রোগী ফেলে পালালেন চালক- সড়ক বিভাজকে অ্যাম্বুলেন্স by কাজী আনিছ

অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন স্বজনেরা। সেখানে পৌঁছার আগেই সড়ক বিভাজকে উঠে যায় অ্যাম্বুলেন্স। এতে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান রোগী। আহত হন সঙ্গে থাকা স্বজনেরা। আর অ্যাম্বুলেন্স ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যান চালক। রাজধানীর আসাদগেট এলাকায় গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। রোগীর স্বজনেরা অভিযোগ করেন, চালকের অসতর্কতা ও বেপরোয়া গতিতে চালানোর কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।

>>আসাদগেটে গতকাল সন্ধ্যায় এই অ্যাম্বুলেন্সটি সড়ক বিভাজকে উঠে যায় l প্রথম আলো
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সটি বিকট শব্দে সড়ক বিভাজকে উঠে যায়। এতে দুমড়ে-মুচড়ে যায় সড়ক বিভাজকে থাকা গাছ ও ছোট কয়েকটি বিলবোর্ড। দুর্ঘটনার পরই অ্যাম্বুলেন্সের দরজা খুলে নামতে উদ্যত হন চালক। খোলা মাত্রই দরজার একটি অংশ দ্রুতগামী বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এ সময় আবার ভেতরে ঢুকে পড়েন চালক। বাসটি চলে যাওয়ার পরই দরজা খুলে দৌড়ে পালিয়ে যান তিনি।
রোগীর নাম শাহীনুর ইসলাম (৪৫)। তাঁর গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের হিজলীতে। শাহিনুরের শ্যালক শামীম রেজা প্রথম আলোকে বলেন, শাহীনুর দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু বেশ কয়েক দিন ধরে তিনি উঠতে-বসতে পারছিলেন না। কথা বলার শক্তিও হারিয়ে ফেলেছেন। এ কারণে গতকাল মানিকগঞ্জ থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাঁকে ধানমন্ডিতে একটি হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে থাকা রোগী মাথা ধরে আছেন। সঙ্গে থাকা স্বজনদের চোখে-মুখেও আতঙ্কের ছাপ। স্বজনেরা জানান, রোগী শাহীনুর মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন। শাহীনুরের শ্যালক শামীম বলেন, সড়ক বিভাজকে ওঠার পরপরই শাহীনুর সিট থেকে পড়ে যান এবং মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান। পরে ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন আরেকটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে রোগীকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
দুর্ঘটনাকবলিত অ্যাম্বুলেন্সের গায়ে দুটি মুঠোফোন নম্বর ছিল। ওই দুই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে একটি বন্ধ পাওয়া যায়। আরেকটি নম্বরে রিং হলেও কেউ ফোন ধরেননি। ঘটনাস্থলে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্ট বিল্লাল হোসেন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, রেকার দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি সড়ক বিভাজক থেকে নামানো হয়েছে। এটি শেরেবাংলা নগর থানায় পাঠানোর ব্যবস্থা চলছে। তবে চালকের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। রাত আটটার দিকে যোগাযোগ করা হলে শাহীনুরের স্বজনেরা জানান, তাঁরা হাসপাতালে পৌঁছেছেন। শাহীনুরকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.