সেতুর সংযোগ সড়ক অবৈধভাবে ইজারা by খলিল রহমান

(সুনামগঞ্জের তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের হুছনারঘাট সেতুর সংযোগ সড়কের ভাঙা অংশে বাঁশের খুঁটির ওপর চাটাই বিছিয়ে চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে l প্রথম আলো) গত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সুনামগঞ্জের তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের তিনটি সেতুর সংযোগ সড়কে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে তিন মাস ধরে লোকজনের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন হলেও টাকা তোলার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সংযোগ সড়ক ইজারা দিয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বন্যায় তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের টাকাটুকিয়া সেতুর উত্তর পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়। একইভাবে সড়কের বাদাঘাট ইউনিয়নের পাতারাগাঁও ও হুছনারঘাট এলাকার আরও দুটি সেতুর এক পাশের সংযোগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর এসব সেতুর সংযোগ সড়কে বাঁশের চাটাই বিছিয়ে মানুষজনের চলাচলের ব্যবস্থা করে দিয়ে দুই পক্ষ টাকা আদায় করছে। জনপ্রতি পাঁচ টাকা এবং প্রতিটি মোটরসাইকেলের জন্য ১৫ টাকা করে দিতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টাকাটুকিয়া এলাকায় সেতুর পাশে একটি অস্থায়ী ঘর তৈরি করে কয়েকজন টাকা আদায় করছেন। আবদুস সালাম নামের এক ব্যক্তি জানান, তাঁর বাবা স্থানীয় ইউপির সদস্য জহির আহমদ এই জায়গাটি জেলা পরিষদের কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছিলেন। পরে এই জায়গাটি আরেক পক্ষ ইউনিয়ন পরিষদের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছে। এখন দুই পক্ষ মিলে টাকা আদায় করছে।
হুছনারঘাট ও পাতারগাঁও এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ছোট ছোট দুটি সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত সংযোগ সড়কের একটি বাঁশের আড় দিয়ে মাটি ফেলা হয়েছে। অন্যটিতে দেওয়া হয়েছে বাঁশের সাঁকো। এখানে টাকা আদায়ের জন্য বাদাঘাট ইউপির কাছ থেকে এই স্থানটি ইজারা নিয়েছেন মোবারক হোসেন নামের এক ব্যক্তি। টাকা আদায়কালে ইউনুছ মিয়া নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা ইউনিয়ন পরিষদের কাছ থেকে ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকায় এটি ইজারা এনেছি। এখানে সড়ক মেরামত করতেই ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে গেছে। আমরা বৈধভাবে টাকা নিচ্ছি।’
টাকাটুকিয়া এলাকায় মনিরুল হক নামের এক ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেলে যাতায়াত করি। মাত্র ছয় কিলোমিটার পথ। এর মধ্যে দুই স্থানে আসা-যাওয়ায় ৬০ টাকা দিতে হয়।’
বাদাঘাট ইউপির চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয় সরকার হিসেবে আমরা সরকারের স্বার্থে ইজারা দিতে পারি। তবে ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকার কথা সঠিক নয়। আরও কম টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে।’ তবে কত টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে সেটা তিনি জানাতে পারেননি। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য দক্ষিণ বড়দল ইউপির চেয়ারম্যান সবুজ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোন ধরেননি।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, এলজিইডির সড়ক এভাবে কেউ ইজারা দিতে পারে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.