কি বার্তা নিয়ে আসছেন জয়শঙ্কর? by মিজানুর রহমান

আঞ্চলিক সফরের অংশ হিসেবে শিগগিরই বাংলাদেশে আসছেন ভারতের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর। দিন-তারিখ এখনও ঠিক হয়নি। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর সফর প্রস্তুতি  শুরু হয়েছে। আগামী ১৯-২১শে ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ঢাকা সফর করবেন। ওই সফরের পরপরই সচিবের সফরটি হতে পারে বলে ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রে আভাস মিলেছে। সূত্র মতে, দেশ জুড়ে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই ঢাকা আসছেন ভারতের ওই শীর্ষ কূটনীতিক। ওই সফরের মধ্য দিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রস্তাবিত বাংলাদেশ সফরের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। কংগ্রেস আমলের নিয়োগ পাওয়া পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিংকে গত ২৮শে জানুয়ারি নাটকীয়ভাবে বিদায় দিয়ে ওই পদে জয়শঙ্করকে বসায় বিজেপি সরকার। তাকে দিয়েই সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার টুইট বার্তায় তিনি নিজেই সেই ঘোষণা দিয়েছে। বার্তায় মোদি লিখেন, ‘যথা শিগগিরই দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা ও সম্পর্ক  জোরদার করতে আমাদের নতুন পররাষ্ট্র সচিবকে সার্ক সফরে পাঠানো হবে।’ সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে মোদির সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রয়াস নতুন নয়। তার শপথ অনুষ্ঠানে বিরোধী পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সরকার প্রধানদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। বিদায়ী বছরের শেষ সময়ে অনুষ্ঠিত সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে জোটভুক্ত দেশগুলোর ‘শান্তি ও সমৃদ্ধির’ জন্য পাশে থাকার অঙ্গীকার করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী। দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে সার্কভুক্ত একটি দেশেই গেছেন তিনি। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছিলেন ঢাকায়। গত ২৬-২৮শে জুন মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশ সফর করেন। নতুন বছরের শুরু থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা চলছে। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একতরফা নির্বাচনের বছরপূর্তিতে বিরোধী শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখার প্রতিবাদে দেশব্যাপী অবরোধের ডাক দেয় বিএনপি। সেই থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মসূচি চলছে। বহুল আলোচিত ওই নির্বাচনের অল্প আগে ঢাকা সফর করেছিলেন তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং। এখানে এসে নির্বাচনের পক্ষে তার সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন তিনি। দিল্লি মসনদে আমূল পরিবর্তন এসেছে। কংগ্রেসের বিদায়ের পর বিজেপি এখন রাষ্ট্র পরিচালনায়। একতরফা নির্বাচনে কংগ্রেসের সমর্থন থাকলেও নরেদ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের ভিন্ন অবস্থান আশা করে বিএনপি জোট। সব দলের অংশগ্রহণে এখানে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি দিনে দিনে জোরালো হচ্ছে। ওই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে এখানে একটি জাতীয় সংলাপ দেখতে চাইছে গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিশেষ করে রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভারতের শীর্ষ কূটনীতিক এস জয়শঙ্কর তার সরকারের তরফে কি বার্তা নিয়ে আসছেন- সেটি দেখার অপেক্ষায় ঢাকা।

No comments

Powered by Blogger.