পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি এগিয়ে নেবেন না

ওভাল অফিসে নওয়াজ শরিফ ও বারাক ওবামা l রয়টার্স
ঝুঁকি ও অস্থিতিশীলতা বাড়তে পারে, পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ কর্মসূচি সেভাবে এগিয়ে নেওয়া থেকে বিরত থাকতে পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি। পারমাণবিক অস্ত্রে সমৃদ্ধ দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে নওয়াজের প্রতি এই আহ্বান জানালেন ওবামা। খবর রয়টার্সের। হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ওবামা পাকিস্তানকে তার পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার সমৃদ্ধ করা থেকে বিরত থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাঁর মতে, বিষয়টি পারমাণবিক নিরাপত্তা বা কৌশলগত স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকি ডেকে আনতে পারে। বৈঠকের পর দুই নেতা যৌথ বিবৃতিতে বলেন, সব পক্ষকে ধৈর্য ধরে কাজ করতে হবে এবং দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত স্থিতিশীলতার জন্য চেষ্টা করতে হবে। বিবৃতিতে বলা হয়, দুই নেতা আফগান শান্তি-প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার এবং তালেবানকে কাবুলের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানোর অঙ্গীকার করেন। বৈঠকের সময় ওবামা আফগান তালেবানকে শান্তি আলোচনায় ফিরিয়ে আনতে নওয়াজের সহায়তা কামনা করেন। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের জন্য এটা জরুরি।
ওবামার সঙ্গে বৈঠকের পর নওয়াজ শরিফ আফগান শান্তি-প্রক্রিয়া সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন। কিন্তু আমরা চেষ্টা করে যাব।’ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ওবামা জানেন, আফগান যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটাতে একটি রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন। আর এটা করতে পাকিস্তানিদের সহায়তা দরকার।’ দুই নেতার আলোচনায় আটটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের কাছে বিক্রির বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে কি না জানা যায়নি। দুই নেতার যৌথ বিবৃতিতে এ বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি। বিবৃতিতে বলা হয়, ওবামা-নওয়াজ আলোচনায় পারমাণবিক সন্ত্রাসবাদের হুমকি ও ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়। পাকিস্তানের বহুল প্রচারিত ডন পত্রিকার খবরে বলা হয়, দুই নেতার মধ্যে দুই ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠক হয়। এ সময় তাঁরা জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ সব ধরনের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, কৌশলগত স্থিতিশীলতা ও পারমাণবিক নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁরা একমত হন যে গণতন্ত্রের প্রতি পারস্পরিক অঙ্গীকারই ইসলামাবাদ ও ওয়াশিংটনের অংশীদারত্বের প্রধান স্তম্ভ। পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার কাজ অব্যাহত রাখায় নওয়াজের প্রশংসা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ডন-এরখবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগনও সফর করেন নওয়াজ শরিফ।

No comments

Powered by Blogger.