ঢাকায় জাতিসংঘ দিবসের অনুষ্ঠান বাতিল by মিজানুর রহমান

নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে ঢাকায় জাতিসংঘ দিবসের পূর্ব-নির্ধারিত কূটনৈতিক পার্টি বাতিল করা হয়েছে। আগামী ২৫শে অক্টোবর সন্ধ্যায় গুলশানের লেক শো’র হোটেলে অনুষ্ঠানটি আয়োজনের প্রস্তুতি ছিল। একাধিক কূটনৈতিক সূত্র মানবজমিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানিয়েছে, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তর থেকে অনুষ্ঠান বাতিলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে গতকালই হোটেলে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আয়োজকদের তরফে হেটেলের ব্যাঙ্কুইট হলটির বুকিং তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল এবং অন্যান্য প্রস্তুতি স্থগিত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গত ২৮শে সেপ্টেম্বর কূটনৈতিক জোন গুলশানে ইতালির এক এনজিও কর্মকর্তা এবং ৩রা অক্টোবরে রংপুরে এক জাপানি নাগরিককে গুলি করে হত্যার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে থাকা বিদেশী নাগরিক ও কূটনীতিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দূতবাসগুলো তাদের কর্মীদের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের নোটিশ জারি করেছে। তাদের অনেক অনুষ্ঠান বাতিলসহ পরিস্থিতির কারণে নতুন অনুষ্ঠান আয়োজন কমিয়ে দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর ঢাকা অফিস তাদের অধীন সব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের রংপুরে যেতে বারণ করেছে। জাপান ও স্পেন তাদের অনেক আতঙ্কিত কর্মী ও সেচ্ছাসেবীকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। দুই বিদেশী নাগরিক খুনের আগেই বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল অস্ট্রেলিয়া। ইতালি নাগরিক হত্যার পর দেশটি তাদের জাতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর বাতিল করে। উদভূত পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার নারী ক্রিকেট দলের ঢাকা সফরও পিছিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র,  যুক্তরাজ্য, কানাডা অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কোরিয়াসহ পূর্ব ও পশ্চিমের বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণ এবং চলাফেরায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে ট্রাভেল এলার্ট জারি করে। এখানে পশ্চিমাদের টার্গেট করে আরও সন্ত্রাসী হামলার ‘বাস্তব এবং বিশ্বাসযোগ্য তথ্য’ থাকার কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য নিয়মিত তাদের ট্রাভেল এলার্ট আপডেট করছে। এ হামলা ‘নির্বিচারে’ হতে পারে বলে আশঙ্কায় রয়েছে দেশগুলো। এ অবস্থায় বাংলাদেশে বৃটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সফর স্থগিত হয়ে গেছে। পর্যটকদের ভ্রমণও কমে গেছে। তৈরী পোশাকের বিদেশী ক্রেতাদের পূর্ব-নির্ধারিত (বায়ারস ফোরাম) বৈঠকও বাতিল করতে হয়েছে। কূটনীতিকসহ সারা দেশে থাকা বিদেশীদের নিরাপত্তায় সরকারের তরফে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। হত্যা দুটির গ্রহণযোগ্য তদন্তের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও আতঙ্ক এবং উদ্বেগ কাটছে না।

No comments

Powered by Blogger.