নাটোরে মন্দিরের দূর্গাসহ ছয়টি প্রতিমা ভাংচুর ॥ বিক্ষোভে উত্তাল গুরুদাসপুর by মোঃ শহীদুল হক সরকার

নাটোরের গুদাসপুরের কাচারীপাড়া কালি মন্দিরে গতরাত দুইটার দিকে পাহারারত একমাত্র আনসার সদস্যকে মারপিট করে মন্দিরের দূর্গাসহ ছয়টি প্রতিমা ভাংচুর করেছে মুখোসপরা অজ্ঞাত পাঁচ সন্ত্রাসী। এই ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবীতে শুক্রবার সকাল থেকে এলাকার হাজার হাজার হিন্দু নারী-পুরুষ ও শিশু লাঠি হাতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা গুরুদাসপুর ও চাঁচকৈড় বাজারের প্রতিটি রাস্তার মোড়ে মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে এবং গাছ ফেলে রাস্তা বন্ধ করে দেয়। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হাজার হাজার হিন্দু নারী-পুরুষ ও শিশু লাঠি হাতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গিয়ে গুরুদাসপুর থানা ঘেরাও করে। এ সময় কিছু হিন্দু ধর্মীয় নেতা বিক্ষোভকারীদের থানায় প্রবেশ করতে বাঁধা দিলে তারা লাঠি হাতে থানার গেটের সামনে অবস্থান নেয়। ঘটনার সময় পুলিশ থানার বাহিরের ও ভিতরের সব গেট ও দরজা বন্ধ করে ভিতরে অবস্থান নেয়।
বিক্ষোভকারীরা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে পাহারারত আনসার সদস্য মোঃ রজিব প্রামানিককে মারপিট করে মন্দিরের দূর্গাসহ ছয়টি প্রতিমা ভাংচুর করেছে অজ্ঞাত কয়েক সন্ত্রাসী। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন বন্ধ করবেন না এবং রাস্তা থেকে অবরোধ তুলবেন না।
এদিকে দায়ীদের আটক ও আন্দোলন থামাতে সকাল ৯টার দিকে চাঁচকৈড় হরিবাসরে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের মধ্যস্ততায় হিন্দু ধর্মীয় নেতাদের নিয়ে জরুরী সভা শুরু হয়। নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্সি শাহাবুদ্দীন ও গুরুদাসপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ এবং পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ মোল্লা বৈঠকে বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা শুরু করেন। সুরাহা না হওয়ায় পরে নাটোরের জেলা প্রশাসক মোঃ মশিউর রহমান ও পুলিশ সুপার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গুরুদাসপুরে যান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই রিপোর্ট লেখার সময় সেখানে তাদের উপস্থিতিতে সভা চলছে।
প্রাথমিক ভাবে থানা পুলিশ ধারনা করলে বৃহস্পতিবার বিকেলে এই মন্দিরে একটি ইভটিজিংএর ঘটনা ঘটেছিল। তার জের ধরেই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে এ ব্যাপারে তাৎক্ষনিক বিস্তারিত জানা যায়নি।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় সাধারণ মন্ডপে ২ জন করে মহিলা ও পুরুষ আনসার সদস্য, গুরুত্বপূণ মন্ডপে ২ জন মহিলা ও ৪ জন আনসার সদস্য এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ মন্ডপে ২ জন মহিলা ও ৬ জন পুরুষ আনসার সদস্যের পাশাপাশি ১ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও এই মন্দিরে ঘটনার সময় কেন মাত্র একজন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছিলেন তা রহস্যজনক।

No comments

Powered by Blogger.