হোসনী দালানে বোমা বিস্ফোরণে নিহত ১, আহত শতাধিক

রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসনী দালানের সামনে পরপর তিনটি হাত বোমা বিস্ফোরণে সাজ্জাদ হোসেন সানজু (১৬) নামে এব যুবক নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শুক্রবার রাত ২টার দিকে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে হাতে তৈরি বোমার এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন একজনকে আটক করেছে। তবে তাৎক্ষণিক তার নাম-পরিচয় জানানো হয়নি। এছাড়া অবিস্ফোরিত অবস্থায় একটি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা ডিএমপি পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামন মিয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তাজিয়া মিছিলে বিস্ফোরণের এই ঘটনা কোন জঙ্গি হামলা নয়, এটি পরিকল্পিত নাশকতা।
অপর দিকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা ইব্রাহিম মোল্লাকে ছুৃরিকাঘাতে হত্যা ও শিয়াদের শোভাযাত্রায় বোমা হামলা একই সূত্রে গাঁথা। তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরাই এ হামলাগুলোর সঙ্গে জড়িত।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপতাল সূত্র জানায়, বোমায় আহতদের মধ্যে ৬৩ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এছড়া গুরুতর আহতরা হলেন- আবদুর রহিম (৩০), নাঈম হোসেন (৩৫), লাবনী আকতার (১৪), আয়শা আকতার (১২), সালাউদ্দিন (৪৫), তুহিন (১২), সুদীপ (২১), মাহবুবুর রহমান (২৬), রাকিব হোসেন (২৬) ও আয়াত উদ্দিন (২৬)। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন ক্লিনিকে আহতদের ২০/২৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় ।
ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি চলাকালে শুক্রবার দিনগত রাত ২টার দিকে পরপর তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে। মিছিল শুরুর আগে নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা হোসেনী দালানের চারপাশ পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে একটি তাজিয়া মিছিল মূল ফটকের ভেতর থেকে দালানের বাইরে বের হচ্ছিল। ঠিক এ সময় পরপর তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ক্যাম্প ইনচার্জ মোজাম্মেল হক জানান, আহতদের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন সানজু নামে এক যুবক রাত ৩টার দিকে মারা যায়। এ ছাড়া ১১ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পিøন্টার বিদ্ধ হয়েছে।
চকবাজার থানার ওসি আবদুল আজিজ বলেন, তাজিয়া মিছিলের জন্য শিয়া মতাবলম্বীরা হোসেনী দালানে সমবেত হলে বিস্ফোরণগুলো ঘটে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শক্তিশালী হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি কোন জঙ্গি হামলা নয়, পরিকল্পিত নাশকতা। ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এদিকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা ইব্রাহিম মোল্লা ও শিয়াদের শোভাযাত্রায় বোমা হামলা একই সূত্রে গাঁথা। তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরাই এ হামলাগুলোর সঙ্গে জড়িত।
শহিদুল হক বলেন, আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য আছে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র নানা নাশকতার মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। এই হামলাগুলো তাদেরই কাজ।

No comments

Powered by Blogger.