কেউ কথা রাখেনি- সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের সহযোগিতা প্রয়োজন

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পেট্রলবোমায় দগ্ধ হয়ে যে ২৪ মানুষ মারা গেছেন, তাঁরা যেন মরে গিয়েই বেঁচে গেছেন। কিন্তু কষ্টে আছেন তাঁদের স্বজনেরা। আরও কষ্টে আছেন যে ৭৪ জন মানুষ পেট্রলবোমায় দগ্ধ হয়ে বেঁচে আছেন, তাঁদের অধিকাংশই আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি। অনেকে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। তাঁদের প্রতি যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেসব প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করা হয়নি। বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন দগ্ধ ব্যক্তিদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। আর ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই প্রত্যেক নিহত ব্যক্তির স্বজনদের ৫০ হাজার টাকা করে দিয়েছিল এবং তাঁদের স্বজনদের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এ পর্যন্ত মাত্র একজনকে লিফট অপারেটরের চাকরি দেওয়া হয়েছে। আর কেউ চাকরি পাননি। চাকরির প্রতিশ্রুতিদাতাদের সঙ্গে অনেকে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়েছেন। এফবিসিসিআই সম্প্রতি বলেছে, চাকরি দেওয়ার বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন আছে; নিহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোতে চাকরিযোগ্য কেউ আছেন কি না, সে বিষয়ে তারা খোঁজখবর নিচ্ছে।
নিহত ব্যক্তিদের অধিকাংশই ছিলেন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, যাঁদের আয়ের ওপর পরিবার নির্ভরশীল ছিল। ফলে পরিবারগুলো আর্থিক দুর্দশায় পড়েছে। তাদের অর্থনৈতিক পুনর্বাসন জরুরি। ইতিমধ্যে এক বছর পেরিয়ে গেছে; তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানো রাষ্ট্রের দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বলা হচ্ছে, পুনর্বাসন প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। নতুন সমস্যা হচ্ছে, আবারও রাজনৈতিক সহিংসতায় গত এক মাসের বেশি সময়ে প্রায় অর্ধশত মানুষ পেট্রলবোমা, ককটেল ও আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এই পরিবারগুলোর দিকেও তাকাতে হবে, নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের যথাসম্ভব সহযোগিতা দেওয়া কর্তব্য। সপ্তাহ দুই আগে তথ্যমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী অসহায় পরিবারগুলোকে দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় আহত মানুষের সংখ্যা হাজারের বেশি। তাঁদেরও সাহায্য-সহযোগিতা প্রয়োজন।

No comments

Powered by Blogger.