বোমা হামলা নিয়ে তাঁরা যা বললেন

হোসনি দালানে বোমা বিস্ফোরণের পর সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারি দল ও বিএনপির নেতারা এ নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন। বক্তব্যে ঘটনার জন্য কারা দায়ী, এতে কী ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে, সে সম্পর্কে তাঁরা কথা বলেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘এটা একটা লোকাল মেইড বোমা ছিল। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে আমাদের একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য, আমাদের মধ্যে একটা আতঙ্ক তৈরি করার জন্য। আমি মনে করি তারই একটা বহিঃপ্রকাশ এটা হয়েছে। এই ধরনের টেরোরিস্ট, এই ধরনের জঙ্গিকে কখনোই মাথা উঁচু করে দিতে দেইনি। এখনো আমরা দেব না। যারা এই হুজি, যারা এই জেএমবি, যারা এই আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, যারা এই আল-কায়েদা, সবই এক। সবই এক জায়গারই প্রোডাক্ট।’
র‍্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেছেন, ‘আমরা ওই স্পট থেকে দুটি হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার করি। এটা ইম্প্রোভাইজড আইডি, ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বেসিক্যালি। এটা হাতে তৈরি বোমা, এখানে একটা প্রেসার রিলিজ ছিল এবং একটা সার্কিট ছিল, টাইমার সার্কিট। আপনারা জানেন যে, যেকোনো বোমা তৈরির ক্ষেত্রেই এই টাইমার সার্কিটটা একটা নির্দিষ্ট সময় পরে বাস্ট হয়। হয়তো তিন বা চার সেকেন্ডের একটা গ্যাপ হয়তো বা ছিল। চট্টগ্রামের জঙ্গিদের কাছ থেকে যে রকমের বোমা উদ্ধার করেছি, এবং আমরা এই ধরনের বোমা এই জঙ্গিদের কাছ থেকেও উদ্ধার করেছি।’
পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, ‘দুই দিন আগে আমাদের এক এএসআইকে গাবতলীতে হত্যা করা হইছে। এবং সে হত্যাকারীর সহযোগীকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। এবং সেই হত্যাকারীর তথ্য অনুযায়ী আমরা কামরাঙ্গীরচর থেকে গ্রেপ্তার করলাম, বোমা উদ্ধার করলাম, ককটেল উদ্ধার করলাম। সেই ককটেলগুলোর সাথে গতকাল যে ককটেল তা হুবুহু মিল আছে। যেই গ্রুপটা এএসআইকে হত্যা করেছে, হয়তো আরেকটা গ্রুপ এখানে অবস্থান নিয়েছে। কাজেই ওই সার্বিক নাশকতা কর্মকাণ্ড চালানোর পরিকল্পনার অংশ এরা। এটা লোকাল মেইড এক্সপ্লোসিভ। আমাদের যারা বিশেষজ্ঞ তাঁরা এটা পরীক্ষা করছে। গ্রেনেডে একটা পিন থাকে, পিনটা খুলে যদি এটাকে থ্রো করলে এটা ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে এটা এক্সপ্লোড করে। কাজেই এ জন্য অনেকে হয়তো গ্রেনেড বলতে পারে। এটা হোমমেড একটা বিস্ফোরক। জেএমবির সংশ্লিষ্টতা আমরা এখন পর্যন্ত বলতে পারব না। তদন্ত চলতেছে।’
র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেছেন, ‘এখানে লোকের উপস্থিতি এত বেশি ছিল যে প্রতিটি লোককে চেক করে ঢোকানোর মতো এ রকম পরিবেশ বা পরিস্থিতি ছিল না। যার ফলে এ ঘটনাটি ঘটেছে। হ্যান্ড মেইড যে গ্রেনেডগুলো দেখা গেছে সাইজে ছোট ছিল। এবং এগুলো আনা নিরাপদ এ কারণ, তার সাথে একটা ক্লিপ ছিল। ক্লিপটা না খোলা পর্যন্ত ওইটার বিস্ফোরণ হবে না। তো হয়তো তারা পকেটে করে ওগুলো নিয়ে আসছে। ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে সংগ্রহ করা যায়নি। সংগ্রহ করে আমরা ওইটা দিয়ে শনাক্তকরণের চেষ্টা করছি। দুই তিন দিন যাবৎ ওই লোকটা এখানে ছবি তুলতেছিল। এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে নাকি এখানকার অথরিটিকে বলছিল যে, ছবি তুলতে আমার ভালো লাগে। কিন্তু তারা এই জিনিসটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা আমাদেরকে জানায়নি।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এবং একই সঙ্গে এ ঘটনার জন্য যারা দায়ী সে ব্যাপারে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু তদন্ত করে আমি আবার রিপিট করতে চাই নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু তদন্ত করে অবিলম্বে দুষ্কৃতকারীদের যারা এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন তাদেরকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার আমরা দাবি জানাচ্ছি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘যারা সরকারকে অস্থিতিশীল করতে চায়, যারা সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ঈর্ষাবোধ করে, যারা সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায় তারা এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে মদদ দিতে পারে। তাদের যোগসূত্র থাকতে পারে। সেটা তদন্তের মাধ্যমেই বেরিয়ে আসতে পারে। এবং সেই শক্তি কারা এটা দেশবাসী জানে, আপনারাও জানেন সেটা জামায়াত-বিএনপি।

No comments

Powered by Blogger.