যেভাবেই হোক, একটা জাগরণ তো এসেছে

গণজাগরণ মঞ্চ: প্রয়োজন ফুরিয়েছে, সরকারের পিছটান
ছাত্রলীগের সরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে গণজাগরণ মঞ্চে যে ভাঙন শুরু হয়েছিল, তা এখন চূড়ান্ত আকার ধারণ করেছে। ক্ষমতাসীন দলও চায় না গণজাগরণ মঞ্চ টিকে থাকুক। প্রয়োজন ফুরিয়েছে গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠা বহুল আলোচিত গণজাগরণ মঞ্চের। এ ব্যাপারে পাঠক শফিক রহমানের মন্তব্য: আওয়ামী লীগের মূল উদ্দেশ্য ছিল এই গণজাগরণ মঞ্চকে কাজে লাগানো এবং যাতে কোনো ধরনের সরকারবিরোধী আন্দোলন না হতে পারে, তা নিশ্চিত করা। ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের এ রকমের নাটকের মঞ্চ আর যে কত দেখতে হবে, সেটাই এখন ভাবার বিষয়! সায়েম সজল: কোনো সন্দেহ নেই গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি হয়েছিল স্বতঃস্ফূর্তভাবেই। সরকার তার প্রয়োজনমতো মঞ্চকে ব্যবহার করেছে মাত্র। পরাগ রহমান: আওয়ামী লীগ বড় বড় ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন থেকে শুরু করে অনেক নিচু লেভেল পর্যন্ত যখন, যাদের দরকার মনে করেছে, ব্যবহার করেছে আর ব্যবহার শেষে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। আরিফুর: সাধারণ মানুষ চোখ বুজে তাদের পিছু নিয়েছিল। সবই ছিল সরকারের সাজানো। আবার তা প্রমাণিত হলো।
শিকদার দস্তগীর: শুরুতেই জানতাম, এর প্রয়োজনীয়তা সরকারের কাছে একসময় ফুরিয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ কী জিনিস নতুন প্রজন্মের যারা জানত না, তারা এদের চিনে নিক। কাজী এস আহমদ: যেভাবেই মঞ্চের শুরুটা হোক না কেন জনসমর্থন পাওয়ামাত্র সরকার এটাকে ছাত্রসংগঠন এবং তাঁবেদার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের মাধ্যমে গ্রাস করে এদের ব্যবহার করে এবং কাজ হয়ে গেলে ছুড়ে ফেলে দেওয়াটা আওয়ামী লীগের চরিত্র। কাজী রহমান: যেভাবেই হোক, একটা জাগরণ তো এসেছে। একে সবাই মিলে ধরে রাখতে পারলে খুব ভালো হয়। যাদের জমছে না, তারা সরে যাক। স্বল্পসংখ্যক হলেও শুধু নিবেদিতপ্রাণরাই থাকুক এর সঙ্গে। যুবক-তরুণদের আশার আলো হয়ে। যাদের দৃষ্টি থাকবে অন্ধকার অতীতের দিকে নয়, বরং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে। আজ না হোক কাল যারা দেশকে দেবে গর্ব করার মতো দিন। আমি যদি তাদের সঙ্গে না-ও থাকি, আমার আত্মা, আমার চেতনা যেন থাকে তাদের সঙ্গে। মানুষের হাসি দেখে আমি যেন বলতে পারি—এই তো আমার দেশ। আমি তো এদেরই একজন (ছিলাম)!
মাদ্রাসার উপযোগী করতে পাঠ্যবইয়ে অদ্ভুত পরিবর্তন
সাধারণ শিক্ষার মূল পাঠ্যবইগুলোকে মাদ্রাসা শিক্ষার বৈশিষ্ট্য-উপযোগী করতে গিয়ে বইগুলোর আঙ্গিক ও মৌলিক কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। সাধারণ বিদ্যালয়ে আগের পাঠ্যবই-ই বহাল থাকবে। এর সমালোচনা করে পাঠক পলাশ লিখেছেন: দেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও দেশবরেণ্য কবি-সাহিত্যিকদের কথাই যদি ছাত্ররা জানতে না পারে, তাহলে মনে হয় না মাদ্রাসার ছাত্ররা সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে মেধায় পাল্লা দিতে পারবে। তাই সরকারের এই চেষ্টা উলুবনে মুক্তা ছড়ানো ছাড়া আর কিছু হবে না। কোহিনুর ইসলাম: সাধারণ শিক্ষা জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য। কিন্তু মাদ্রাসা শিক্ষা শুধু মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য। তাই যেসব বিষয় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করতে পারে, সেগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে... আমি এই পরিবর্তনের পক্ষে। রূপক চৌধুরী: তবু যে তারা (মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ) পরিবর্তনে রাজি হয়েছে, এটাই অনেক বড় পাওয়া। ইসলাম ধর্মের মৌলিক বৈশিষ্ট্য অসাম্প্রদায়িকতার দিকে ফিরে যেতে এটা একটা মাইলফলক হতে পারে। ইসলাম পৃথিবীতে তার সত্যিকার বৈশিষ্ট্য নিয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।
