গ্রিসের কাছ থেকে নতুন প্রস্তাব চায় ঋণদাতারা

গ্রিসে কয়েকদিন ধরেই ব্যাংক বন্ধ রয়েছে। এথেন্সে
এটিএম বুথের সামনে লম্বা লাইন। ছবি: এএফপি
কঠোর শর্তভরা আর্থিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচি (বেইল আউট) প্রত্যাখ্যানের পর গ্রিসের কাছ থেকে নতুন প্রস্তাব আশা করছেন ঋণদাতা ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রীরা। আজ মঙ্গলবার ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রী ও নেতাদের বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
বেল আউট নিয়ে গণভোটে ‘না’ জয়ী হলে আজকের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া ব্যাংকগুলো খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল গ্রিসের সরকার। গ্রিসের ব্যাংকিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান লওকা কাটসেলি বলেছেন, আজ ও আগামীকাল বুধবারও ব্যাংক বন্ধ থাকবে। গতকাল ইসিবির পরিচালনা পর্ষদ সভার প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি) গ্রিসের ব্যাংকগুলোকে জরুরি তারল্য-সহায়তা (ইএলএ) দেবে কি না, তা অনিশ্চিত।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ ভেবেচিন্তে প্রস্তাব দিতে গ্রিসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী
অ্যালেক্সিস সিপ্রাস আজ ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে তিনি নতুন প্রস্তাব তুলে ধরবেন।
গণভোটের ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই ইউরোপের প্রধান দুই অর্থনীতির দেশ জার্মানি ও ফ্রান্সের দুই শীর্ষ নেতা গতকাল সোমবার বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পর ওঁলাদ ও ম্যার্কেল বলেন, আলোচনার পথ এখনো খোলা। এ জন্য গ্রিসকেই নতুন প্রস্তাব দিতে হবে।
ওঁলাদ বলেন, গ্রিসের ইউরোজোনে থাকা না থাকার বিষয়টি এখন অনেকটা তাঁদের ওপরই নির্ভর করছে। অ্যালেক্সিস সিপ্রাসকে ভেবেচিন্তে প্রস্তাব দিতে হবে।
ম্যার্কেল বলেন, গ্রিসের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির জন্য কী ধরনের মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা ও কর্মসূচি অ্যালেক্সিস সিপ্রাস নিতে যাচ্ছেন, তা তাঁকে জানাতে হবে। এর ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।
২০ জুলাই সামনে। ওই দিনের মধ্যে গ্রিসকে অবশ্যই ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের (ইসিবি) সাড়ে তিন শ কোটি ইউরো ফেরত দিতেই হবে। এটি প্রকৃত অর্থেই দাতাদের মূল সময়সীমা। এর আগে ৩০ জুন আইএমএফের ১৬০ কোটি ইউরো ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়েছে গ্রিস। তবে ইসিবির অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে এর ফলাফল হবে ভয়াবহ। এর ফলে ইসিবি গ্রিসের ব্যাংকগুলোকে যে জরুরি সহায়তা দিচ্ছিল, তা বন্ধ করে দেবে। দেশটির সব ব্যাংক ধ্বংসের মুখে পড়বে। ইউরোজোন থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য হবে গ্রিস। ইউরোপের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে গ্রিসের সম্পর্ক আরও নাজুক হয়ে যাবে।
পদত্যাগে নতুন চুক্তির সুযোগ: গ্রিসের অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভারোফোকিস নাটকীয়ভাবে পদত্যাগ করলেন। এতে ঋণ-সহায়তা সংক্রান্ত চুক্তির পথ অনেকটা সুগম হলো বলে মনে করা হচ্ছে। পদত্যাগপত্রে ভারোফোকিস বলেন, প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, তাঁর ‘অনুপস্থিতিতে’ ইউরো গ্রুপের সঙ্গে বৈঠকে একটি চুক্তিতে পৌঁছা সহজতর হতে পারে। এর ফল পাওয়া গেছে সঙ্গে সঙ্গে। ডলারের বিপরীতে বেড়েছে ইউরোর দাম। ইউরোজোনের নেতারাও চেয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী না থাকুন। তবে তাঁর পদত্যাগেই যে একটি চুক্তি হবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।

No comments

Powered by Blogger.