স্পিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে শুরু ওয়ানডে লড়াই by ইশতিয়াক পারভেজ

সিরিজ শুরুর আগে স্পিনই ছিল গর্ব। সিরিজ শুরুর পর সেই স্পিনই এখন বাংলাদেশের আতঙ্ক। প্রোটিয়াদের পেস আক্রমণের সঙ্গে স্পিন আক্রমণটাও এখন মাশরাফি বাহিনীর মাথাব্যথার কারণ। তবে ছেড়ে কথা বলবে কি বাংলাদেশ? না, তা কি করে হয়! ওয়ানডে ফরমেটে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের যে কোন দলের আতঙ্ক। শুধু যে দেশের মাটিতে তা নয়, অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপেও নিজেদের সেরা প্রমাণ করেছিল টাইগাররা। তাই আজ মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে প্রত্যাশা ওয়ানডেতে  জমজমাট লড়াই। তবে পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে পেসাররা এগিয়ে থাকলেও এবার সাফল্য স্পিনারদের ললাটেই। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সেই প্রমাণই রেখেছে ঘূূর্ণিবাজরা। দুই দলের স্পিনাররাই বল হাতে ছিলেন দুর্দান্ত। যদিও টাইগারদের অসাবধানী ব্যাটিংয়ে সাফল্যের হার প্রোটিয়াদেরই বেশি। আজ আকাশের কাল মেঘ বৃষ্টি হয়ে না ঝরলে বেলা তিনটাই মাঠে গড়াবে প্রথম ওয়ানডে। দুই দলের ক্রিকেটাররা মুখিয়ে আছেন জয় দিয়ে শুরু করতে। সেই সঙ্গে দুই অধিনায়কই ছক আঁকছে স্পিন আক্রমণে একে-অন্যকে কাবু করতে। দুই দলের স্পিন আক্রমণে পার্থক্যটাও করেছেন অধিনায়ক মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘রেকর্ডের দিকে তাকালে সাকিবকে এগিয়ে রাখবো। ওদের ইমরান তাহিরও বিশ্বমানের বোলার। কিন্তু আমরাতো এরও বেশি ভাল স্পিনারদের মোকাবিলা করেছি। আমরা যদি সেরা খেলাটা খেলতে পারি এবং ওদের চেয়ে প্রতিটি বিভাগে একধাপ বেশি ভাল খেলতে পারি তাহলে জয় সম্ভব।’
গতকাল মিরপুর মাঠে ঠুকেই দেখা গেল মুশফিকুর রহীমকে। বেশকিছু দিন হলো ভাল যাচ্ছে তার সময়। উইকেটের পিছনে এমনকি ব্যাট হাতেও তিনি রয়েছেন আলোর বাইরে। গতকাল অবশ্য তাকে ব্যাটিং নয় দেখা গেল কিপিং অনুশীলন করতে। টানা একঘণ্টা তিনি দুই কোচকে নিয়ে অনুশীলন চালিয়ে যেতে থাকেন। ঠিক সময় শুরু হয় বৃষ্টি। বেলা ১১টায় শুরু হয়ে সেই বৃষ্টি চলতে থাকে সারা দিন। যথারীতি কোন দলেরই আর অনুশীলন করা হলো না। তাই ওয়ানডেতে মাঠে নামার আগে প্রস্তুতির ঘাটতিতো থেকেই যাচ্ছে। আজ উইকেট ও দল কেমন হবে সেটিও বড় প্রশ্ন। বিশেষ করে পেসার ও স্পিনারদের ভূমিকা নিয়ে। অধিনায়ক মাশরাফি অবশ্য স্পষ্ট করেছেন স্পিন আক্রমণটাই হতে পারে অস্ত্র, তাই দলে দেখা যেতে পারে বাড়তি কোন স্পিনারকে। এই ক্ষেত্রে পেসার রুবেল হোসেনের পরিবর্তে লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন লিখনকেই খেলানো হতে পারে। কারণ প্রোটিয়ারা আজ খেলাবেন তাদের অন্যতম শক্তি লেগ স্পিনার ইমরান তাহিরকে। এছাড়াও সাকিব আল হাসানতো আছেন দুই ভূমিকাতেই। বিশ্বসেরা এই স্পিনারের সামনে আজ ওয়ানডেতে ২শ’ উইকেট ছুঁয়ে ফেলার হাতছানি। তার জন্য প্রয়োজন মাত্র ২টি উইকেট। অন্যদিকে আরাফাত সানির সঙ্গে নাসির হোসেন ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও স্পিনে ভাল যাদু দেখাতে পারেন। পেস আক্রমণে তরুণ মুস্তাফিজুরকে সঙ্গে নিয়ে অধিনায়ক মাশরাফি নিজেই থাকবেন আক্রমণের সামনের দিকে।
অন্যদিকে তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেনিংয়ে সৌম্য সরকারের জুটি অটুট থাকবে আজও। ইনজুরি থেকে দলে ফিরেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আজ একাদশেও তাকে দেখা যেতে পারে। বিশ্বকাপে দলের এই নায়ক একাদশে থাকলে তিন নম্বরেই মাঠে নামবেন। এরপর মুশফিকুর রহীম  ও সাকিব আল হাসান থাকছেন মিডল অর্ডারের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে। এরপর  নাসির হোসেন ও সাব্বির রহমান সামলাবেন লেজের দায়িত্ব। মাহমুদুল্লাহ ফিরলে দেখা যাবে না আজ লিটন দাসকে। তাই মুশফিক গতকাল কিপিং অনুশীলনে ছিলেন অত্যন্ত সিরিয়াস।
দুই দল এই পর্যন্ত ১৪ বার ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশের জয় সেই ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে। মাত্র একটি জয় এসেছে টাইগারদের সেও ৮ বছর আগে। কিন্তু সেই দলের সঙ্গে এই দলের অনেক পার্থক্য রয়েছে। যদিও এরই মধ্যে ভয়ঙ্কর এবি ডি ভিলিয়ার্স নেই। আজ আইসিসি’র নতুন নিয়মে বাংলাদেশকে চেপে ধরতেই প্রস্তুত প্রোটিয়ারা। ওপেনিংয়ে অধিনায়ক হাশিম আমলা, ডি কক জুটিও ভয়ঙ্কর হতে পারে টাইগারদের জন্য। এছাড়াও মিডল অর্ডারে ফ্যাফ ডু প্লেসি, মিলার, জেপি ডুমিনি, আর রুশো এরই মধ্যে নিজেদের প্রমাণ করেছেন। পেস আক্রমণে প্রস্ততি ম্যাচ থেকেই সফল কাইল অ্যাবোট ও পারনেল। আর সফল স্পিনার ফাঙ্গিসোর সঙ্গে যোগ হয়েছেন  প্রোটিয়া সেরা স্পিনার ইমরান তাহিরও। তাই দুই দলের স্পিনাররাই আজ ভাগ্য নির্ধারণ করে দিতে পারে জয়-পরাজয়ের।

No comments

Powered by Blogger.