সোনা চোরাচালানে পুলিশ জড়িত!
সোনা চোরাচালানিদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন কর্মকর্তার যোগাযোগ রয়েছে। সোনা উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর এক আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে আব্দুল্লাহ আল সাব্বির লিখেছেন: আমি এ ঘটনায় পুলিশের কোনো দোষ দেখি না। যত দিন পর্যন্ত যোগ্য স্থানে যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ হবে না, তত দিন পর্যন্ত এসব অপরাধ চলতে থাকবে। কোনো আইনে কিচ্ছু করতে পারবে না। সাজ্জাদ হোসেইন: কোন কোন কাজে পুলিশ জড়িত নয়, তার একটা তালিকা তৈরি করলে আমরা উপকৃত হব। তানভীর রহমান: বিপথগামী কোনো সদস্যের অপকর্মের দায় তো সংশ্লিষ্ট বিভাগের ওপর বর্তায় না। এন আহমেদ: বড় দান মারতে এরা সবকিছুই করতে পারে। ভাগ-বাঁটোয়ারার সবকিছুই আগে থেকে ঠিক থাকে।
আওয়ামী লীগ কোন পথে
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ও তার কর্মকাণ্ড নিয়ে লেখা এই কলামে পাঠক মো. মিরাজ আলম লিখেছেন: আওয়ামী লীগ কোন পথে? সহজ উত্তর—জাতীয় পার্টির অবস্থার দিকে। আর জাতীয় পার্টি বিলুপ্তির দিকে। শামীম আনসার: সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে জাপার মহাসচিবের পরিবর্তন, আল্লামা শফীর অনুরাগ, গণজাগরণ মঞ্চ থেকে পিছটান, প্রশ্ন ফাঁস-স্থগিত পরীক্ষা-তদন্ত কমিটি, সংসদে না থাকা বিএনপি-জামায়াত নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অধিবেশনে আলোচনা-কুরুচিপূর্ণ সমালোচনা, বাম্পার ফলনের পরও আলুর পর পেঁয়াজেরও মূল্যপতন, ভারতে সরকারের পটপরিবর্তনের সম্ভাবনা...আওয়ামী লীগকে আরও সতর্ক হতে হবে। স্বাপ্নিক রায়: শুধু আওয়ামী-বাকশালীরাই মনে করে যে, এরা ঠিক পথে আছে। কারণ, ভেজাল আর বাঁকা পথই তাদের আসল পথ। এ দেশের সিংহভাগ মানুষই মনে করে আওয়ামী লীগ দেশকে বিপথে নিচ্ছে। হাফিদ: শুধু অন্ধ আওয়ামী লীগ বলে, আওয়ামী লীগ ঠিক পথে আছে। মো. কামরুল হাসান: আওয়ামী লীগের কাছে সবাই ইউটোপিয়া চায়, ভাবটা এমন বিরোধীরা তো মহা খারাপ তুমি হও মহা ভালো।
বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিত আওয়ামী লীগ তুলনামূলক ভালো করছে কি না এবং উত্তরোত্তর ভালো করছে কি না। ভালো করার উপদেশ, মন্দ কাজের সমালোচনা ইত্যাদিই পারে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। মাসুদ: আওয়ামী লীগ শেষ হওয়ার পথে। একসময় জাতীয় পার্টি অনেক আসন পেত, পরে হলো রংপুরের আঞ্চলিক পার্টি, আর এখন সবশেষ হওয়া পার্টি। মহিউদ্দিন মাসউদ: কোন পথে? রাজনীতির অন্ধকারময় কানা গলিতে, যেখানে সব আছে, নেই শুধু গণতন্ত্রের রাজনীতি। আর সেই গণতন্ত্রের রাজনীতিতে তাদের পক্ষে আর ফিরে আসা সম্ভব নয়। যদি সেটা সম্ভব করতে হয় তার জন্য যে বিশাল অস্ত্রোপচার করতে হবে, সে ধরনের বিশেষজ্ঞ এবং সাহসী নেতৃত্ব ওখানে আর অবশিষ্ট আছে বলে মনে হয় না। আত্মস্বার্থের রাজনীতির এই চেহারাই সর্বশেষ পরিণতি। এ রকমটা হয়তো টেনে নিতে পারবেন তাঁরা আরও কিছুটা পথ, তাতে শেষরক্ষার দাওয়াই মিলবে না। খোলনলচের ব্যাপক পরিচ্ছন্নতা ছাড়া সদর রাস্তায় চলার সম্ভাবনা সামান্যই।

No comments

Powered by Blogger.