী বক্তব্য দেয়ার একদিন পরই তাকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।
কিছু পরিবর্তন আনা হয় আইনে। লোকজন যাতে অবাধে আসতে না পারেন সেজন্য আরোপ করা হয় বিধিনিষেধ। কিন্তু মূলধারার রাজনীতিকরা তখনও অভিবাসনকে রাজনীতির ইস্যু করেননি। কারণ তারা ভয়ে ছিলেন। তারা মনে করতেন, অভিবাসন নিয়ে রাজনীতি করা হলে খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে এবং তারা নিজেরাও বর্ণবাদী হিসেবে চিহ্নিত হতে পারেন। ইনোক পাওয়েল যা চেয়েছিলেন তার বক্তব্যের প্রভাব হল ঠিক উল্টো। মি. পাওয়েল চেয়েছিলেন এটা নিয়ে কথাবার্তা হোক। ঠেকানো হোক অভিবাসীদের। কিন্তু তার বক্তব্যের পর অভিবাসন ইস্যু চলে গেল রাজনৈতিক এজেন্ডার বাইরে। লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিম বেইল রাজনীতি ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, আপনি যখন রাজনীতিকদের সঙ্গে কথা বলবেন, তখন বুঝতে পারবেন এটি খুব স্পর্শকাতর বিষয়। দেখবেন অনেকেই এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে খুব সতর্ক থাকেন। নিজেদের বাঁচিয়ে কথা বলেন।" সত্তরের দশকে রাজনীতিকরা অভিবাসনের মতো বিষয় এড়িয়ে চলতে লাগলেন। ইনোক পাওয়েলের ভাষণের ১০ বছর পর আরও একজন প্রখ্যাত রাজনীতিক এ বিষয়ে আবার মুখ খুললেন। তিনি কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা মার্গারেট থ্যাচার। ১৯৭৯ সালে, নির্বাচনের আগে টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, লোকজন ভীত হয়ে পড়েছে যে, এ দেশটি ভিন্ন সংস্কৃতির লোকজনে প্লাবিত হয়ে যেতে পারে। ফলে আপনি যদি বিভিন্ন জাতির মধ্যে সুসম্পর্ক চান, তাহলে এ ধরনের লোকের সংখ্যার ব্যাপারে মানুষের ভয় কমাতে হবে।" যেসব ভোটার অতি দক্ষিণপন্থী রাজনীতির দিকে তাকিয়েছিলেন, এই বক্তব্য দিয়ে মার্গারেট থ্যাচার তাদের মন জয় করার চেষ্টা করলেন। তিনি চেষ্টা করেছিলেন ইনোক পাওয়েলের বিদ্বেষপূর্ণ সুর এড়াতে।
কিন্তু তিনিও বিভাজনের সৃষ্টি করেন এবং সমালোচিত হন। কেউ বললেন, মার্গারেট থ্যাচারের বক্তব্য বর্ণবাদী। কেউ কেউ তার কথার সঙ্গে একমত হলেন। আবার কেউ বললেন, তিনি বর্ণবাদী ভাষায় কথা বলছেন। সমালোচনার মুখে পড়ে মার্গারেট থ্যাচার তখন অভিবাসন ইস্যুটি ত্যাগ করেন। তখন রাজনীতি থেকেও বিষয়টি উধাও হয়ে যায়। তারপর ১৯৯৭ সালে সরকারের পরিবর্তন ঘটল। তখনও রাজনীতিকদের অভিবাসন বিষয়ে বেশি কিছু বলতে শোনা যায়নি। ইতিমধ্যে অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটেছে। প্রথমত, যুদ্ধকবলিত বিভিন্ন দেশ থেকে ব্রিটেনে আসা আশ্রয়প্রাার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ঠিক তারপরই ঘটল বড় একটা ঘটনা। ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিল আরও ১০টি দেশ। তারাও পেল ইউনিয়নের যে কোনো দেশে বসবাস ও কাজ করার অধিকার। সরকার থেকে বলা হল, হয়তো সামান্য কয়েক হাজার লোক যুক্তরাজ্যে চলে আসবে। কিন্তু মাত্র এক বছরেই পোল্যান্ড থেকে এলো ১৭ হাজার, লিথুয়ানিয়া থেকে ১০ হাজার, ৭ হাজার এলো স্লোভাকিয়া থেকে। সব মিলিয়ে ৫০ হাজার। এবং তারা আসতেই থাকল। সরকার তখন সত্যি সত্যি বুঝতে পারল লোকজনের কাছে যুক্তরাজ্য কত জনপ্রিয় এক গন্তব্য হতে পারে। বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতা মাইকেল হাওয়ার্ড অভিবাসনকে ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তারা মনে করলেন, এ বিষয়ে তাদের দল আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় জোরে কথা বলতে পারে। ২০০৫ সালের নির্বাচনে একটি পোস্টার ছাড়া হল, যার মূল বক্তব্য ছিল- অভিবাসন নিয়ে কথা বলা বর্ণবাদী কিছু নয়। আমরা যা ভাবছি আপনিও কি সেটা ভাবছেন? বামপন্থী রাজনীতিকরা এই পোস্টারের তীব্র সমালোচনা করলেন। নির্বাচনে কনসারভেটিভ পার্টি জিততে পারল না ঠিকই; কিন্তু তাদের ভোট বাড়ল।
তারা পরীক্ষা করে দেখল, বিষয়টি আগের মতো আর ততোটা বিষাক্ত নয়। প্রচুর সংখ্যায় শ্বেতাঙ্গ ইউরোপিয়ান ব্রিটেনে চলে এলো। এর ফলে রাজনীতিকদের জন্য এ বিষয়ে কথা বলা অনেক সহজ হয়ে পড়ল। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগ উঠল না। কনসারভেটিভ দলের নতুন নেতা নির্বাচিত হলেন ডেভিড ক্যামেরন। তিনি বুঝতে পারলেন, অভিবাসন বিষয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে দ্বিধা ঝেড়ে ফেলার এখনই সময়। মার্গারেট থ্যাচারের বক্তব্যের সঙ্গে তিনিও একমত কিনা জানতে চাইলে মি. ক্যামেরন বললেন, আমি ঠিক ওই ভাষা ব্যবহার করব না। তবে আমি মনে করি, যে হারে অভিবাসী আসছে তাতে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। ভিন্ন সংস্কৃতি বা ভিন্ন গাত্রবর্ণের লোকেরা আসছে বলে এই উদ্বেগ নয়। আমি মনে করি, মানুষের উদ্বেগ তারা যেসব সেবা পাচ্ছে তা নিয়ে। এর ফলে স্কুল, হাসপাতাল ও আবাসনের ওপর চাপ বাড়ছে। ক্যামেরন শেষ পর্যন্ত অভিবাসনের বিষয়ে রাজনীতিকদের নীরবতা ভেঙে দিলেন। উদারপন্থী সংবাদ মাধ্যমগুলোও তাকে প্রশংসা করল। বিরোধীরা রইল চুপ করে। বরং তারাও একই সুরে কথা বলল। প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসন নীতিমালা আরও কঠোর করলেন। তখন তার মুখে নতুন স্লোগান শোনা গেল- ব্রিটিশদের জন্যই ব্রিটিশ চাকরি। অভিবাসন প্রসঙ্গ উঠে এলো রাজনীতির এজেন্ডায়। সংকোচ কেটে গেল। মুখ খুলে গেল ব্রিটিশ রাজনীতিকদের। জনগণের দিক থেকে চাপের মুখে পড়ল তারা।
ক্যামেরন ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বিবিসিকে বলেছিলেন, নেট অভিবাসীর সংখ্যা আমরা কয়েক হাজার দেখতে চাই, কয়েক লাখ নয়। তাদের সংখ্যা কত হবে তার ওপর আমরা প্রতি বছরই একটা সীমা বেঁধে দেই। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক রবার্ট ফোর্ড অভিবাসনের রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি বলছিলেন, গত ২০ বছরের অভিবাসন বিতর্কে এটাই ছিল সম্ভবত সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত। কারণ ক্যামেরন বললেন, অভিবাসীর সংখ্যা এক লাখের নিচে নামিয়ে আনতে হবে। নেট মাইগ্রেশনের অর্থ হচ্ছে কত লোক আসছে এবং কত লোক চলে যাচ্ছে তার হিসাব করে বের করা যে, কত লোক শেষ পর্যন্ত থেকে গেছে। আমরা ঠিক জানি না গ্রস মাইগ্রেশনের কথা না বলে তারা কেন নেট