লন্ডনে বিচারপতি শামসুদ্দিনের ওপর হামলা by তানজির আহমেদ রাসেল

সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের ওপর আবারও লন্ডনে হামলা চালিয়েছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। বুধবার সন্ধ্যায় লন্ডনের হিথ্রো এয়ারপোর্টে নেমে বাসায় যাওয়ার আগে পূর্ব লন্ডনের ইয়র্ক হলে দুর্গাপূজা পরিদর্শনে যান বিচারপতি শামসুদ্দিন। পরিদর্শন শেষে বাসায় যাবার জন্য গাড়িতে ওঠার সময় হামলার ঘটনা ঘটে। এবার হামলার সময় বিচারপতির মেয়ে তানিয়া চৌধুরী তার সঙ্গে ছিলেন। এর আগে ২০১২ সালের ২৭শে জুন ব্যায়ামাগার থেকে পূর্ব লন্ডনের বিকনট্রি এলাকায় নিজ বাসায় ফেরার পথে হামলার শিকার হন হাইকোর্টের এই বিচারপতি। হামলার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তারা এ ঘটনার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীকে হামলার পাশাপাশি অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে মনে করেন তার মেয়ে নাদিয়া চৌধুরী। তিনি বৃহস্পতিবার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি লিখেছেন তার বাবাও একই ধারণা পোষণ করেন। কারণ, হামলার সময় তাদের সঙ্গে একটি সাদা গাড়ি  ছিল। তারা আব্বুকে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। হামলাকারীদের পরিচয় জানা না গেলেও বিএনপিকে দায়ী করে বিচারপতি শামসুদ্দিনের মেয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, “এই মোটাসোটা চেহারার বখাটে হামলাকারীরা আমার আব্বুকে চেনে না। কোন সন্দেহ নেই, বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনীর নির্দেশনা পেয়েই তারা এসেছিল।” ঘটনার বিবরণ দিয়ে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর মেয়ে নাদিয়া চৌধুরী ফেসবুকে লিখেন ‘বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বাসায় না গিয়ে পূর্ব লন্ডনের ইয়র্ক হলে দুর্গাপূজা পরিদর্শনে যান আব্বু। সেখানে পরিদর্শনের সময় সকলের অনুরোধে আব্বু বক্তব্যও রাখেন। তখন অনেকে আব্বুর সঙ্গে  ছবি তুলেন। অনুষ্ঠানস্থল থেকে বের হয়ে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক বরাদ্দকৃত গাড়িতে ওঠার পথে এই হামলা হয়। নাদিয়া লিখেন “হঠাৎ টের পেলাম এক লোক বাবার গা-ঘেঁষে হাঁটা শুরু করল।  একজন আব্বুর কাছে এসে জানতে চাইলো ‘আপনি  জাস্টিস শামসুদ্দিন চৌধুরী কি না’? “জবাব না দিয়ে আব্বু সরে যাওয়ার চেষ্টা করলে আরও কয়েকজন আমাদের দিকে এগিয়ে এলো এবং আব্বুকে মারতে শুরু করল। ‘অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে আমরা দুজন লোক প্রায় ৩০ সেকেন্ড ধরে সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও আশেপাশের কেউ এগিয়ে আসেনি। এমনকি হাইকমিশনের দুজন লোক হামলা থেকে সরে দাঁড়ায়। যদিও অনুষ্ঠানস্থলে অনেকে আব্বুর সঙ্গে ছবি তুলেছেন”।
ঘটনার একপর্যায়ে বিচারপতি শামসুদ্দিনের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় হামলাকারীরা। তার মেয়ে হামলা ঠেকানোর চেষ্টা করলেও হামলাকারীদের লাথি আর ঘুষিতে একপর্যায়ে রাস্তায় পড়ে যান শামসুদ্দিন চৌধুরী। পরে তিনি দৌড়ে ইয়র্ক হলে ফিরে যান বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। ঘটনার ব্যাপারে বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিকের বক্তব্য জানতে তার লন্ডনের মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
বিএনপিকে জড়িয়ে বিচারপতির মেয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাসের প্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক বলেন, এটা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ। বিএনপি কখনও এ ধরনের হামলায় বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেকে তার ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কি কারণে হামলা হয়েছে তা পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসবে।

No comments

Powered by Blogger.