পুলিশের নেওয়া পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট- গুলি করে সন্ত্রাসী সাজানোর অভিযোগ

ব্যক্তিগত শত্রুতার জের- দুই পায়ে গুলি করে যুবককে সন্ত্রাসী সাজাল পুলিশ!’ এই ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৮ নভেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে ডিএমপি কমিশনারকে বলা হয়েছে।

>>দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ গাড়িচালক শাহ আলম (২৬) জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে জরুরি বিভাগের ‘ই’ ওয়ার্ডে জি-১০ নম্বর বেডে চিকিত্সাধীন। ছবিটি আজ দুপুরে তোলা। ছবি: হাসান রাজা
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আইন ও সালিশ কেন্দ্রের করা এক রিটের শুনানি নিয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত ওই ঘটনার শিকার শাহ আলমের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত ও চিকিৎসার খরচ বহন করতে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দেন।
দুই পায়ে গুলি করে যুবককে সন্ত্রাসী সাজাল পুলিশ!’ -শিরোনামে ২২ অক্টোবর প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে গতকাল বুধবার আইন ও সালিশ কেন্দ্র রিট আবেদনটি করে। আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। সঙ্গে ছিলেন অবন্তী নুরুল। রুলে ওই ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌজদারি ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, শেরে বাংলানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট উপপরিদর্শককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন
গুলি করে সন্ত্রাসী সাজানোর অভিযোগ- এসআই আনোয়ার গ্রেপ্তার, ওসিকে প্রত্যাহার
ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে গাড়িচালকের দুই পায়ে গুলি করার অভিযোগে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই গাড়িচালকের ভাই গতকাল বুধবার এসআই আনোয়ারের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ওই থানায় একটি মামলা করেছেন। ওই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মোমিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, গত রোববার রাতে গাড়িচালক শাহ আলমকে (২৬) মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট এলাকা থেকে ধরে তালতলায় নিয়ে দুই পায়ে গুলি করেন এসআই আনোয়ার হোসেন। এরপর তাঁর কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে থানায় মামলা করা হয়। জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন শাহ আলম জানান, তাঁর স্ত্রী শান্তার সঙ্গে এসআই আনোয়ারের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। কেরানীগঞ্জের আরশিনগরে বাসা ভাড়া নিয়ে শান্তা ও আনোয়ার স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে থাকছেন। শাহ আলম কেরানীগঞ্জের আরশিনগরের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি জানিয়ে বিচার চান। এ নিয়ে সালিস-বৈঠকও হয়। এরপর এসআই আনোয়ার তাঁকে ধরে পায়ে গুলি করেন। এ বিষয়ে গতকাল বুধবার প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ প্রাথমিক তথ্য নিয়ে দেখেছে শাহ আলমের সঙ্গে এসআই আনোয়ারের পূর্বপরিচয় রয়েছে এবং তাঁদের মধ্যে ব্যক্তিগত শত্রুতার তথ্যও মিলেছে। এরপর গতকাল শাহ আলমের ভাই গোলাম মোস্তফা এসআই আনোয়ারকে আসামি করে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করলে তাৎক্ষণিকভাবে এসআই আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে এ বিষয়ে দায়িত্বে অবহেলার জন্য থানার ওসিকেও প্রত্যাহার করা হয়েছে। গণেশ গোপাল বিশ্বাসকে ওই থানার ওসি করা হয়েছে। শেরেবাংলা নগর থানা থেকে জানানো হয়, মামলায় এসআই আনোয়ারের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও ইচ্ছে করে বিপজ্জনক অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার অভিযোগ এনেছেন বাদী গোলাম মোস্তফা।

No comments

Powered by Blogger.