মাইগ্রেশনের কথা বললেন। কত লোক ব্রিটেন ছেড়ে চলে যাচ্ছে তা কিন্তু ভোটাররা দেখতে পায় না। কত লোক আসছে সেটাই শুধু তারা দেখতে পায়।" অভিবাসনের বিষয়ে বলতে গিয়ে তখন নানা ধরনের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হল। বলা হল কী এর অর্থনৈতিক লাভ ও ক্ষতি। পুরো বিতর্কটাই যেন হয়ে উঠল অ্যাকাউন্টিংয়ের একটা হিসাবের মতো। এর ভেতর থেকে আবেগের মতো বিষয় ছুড়ে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করা হল।" সমস্যা হল, অভিবাসীদের ঠেকানোর জন্য সরকারের হাতে কোনো উপায় ছিল না। ইতিমধ্যে ইইউর সদস্য সংখ্যা আরও বেড়ে গেল। তখন রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া থেকে মানুষের আসার ওপর সাময়িক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হল। কিন্তু সেটাও তুলে নেয়া হল ২০১৪ সালে। সেসময় এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল যে, নতুন একটা রাজনৈতিক দলের জন্য সুযোগ সৃষ্টি হল। ওই দলটির নাম ইউনাইটেড কিংডম ইন্ডিপেন্ডেন্স পার্টি, সংক্ষেপে ইউকিপ। এ দলটি নব্বইয়ের দশক থেকেই ব্রিটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের করে আনার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে। তখনও তারা জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেনি। ফোর্ড বলেন, ইউকিপের ওপর আমি যখন বই লিখছিলাম তখন ওই দলের প্রধানের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, গত ১৫ বছর ধরে আমি ভোটারদের বোঝাতে চেষ্টা করছি, ইইউ থেকে বেরিয়ে আসা ছাড়া তারা অভিবাসন সমস্যার সমাধান দিতে পারবে না। তবে ক্যামেরনের প্রতিশ্রুতির পর এ বিষয়ে ভোটারদের বোঝাতে আমাকে আর চেষ্টা করতে হয়নি।
তারাই এর উপসংহার টেনে নিয়েছে।" তারপরই তাদের প্রতি সমর্থন বাড়তে লাগল। ব্রিটেনের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল ইউকিপ। ইতিমধ্যে অভিবাসনও হয়ে উঠল রাজনীতির কেন্দ্রীয় ইস্যুগুলোর অন্যতম। আর তখনই ব্রেক্সিট গণভোটে ভোটাররা ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে রায় দিল। ৫২ শতাংশ ভোটার ভোট দিলেন ত্যাগের পক্ষে আর থেকে যাওয়ার পক্ষে ৪৮ শতাংশ। বলা হল, এ এক ব্যতিক্রমী মুহূর্ত। এ সিদ্ধান্তের ফলে এখন সবকিছুই বদলে যেতে শুরু করবে। ভোটারদের এ সিদ্ধান্তের পেছনে বড় ভূমিকা ছিল অভিবাসন নীতির, যার পক্ষে জোর প্রচারণা চালিয়েছে ইউকিপ। রবার্ট ফোর্ড বলেন, এটা হল বাঘের পিঠের ওপর বসে থাকার মতো। আপনি বাঘটিকে একদিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, যে দিকটা অনেক বেশি যৌক্তিক, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে বাঘটি সেদিকেই যেতে চাইবে।" রাজনৈতিক বিতর্কে অভিবাসন নিয়ে এখনও রাজনীতিকরা খোলামেলা আলোচনা করেন না। তারা এর অর্থনৈতিক দিক নিয়ে কথা বলেন ঠিকই, কিন্তু এর সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক মতপার্থক্যের মতো বিষয়ে কিছু বলেন না। কারণ তারা এ নিয়ে কথা বলতে ভয় পান।
বিবিসির সৌজন্যে
রুথ আলেকজান্ডার : বিবিসির সাংবাদিক

No comments

Powered by Blogger.