প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাইল হোসনি দালান কর্তৃপক্ষ

পুরান ঢাকার হোসনি দালান ইমামবাড়ায় তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে বোমা হামলার ঘটনাকে ‘ন্যক্কারজনক’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচারের দাবি জানিয়েছে হোসনি দালান ইমামবাড়া কর্তৃপক্ষ। আজ শনিবার গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
আশুরা উপলক্ষে মধ্যরাতে অনুষ্ঠিত শোক মিছিলের প্রাক্কালে এই বোমা হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এ হামলা এ দেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির ওপর বিরাট আঘাত। কারবালার প্রান্তরে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেনের (আ.) সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছিল, এর পুনরাবৃত্তি আজ এই হোসনি দালান ইমামবাড়ায় ঘটেছে।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে হোসনি দালান এলাকায় গভীর রাতে বোমা হামলায় এক কিশোর নিহত হয়েছে। তার নাম সাজ্জাদ হোসেন। আহত হয়েছেন ১০০ জনের বেশি। এঁদের মধ্যে ৫৭ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ১৭ জন মিটফোর্ড হাসপাতালে ও ১৬ জন মগবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলে অংশ নিতে পুরান ঢাকার হোসনি দালানে আসেন নগরের বিভিন্ন এলাকার মানুষ। এঁদের অধিকাংশই শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত। হজরত ইমাম হোসাইনের (রা.) শহীদ হওয়ার দিনকে শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে পালন করে থাকে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রাত দেড়টা থেকে হোসনি দালানের মূল ফটকে একটি তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি চলছিল। মিছিলটি পল্টনে যাওয়ার কথা ছিল। মিছিলে যোগ দিতে এসেছিলেন তরুণ, বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা। এর মধ্যেই রাত পৌনে দুইটার দিকে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। কারও কারও মতে, পরপর ১০-১৫টি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। বিস্ফোরণের পর অনেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। কেউবা দৌড় দিতে গিয়ে পড়ে যান। এ সময় অনেকে তাঁদের মাগিয়ে যান। এ সময় এসব মানুষের চিৎকার ও কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। আশপাশের বাসিন্দারা যে যেভাবে পারেন মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ভ্যান, লেগুনায় করে আহত ব্যক্তিদের ঢাকা মেডিকেল, মিটফোর্ড হাসপাতাল ও আশপাশের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর হোসনি দালান এলাকায় অনেক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

No comments

Powered by Blogger.